রাকসু নিবার্চন নেই ২৮ বছর - Dainikshiksha

রাকসু নিবার্চন নেই ২৮ বছর

তৌসিফ কাইয়ুম |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (রাকসু) নির্বাচন হয়নি দীর্ঘ তিন দশক। তবে ঢাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর ফের রাকসু নির্বাচনের জোর দাবি উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে রাকসু নির্বাচন নিয়ে। নির্বাচনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া হিসেবে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে তারা। তবে মিনি পার্লামেন্ট খ্যাত এ রাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া কি শুধু সংলাপেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি সত্যিই আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।


ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ডাকসু নিবার্চনের রোড ম্যাপ ঘোষণা হওয়ার পর রাকসু নির্বাচনের দাবিতে প্রশাসনে স্বারকলিপি দেয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জানুয়ারি প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে প্রশাসন। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনার মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাকসু নির্বাচনী সংলাপ শুরু হয়। এ সংলাপ থেকে উঠে আসা ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করবে। এর মধ্যে তিনটি ক্রিয়াশীল সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ শেষ হয়েছে। বাকিদের সঙ্গেও পর্যায়ক্রমে সংলাপে বসা হবে। তবে সংলাপ কমিটির কচ্ছপ গতির কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকসহ একাধিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশে অনুযায়ী প্রত্যেক বছর রাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাকসু নির্বাচন হয়েছে ১৪ বার। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৯-৯০ মেয়াদের জন্য। এরপর যে দল সরকারে ছিল তাদের ছাত্রসংগঠনের আধিপত্য বজায় রাখতে দেয়া হয়নি রাকসু নির্বাচন। দীর্ঘদিন রাকসু নির্বাচন না দেয়ায় বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় থাকা দলগুলোর ছাত্রসংগঠনের নেতা জড়িয়ে পড়েছেন হলের সিট বাণিজ্য, হল দখল, টেন্ডাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে। এতে একদিকে যেমন সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলার কেউ নেই, অন্যদিকে ভালো নেতৃত্বও তৈরি হয়নি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ও প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ফিদেল মনির বলেন, খুবই ধীরগতিতে সংলাপ কমিটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে করে কবে নাগাদ রাকসু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব কিংবা আদো রাকসু নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তার অবকাশ রয়েছে। শাখা ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি শাকিলা খাতুন বলেন, সংলাপের আয়োজন অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে প্রশাসনের কাজে যে কচ্ছপ গতি এতে করে রাকসু নির্বাচন আয়োজনে তারা যে খুব আগ্রহী তা বলা যাবে না। কারণ সংলাপ তো জাস্ট একটা ফরমালিটি এর পাশাপাশি রাকসু নির্বাচনের অনেক কার্যক্রম রয়েছে, যেমন- ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ক্যাম্পাসও হলগুলোতে সব দলের সহাবস্থান নিশ্চিত। কিন্তু এসব কার্যক্রম নিয়ে প্রশাসনের কোনো আগ্রহ নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সিনিয়র অধ্যাপক বলেন, রাকসু শিক্ষার্থীদের সংগঠন। ডাকসু নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে রাকসু নির্বাচনের যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে তাতে রাকসু পুনর্গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এটা ঠিক। তবে এক্ষেত্রে সরকারের সর্বোচ্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি। রাকসু নির্বাচনের জন্য সবার আগে যে পরিবেশ দরকার তা হল ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে সহাবস্থান নিশ্চিত করা। ঢাবি ও রাবির প্রেক্ষাপট এক নয়। ডাকসু নির্বাচন হলেই যে রাকসু নির্বাচন হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। রাকসু নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে রাকসু গঠিত হবে নাকি সংলাপে সীমাবদ্ধ থাকবে তা নিয়ে চিন্তার অবকাশ রয়েছে।

তবে রাকসু নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ্ আজম শান্তনু। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর যাবৎ ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়া যে সংস্কৃতি চলছে আমরা মনে হয় সংলাপ আয়োজনের মধ্যদিয়ে তার অবসান ঘটেছে। দেশের চলমান উন্নয়নে ধারাকে অব্যাহত রাখতে যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নেই। নেতৃত্ব তৈরি হয় ছাত্রসংসদগুলো থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু নির্বাচনের লক্ষে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে। যদিও কার্যক্রম কিছুটা মন্থর তবে রাকসু নির্বাচন নিয়ে আমি আশাবাদী।’

রাকসু সংলাপ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, রাকসু নির্বাচনের আয়োজন প্রক্রিয়া নিয়ে বর্তমান প্রশাসন বিগত অন্য প্রশাসনের তুলনায় অনেক বেশি আন্তরিক। রাকসু নির্বাচনকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। এজন্য আমরা সংলাপও শুরু করেছি। আমরা ক্যাম্পাসের সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকেও সংলাপের জন্য আহ্বান জানিয়েছি। আশা করছি, খুব দ্রুতই রাকসু নির্বাচন দেয়া সম্ভব হবে।

 

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর

 

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0096399784088135