রাব্বানীর জিএস ও শোভনের সিনেট সদস্যপদও প্রশ্নবিদ্ধ - দৈনিকশিক্ষা

এখনো বিতর্ক ছাত্রলীগ নিয়েরাব্বানীর জিএস ও শোভনের সিনেট সদস্যপদও প্রশ্নবিদ্ধ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে গোলাম রাব্বানীর পদচ্যুতির পর প্রশ্ন উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) তার জিএস ও সিনেটের সদস্যপদ নিয়ে। ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সিনেটে থাকার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের পদত্যাগের ব্যাপারে কথা বলতে শুরু করেছে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। এমনকি এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডাকসু ভিপি নূরুল হকও। এদিকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেবেন ছাত্রলীগের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নাসিমুল হুদা।

খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে সংগঠনের দায়িত্ব নেবেন তারা। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা জানান। নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান জয় বলেন, ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে আমরা সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করব। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করব।’ 
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, সদ্য বিদায়ী ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে গোলাম রাব্বানীর নৈতিক স্খলন ঘটেছে। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্যতম শীর্ষ নেতার পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন তিনি। ফলে তার উচিত হবে শিগগিরই সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেয়া।

সদ্য বিদায়ী দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মাদক সেবন, দুপুর পর্যন্ত ঘুমানো, মধুর ক্যান্টিনে না যাওয়া, ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথিকে দীর্ঘ সময় বসিয়ে রাখা ইত্যাদি। ডাকসু নির্বাচনের তিন মাসের মাথায় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, শিক্ষা ভবন, খাদ্য ভবন, গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ভবনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর উন্নয়ন কাজে টেন্ডারবাজির। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে দুই নেতার বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ করা টাকার অংশ দাবি করার বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস ভবন স্থানান্তরে টেন্ডারের ভাগ পেতে তুচ্ছ কারণে শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা চলছে গোলাম রাব্বানীর ডাকসু জিএস পদ নিয়ে। একই অভিযোগে শোভনের সিনেটে থাকার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা। এ বিষয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ছাত্রলীগের মতো একটি সংগঠনের পদে থেকে তিনি (গোলাম রাব্বানী) চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির মতো অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে থাকার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছেন তিনি। ডাকসু সভাপতি হিসেবে উপাচার্যের উচিত তার পদত্যাগের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে এসেছে। সেগুলোর সত্যতা নিয়েও কোনো প্রশ্ন নেই। রাব্বানীর নিজেরই উচিত হবে পদত্যাগ করা।

এদিকে গতকাল দুপুরে ডাকসু ভবনের সামনে সমাবেশ করে চাঁদাবাজির ‘অপরাধে’ গোলাম রাব্বানীর গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। এ সময় সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘অবিলম্বে এই চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিগ্রস্ত ডাকসুর জিএসকে পদত্যাগ করতে হবে। এ রকম একজনকে ডাকসু জিএস পদে আমরা দেখতে চাই না।’

তবে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত এক ডাকসু নেতা বলেন, ছাত্রলীগ ও ডাকসু দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠান। ছাত্রলীগ থেকে পদচ্যুতির কারণে অন্যটির পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা ডাকসুর গঠনতন্ত্রেও নেই। তবে নৈতিক কারণে তিনি (রাব্বানী) ডাকসুতে থাকবেন, নাকি পদত্যাগ করবেন, এটি তার নিজের সিদ্ধান্ত। এদিকে নৈতিক স্খলনের জন্য কোনো সদস্যের পদত্যাগের বিষয়ে ডাকসুর গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। গঠনতন্ত্রের ৫(এ) অনুচ্ছেদে ডাকসুর সর্বোচ্চ কল্যাণের স্বার্থে কোনো সদস্যকে পদচ্যুত করার ক্ষমতা ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেয়া হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ছাত্রলীগ ও ডাকসু দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি আইনগতভাবে দেখতে হবে। ডাকসুর গঠনতন্ত্রে যেভাবে আছে সেভাবেই করতে হবে।

চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত হলেই ব্যবস্থা : ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেছেন, ‘কারও বিরুদ্ধে যদি চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং তারা যদি ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কোনোভাবেই চাঁদাবাজিকে প্রশ্রয় দেবে না।

গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান। এ সময় সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও উপস্থিত ছিলেন। আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছাত্রলীগকে পরিচালিত করব। তিনি যেভাবে বলবেন ঠিক সেভাবে ছাত্রলীগ চলবে। কোনো টেন্ডারবাজ বা চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ছাত্রলীগের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা ছাত্রলীগকে একটি ব্যানারের নিচে দাঁড় করাতে চাই। ছাত্রলীগ একটাই, তা হচ্ছে শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ।’

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038120746612549