রাজধানীর স্কুলগুলোতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা। বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘কন্যাশিশুকে প্রাণনা: দক্ষ কন্যাশক্তি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রুম টু রিড বাংলাদেশ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মোহাম্মদ শামছুল হুদা বলেন, মেয়ে শিশু ভবিষ্যতে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। মাধ্যমিকে ৫৩ শতাংশ মেয়ে শিশু পড়াশুনা করছে। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় কালে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ব্যাপারে তিনি বলেন, সরকারের বিশেষ উদ্যোগের পাশাপাশি মাধ্যমকি ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ইতিমধ্যে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। প্রতি স্কুলের জন্য একজন করে শিক্ষককে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এনডিসি বলেন, মেয়ে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সারাদেশে ৪,৮৮০ কিশোরী ক্লাব স্থাপন করা হয়েছে। যার মূল লক্ষ্য হলো দেহ-মনে শিশু-কিশোরীর বিকাশ সাধন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মেয়ে খেলোয়াড়দের ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন এছাড়াও আরো অনেক উদ্যোগ নিচ্ছে বর্তমান সরকার।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর “উচ্চ মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্প” হাতে নিয়েছে। মেয়ে শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষার ধারা ঝরে না পড়ে সেজন্য এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিজ্ঞান শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সরকার বিশেষ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার মাধ্যমিক স্কুলে বিজ্ঞান শিক্ষা সহায়ক বিভিন্ন উপকরণ পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার মাধ্যে ১০ হাজার স্কুলে বিজ্ঞান শিক্ষা সহায়ক বিভিন্ন উপকরণ পৌছে দেয়া হয়েছে। আগামীতে দেশের প্রায় সব বিদ্যালয়েই এই সহায়তা পৌছেঁ দেয়া হবে ।
অনুষ্ঠানে রুম টু রিড বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর রাখী সরকার বলেন, গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে রুম টু রিড বাংলাদেশে জেন্ডার সমতা আনা এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জীবন দক্ষতা উন্নয়নের জন্য মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে যাচ্ছে। রুম টু রিড বাংলাদেশ সরকারের নারী উন্নয়নের সঙ্গে সহযোগী হতে চায়। এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে রুম টু রিড সহায়তাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাসের হার ছিল প্রায় ৯৪ শতাংশ যেখানে জাতীয় পাসের হার ৬৭ শতাংশ। বর্তমানে রুম টু রিড ঢাকা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ এবং কক্সবাজারে কাজ করছেন। আগামী বছরে কক্সবাজারে মেয়ে শিশু শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কাজী রওশন আক্তার, প্রধান আলোচক ছিলেন রুম টু রিড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাখী সরকার। আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকার ১৩টি বিদ্যালয়ের ৬৫০ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার মেয়েশিশুদের প্রতিনিধিদলসহ সরকারি কর্মকর্তারা।