সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
মঙ্গলবার দুপুরে, তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদ উজ জামান। কনস্টেবল টিটুর সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে নিতে আদালতে আবেদন করবে পিবিআই।
এর আগে, সোমবার এ মামলায় বন্দর বাজার ফাঁড়িতে কর্মরত তিন পুলিশ সদস্য আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। রায়হানকে নির্যাতনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তিন কনস্টেবল দেলোয়ার, সাইদুর ও শামীম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
এ ঘটনায় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। অন্য তিনজন হলেন, কনস্টেবল হারুনুর রশীদ, কনস্টেবল তৌওহিদ মিয়া, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস। একইসাথে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারও করা হয়েছে। প্রত্যাহারকৃত পুলিশ সদস্যরা হল, এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী, কনস্টেবল সজিব হোসেন।
তবে যে তিনজনকে আদালতে তোলা হয়েছে তারা কেউই বরখাস্ত বা প্রত্যাহার নয় বলে জানা গেছে।
গত রবিবার (১১ অক্টোবর) ভোরে পুলিশের নির্যাতনে নিহত হয় রায়হান উদ্দিন নামের ওই যুবক। তিনি সিলেটের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যা করেছে।
গত বৃহস্পতিবার রায়হান উদ্দিনের লাশ পুনঃময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তুলেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেদিন সকাল ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন ও সজিবুর রহমান, পিবিআইর এসপি খালেদুজ্জামান এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আখালিয়া নবাবী মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান থেকে লাশ তোলা হয়।
অন্যদিকে, রায়হান হত্যার ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে রবিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এলাকাবাসী ও নিহত রায়হানের পরিবার।
ওই সংবাদ সম্মেলনে রায়হান হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারে তারা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। নাহলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও দেয়া হয়। তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও দাবি জানান।