এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ভাবিয়ে তুলেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে। বিশেষ করে ইংরেজি ও উচ্চতর গণিতের মতো বিষয়ে বেশি ফেল করছে পরীক্ষার্থীরা। এটা না হলে এ শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার আরও বাড়তে পারত বলে মনে করছেন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে এর পেছনে শিক্ষকদের অদক্ষতাকেই দায়ী করছেন শিক্ষা বোর্ড। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে গ্রামের কলেজগুলোর দিকেই বেশি নজর বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের এবারের এইচএসসির ফলাফল বিগত তিন বছরের তুলনায় বেশি। এবার পাসের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৩৮ শতাংশে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা। কিন্তু এমন সাফল্যটা যেন ম্লান করে দিয়েছে এক বিষয়ে ফেল করার প্রবণতা। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে এক বিষয়ে ফেল করেছিল ২৭ হাজার ৪৬১ শিক্ষার্থী, যা শতকরা হারে ২২ দশমিক ৫৪ ভাগ। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এ সংখ্যা ৩৫ হাজার ৩৭, যা শতাংশে ২৫ দশমিক ১৫ ভাগ এবং এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৭ হাজার। যা মোট শিক্ষার্থীর ১৮ দশমিক ০৫ শতাংশ। এই তথ্যমতে, গড়ে তিন বছরে প্রায় ২২ ভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছে কেবল একটি বিষয়ে।
এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. আনারুল হক প্রামাণিক বলেন, ‘সৃজনশীল পদ্ধতি সম্পর্কে অধিকাংশ শিক্ষকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। এ কারণে পরীক্ষার রেজাল্টে এর প্রভাব পড়ছে। এজন্য আমরা শিক্ষকদের মধ্য থেকে মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করছি। তাঁরা গিয়ে অন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এভাবেই শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়াতে চাই’। তবে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে শিক্ষকদেরও দক্ষতা বাড়াতে সরকারকেই উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মহা. হবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী ভালো শিক্ষকদের গ্রামে পাঠানোর কথা বলেছেন। কিন্তু এটি স্থায়ী সমাধান নয়। বরং গ্রামের শিক্ষকদেরও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হলে এর দীর্ঘমেয়াদি ফল পাওয়া যাবে’।