রডের বদলে কাঠ দিয়ে ছাদ ঢালাই। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ছাদ এখন খসে পড়ছে। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ৮৩নং টঙ্গিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান চিত্র এমনই। বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের ক্লাস শুরুর পূর্বেই ভবনের দুটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। এতে ভেসে উঠছে রডের পাশাপাশি কাঠ দিয়ে ছাদ ঢালাইয়ের দৃশ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানি ছাদে জমে আছে, আর ছুঁইয়ে ছুঁইয়ে পানি পড়ছে ক্লাসে। পানির সঙ্গে ছাদের নিচের অংশে ফাটল। শুরু হয়েছে আস্তর পড়া। আতঙ্কে আছে বিদ্যালয়ে ২৭২ জন শিক্ষার্থী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে থেকে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের চাহিদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নতুন ভবন হচ্ছে না। বিদ্যালয়ের দুইটি ভবন। ২০০৯-১০ সালে নির্মিত ভবন দু’কক্ষ বিশিষ্ট। নাম মেঘনা ভবন। ১৯৯৬ সালে নির্মিত ভবনের নাম ডাকাতিয়া ভবন। এই ভবনে চারটি কক্ষ। এখানে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস হয়। কয়েক বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে ক্লাস নিতে হয়। এবার আর ক্লাস নেওয়া সম্ভব না।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অহিদুর রহমান চৌধুরী বলেন, একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবন বরাদ্দ হচ্ছে না। খোলা আকাশের নিচে পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে। সারাদেশে এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। যে কোনো মুহূর্তে এই বিদ্যালয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাফসিকুর, সাব্বির হোসেন ও তানজিম হায়দার বলেন, বৃষ্টির পানি বইতে পড়ে। সকালে এসে দেখি ছাদের আস্তর ভেঙে পড়েছে। এই ভবনে ক্লাস করতে আমাদের ভয় লাগে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আকতার হোসেন বলেন, ওই ভবনে ক্লাস বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তারপরও প্রধান শিক্ষক কক্ষ না থাকায় ওই ভবনে ক্লাস নিচ্ছেন। মঙ্গলবার হাজীগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। শিগগির নতুন ভবন বরাদ্দ হবে বলে প্রত্যাশা করছি। তিনি কাঠের ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৯৬ সালে নির্মিত সবকটি ভবনই প্রায় পরিত্যক্ত।