রকেটের জটিলতায় উপবৃত্তিবঞ্চিত রাজশাহীর শত শত শিক্ষার্থী - দৈনিকশিক্ষা

রকেটের জটিলতায় উপবৃত্তিবঞ্চিত রাজশাহীর শত শত শিক্ষার্থী

রাজশাহী প্রতিনিধি: |

পিন বা অ্যাকাউন্ট ইনএক্টিভ জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় উপবৃত্তির টাকা তুলতে পারছে না রাজশাহীর শত শত শিক্ষার্থী। উপজেলা পর্যায়ে ডাচবাংলার মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস রকেটের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা তুলতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের। কখনো ‘পিন’ ভুল। আবার কখনো বা অ্যাকাউন্ট ইনএক্টিভ’। এমন সমস্যার মুখোমুখি হলেও কোনও সমাধান পাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন শিক্ষকরা। ফলে মোবাইলের মাধ্যমে অতি সহজে ও দ্রুত উপবৃত্তিভোগীদের হাতে টাকা পৌঁছানোর সরকারি লক্ষ্য বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

উপবৃত্তির ‘পিন’ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়া রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আমেনা খাতুন দৈনিক শিক্ষাকে জানান, ‘আমার রকেট অ্যাকাউন্টের পিন সমস্যা, তাই টাকা তুলতে পারিনি। এনিয়ে স্থানীয় রকেটের এজেন্টের কাছে অনেক ঘুরেও কাজ হয়নি।’

আরও পড়ুন: উপবৃত্তি : ডাচ-বাংলার অদক্ষতায় গাইবান্ধায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মীরা আমেনা খাতুনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা পিন সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন না। এ জন্য কয়েক কিলোমিটার দূরে রাজশাহী শহরে যেতে হবে। পরে তারা পিন নম্বর সংগ্রহ করে টাকা তুলেছেন।

কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফিকুল ইসলাম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমেনার উপবৃত্তির টাকা নিয়ে একটু সমস্যা ছিলো। তার পিনের জন্য টাকা উত্তোলন করতে পারছিলো না সে। বেশি কিছু শিক্ষার্থীর পিনের সমস্যা হয়। ব্যাংকের গাফিলতির কারণে শিক্ষার্থীদের পিনের সমস্যা হয়।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুজ্জামান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, প্রতি বছর প্রায় তিন থেকে চারজন পিন বা অন্য সমস্যায় টাকা তুলতে পারছেনা এমন শিক্ষার্থী থাকে। পরে ব্যাংকগুলোতে যোগাযোগ করে তাদের টাকা তুলে দেওয়া হয়।

কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটারের শিক্ষক মাসুম রানা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘বর্তমানে অনলাইনে সমস্যা হয় উপবৃত্তির কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের আবেদনে। অনেক সময় সাবমিট করার পরেও আর এডিট করা সম্ভব হয় না। এছাড়া সার্ভার জ্যাম দেখায়।’

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে, রাজশাহী ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এর  কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা পিন ভুলে যায়। তাই টাকা তুলতে পারেনা। এছাড়া একাধিক চেষ্টায় অ্যাকাউন্ট ইনএক্টিভ দেখায়। আমরা দ্রুত সচল করে দিচ্ছি।

তিনি বলেন, প্রতিদিন এমন সমস্যা নিয়ে ৮ থেকে ১০জন আসে। একই অ্যাকাউন্ট দুই জনের নামে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন সমস্যা হয়, সাধারণত দুই ভাই-বোন পড়া শোনা করলে। তারা আলাদা আলাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপবৃত্তির জন্য একই নম্বর ব্যবহার করলে এমন সমস্যা হয়।’

অন্যদিকে, শিক্ষা কর্মকর্তার ভুলে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার গবিন্দপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার  নবম শ্রেণির একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

মাদরাসার সুপার আবদুল কুদ্দুস দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে চারঘাট শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন শিরিন মাহবুবা। তার কাছে প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণির উপবৃত্তির তালিকা দেয়া হয়। তিনি সেই তালিকায় শুধু সিল দেন। স্বাক্ষর না দেওয়ায় তালিকা ঢাকায় গিয়ে উপবৃত্তি কার্যকর হয়নি।

মাদরাসার সুপার আবদুল কুদ্দুস দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব শিক্ষার্থীর আর্থিক অবস্থা ভালো না। তাদের মধ্যে নিম্নবৃত্ত ও দরিদ্রও রয়েছে। এ উপবৃত্তির টাকা পেলে লেখাপড়ার খরচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারতো। প্রতিষ্ঠানে ২৪ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছে না শুরু থেকে। তারা বর্তমানে নবম শ্রেণিতে পড়ে। এই শ্রেণিতে বৃত্তির একটা সুযোগ আছে, চেষ্টা করছি বৃত্তি পাইয়ে দেওয়ার।

মাদরাসার শিক্ষার্থী রাজিয়া, কাকোলী, পুষ্প, নুসরাত, লাইলা এমন অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে উপবৃত্তির টাকা, শুধু আমরা  ছাড়া। উপবৃত্তির টাকা পেলে তাদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে সহায়ক হতো।

বদলী হওয়া শিরিন মাহবুবার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে চারঘাট মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতা জয়নাল আবেদিন দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘উপবৃত্তির বিষয়টি ঢাকা থেকে ঠিক করে। তবে কর্মকর্তার ভুল বা সংশ্লিষ্ট স্কুল প্রধানরা অনেক সময় মেয়াদ শেষে নিয়ে আসে। এছাড়া কাগজ পত্রে ভুল হতেও পারে। তারা বর্তমানে নবম শ্রেণিতে পড়ছে। তাদের উপবৃত্তির একটা সুযোগ আছে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপবৃত্তি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের - dainik shiksha অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের - dainik shiksha হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা - dainik shiksha মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো - dainik shiksha ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044128894805908