বরগুনার বেতাগী উপজেলায় স্কুলে যাওয়ার পর নিখোঁজ তামিমা নামে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মরদেহ বাড়ির পাশের ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর শিশুটির মৃতদেহে যৌন নির্যাতনের আলামত পেয়েছে পুলিশ। এছাড়াও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় সাব্বির নামে একজনকে আটক করছে পুলিশ। সে একই গ্রামের মো. সাঈদ মল্লিকের ছেলে।
উদ্ধারকৃত শিশু শিক্ষার্থীর নাম তামিমা আক্তার (৭)। সে বেতাগী উপজেলার ৪ নং মোকামিয়া ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের মেয়ে ও স্থানীয় মাছুয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হাফেজ উসমান গনি নামে এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত পুকুরে তামিমার লাশ ভাসতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে তামিমার মামা মো. রুহুল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে স্কুলে যায় তামিমা। বিদ্যালয় ছুটি শেষে বিকেল পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। নিখোঁজ সংবাদ জানিয়ে মাইকিং করা হয়। অবশেষে সন্ধ্যার দিকে বাড়ির অদূরে ডোবার পানির মধ্যে হাবিব ও শামিম নামের দুই প্রতিবেশি একটি মরদেহ দেখতে পেয়ে তাদের পরিবারকে জানায়। পরে পুলিশ এসে হাফেজ উসমান গনির পরিত্যক্ত পুকুর থেকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্কুলছাত্রী লাশ উদ্ধার করে। এ সময় তামিমার স্কুল ব্যাগ, পরিধান করা সালোয়ার, মাথার স্কার্ফ, হাতে থাকা কাগজে মোড়ানো আচার আলাদা আলাদা স্থান থেকে উদ্ধার করে। পরে সেগুলো শনাক্ত করে আলামত হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়।
স্থানীয় মোকামিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল আলম সুজন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, লাশ ও আলামত দেখে মনে হচ্ছে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলা হয়েছে।
নিহত তামিমার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী বেতাগী থানার এসআই গৌতম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মরদেহের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও তার গোপনাঙ্গে ছয় ইঞ্চি দৈর্ঘের একটি লাঠি পাওয়া গেছে। মরদেহ উদ্ধারের সময় পরনে জামা থাকলেও পায়জামা ছিলো না। তামিমার বইপত্র পুকুরের পাশে পাওয়া গেছে।
বেতাগী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মরদেহের পাশেই পাওয়া গেছে স্কুল ব্যাগ ও পরনের পাজামা। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির পরিবার অভিযোগ করেছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটককৃত সাব্বিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তামিমার মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহমেদ।