জামালপুর সদরের মানিকারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিশুছাত্রী ২০ দিন পর গতকাল শনিবার ক্লাসে ফিরেছে। তাকে স্কুলে পেয়ে সহপাঠী ও শিক্ষকরা উৎফুল্ল হয়ে উঠেছেন। ফের স্কুলে আসতে পেরে খুশি ওই ছাত্রীও। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল জলিলের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর মেয়েটির স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
ঘটনা শুনে গতকাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাহিদা ইয়াসমিন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. শহিদুল্লাহকে নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে যান। এ সময় তারা ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ছাড়াও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। পরে ইউএনও ছাত্রীর হাতে নতুন স্কুলব্যাগ ও বই-খাতা তুলে দিয়ে তাকে স্কুলে পৌঁছে দেন। এদিকে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবাই ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর স্কুল ছুটির পর মেয়েটিকে চা তৈরির কথা বলে দোতলার অফিস কক্ষে নিয়ে যান শিক্ষক জলিল। একপর্যায়ে কক্ষ বন্ধ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ছাত্রীর চিৎকারে অন্যরা এগিয়ে এলে শিক্ষক পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা জামালপুর থানায় মামলা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পর থেকে তাদের হুমকিতে মেয়েটিকে স্কুলে পাঠানো বন্ধ রাখে তার পরিবার। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষক জলিলকে সাসপেন্ড করে শিক্ষা বিভাগ।
নির্যাতনকারী শিক্ষকের বিচার চান ছাত্রীর মা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল্লাহ বলেন, এ ধরনের চরিত্রহীন শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া প্রয়োজন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাহিদা ইয়াসমিন বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে তাকেসহ আরও কয়েকজনকে স্কুলে পৌঁছে দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ওই এলাকার আরও অনেক মেয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল, যেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ কারণে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বুঝিয়ে কয়েকজনকে স্কুলে পৌঁছে দিয়েছি।