রাত জাগতে ইয়াবা সেবন করছে শিক্ষার্থীরা : কোস্টগার্ড ডিজি - দৈনিকশিক্ষা

রাত জাগতে ইয়াবা সেবন করছে শিক্ষার্থীরা : কোস্টগার্ড ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাত জাগতে শিক্ষার্থীরা ইয়াবা সেবন করছে দাবি করে কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল এ এম এম এম আওরঙ্গজেব চৌধুরী বলেছেন, পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদক সেবন বাড়ছে। তারা মনে করে ইয়াবা সেবন করলে রাত জাগা যায়। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের আগারগাঁওস্থ কোস্টগার্ড সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় ভর্তি পরীক্ষা, পড়াশোনা ও পরীক্ষার চাপের সঙ্গে যোগসূত্র আছে কি-না তা গবেষণা করে দেখা উচিৎ। কারণ পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের অনেকেই নির্ঘুম থাকতে ইয়াবা সেবন করে।

পরীক্ষার রাতে ইয়াবা সেবন শিক্ষার্থীদের একটি ভ্রান্ত ধারণা উল্লেখ করে কোস্টগার্ড ডিজি বলেন, রাতে পড়ার জন্য ঘুম তাড়াতে আরও উপায় আছে। চোখে পানি দেয়া যায়, হাত-মুখ ধুয়ে আসা যায়। আমরা এভাবে করতাম। পড়তে হলে ইয়াবা সেবন করতে হবে কেন?’

ইয়াবার বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে কোস্টগার্ড বাহিনী। মাদকের ভয়ানক গ্রাস থেকে দেশের যুব সমাজকে রক্ষা করতে কোস্টগার্ড বাহিনীর সব বেইস, স্টেশন ও আউটপোস্ট থেকে সর্বাত্মক অভিযান চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের যুব সমাজের মধ্যে বর্তমানে ইয়াবার ব্যাপক চাহিদা কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির মাদক ব্যবসায়ী বিভিন্ন ধরনের অপকৌশল অবলম্বন করে এই ইয়াবার বিস্তার ঘটাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে নিয়মিত জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযান চলমান রয়েছে। এজন্য অভিভাবকদেরও আরও সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন ডিজি।

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি’র সঙ্গে বৈঠকের বরাত দিয়ে কোস্টগার্ড প্রধান বলেন, ‘সুচি একটি মিটিংয়ে বলেছিল, তাদের দেশের ৭/৮ বছরের শিক্ষার্থীরাও ইয়াবা সেবন করে রাত জেগে পড়ার জন্য। তাদের দেশেও এর ভয়াবহতা রয়েছে।’

মাদক প্রতিরোধে দুইটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করার অনুরোধ জানিয়ে কোস্টগার্ড মহাপরিচালক বলেন, মাদকের দুটি দিকের একটি হচ্ছে সরবরাহ যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বন্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অপরটি হচ্ছে চাহিদা যা বন্ধ করতে আমরা, আপনারা, যুব সমাজসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথমত সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত চাহিদা কমাতে হবে। ইয়াবার চাহিদা না কমালে সরবরাহ বন্ধ করা যাবে না। আমি, আপনি, আমরা সকলেই এ সমাজ তথা এ দেশের অংশ।

প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ইয়াবার বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় বিশেষ করে মসজিদের ইমামদের আরও কার্যকর প্রচারণা করতে হবে। ইমামদের কথা বলতে হবে।

উপকূলীয় অঞ্চলে কোস্টগার্ড অল্প নিয়ে কাজ করতে হয়। ২ হাজার ৫০০ জনবলের মধ্যে সব সময় সর্বোচ্চ ২ হাজার থাকে। বাকিরা প্রশিক্ষণ ও ছুটিতে থাকে। এরমধ্যে ৮৬ স্পটে জাটকা ধরা প্রতিরোধেই কাজ করে কোস্টগার্ড। এছাড়াও সুন্দরবনেও নিয়মিত টহল দেয়। কোস্টগার্ডের ৪ হাজার ৭ শ’ জনবলের অনুমোদন রয়েছে।

বাহিনীর স্বল্প জনবল নৌ-বাহিনী থেকে দেয়া হয়। কম জনবল নিয়েই বর্তমানে ভালো কাজ করছে বলে উল্লেখ করে কোস্টগার্ড ডিজি বলেন, ২০১৬ সালে ২৯৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার এবং ২০১৭ সালে ১৫২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা মূল্যের ইয়াবা জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়াও ২০১৮ সালে ইতোমধ্যে ৬২ লাখ ৩৮ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩১২ কোটি টাকা।

অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কোস্টগার্ড উপকূলীয় অঞ্চলে কাজ করে। তবে কোনো বাহিনীর একার পক্ষেই মাদক বন্ধ করা সম্ভব না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র টেকনিক্যালি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সাউন্ড। তারাই মাদক বন্ধ করতে পারে না।’ তবে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকেও আরও সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

বর্তমানে সাগরে প্রায় ১ লাখ মাছের ট্রলার চলাচল করে। সব ট্রলারে তল্লাশি করা সম্ভব না। কেবল সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই ট্রলারগুলোতে তল্লাশি করে কোস্টগার্ড।

কোস্টগার্ডের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট না থাকায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকেই এখন তথ্য সংগ্রহ করে কোস্টগার্ড অভিযান চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয়রা তাদের সহযোগিতা করছে বলেও জানান ডিজি।

মহাপরিচালক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক পৃষ্ঠপোষকতায় সর্বপ্রথম ১৯৯৪ সালে সংসদে কোস্টগার্ড বাহিনী তৈরির বিল উত্থাপন করেন এবং তারই ফল হিসেবে ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বাহিনী।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004180908203125