বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার পাঁচ আসামির ডাক্তারি পরীক্ষার আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের দিন দুপুর ১ টার দিকে বরগুনার শিশু আদালতে এ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে ডাক্তারি পরীক্ষার আবেদনের শুনানির জন্য ১৬ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আলোচিত এ মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পূর্বনির্ধারিত ছিল। সাক্ষ্যগ্রহণের দিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী নিহত রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। একই দিনে মামলার পাঁচজন অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামির বয়স নির্ধারণের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়।
ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে বয়স নির্ধারণের জন্য যেসব আসামির বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করা হয়েছে তারা হলো, মো. রাশিদুল হাসান রিশান ফরাজী, জয় চন্দ্র সরকার চন্দন, মো. নাঈম, সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ওরফে মহিবুল্লাহ এবং মারুফ মল্লিক।
রিফাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মুজিবুল হক কিসলু বলেন, সোমবার রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্য দিয়েছেন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। এ মামলার বাদী তার ছেলে হত্যার সঠিক বর্ণনা সাক্ষ্যের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। এরপর আসামিপক্ষের ১০ জন আইনজীবী তাকে জেরা করেন।
তিনি আরও বলেন, রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির মধ্যে পাঁচজন আসামির বয়স ১৮ বছরের বেশি মনে হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের দাখিল করা চার্জশিটে তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক দেখানো হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপক্ষ ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের বয়স যাচাই করার জন্য আদালতে আবেদন করেছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি এ আবেদনের শুনানি হবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমানের আদালতে সাক্ষ্য দেন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে বরগুনা কারাগারে থাকা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এদিন আদালতে উপস্থিত হন জামিনে থাকা এ মামলার অন্য তিন আসামি।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, আমি আমার ছেলে হত্যার বর্ণনা আদালতে সঠিকভাবে দিয়েছি। আমার বিশ্বাস ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাব। আমার একমাত্র ছেলে হত্যাকা-ে জড়িতরা যে অপরাধ করেছে তারা সেই ধরনের অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি পাবে।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক রয়েছেন। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি প্রিন্স মোল্লা উচ্চ আদালতের আদেশে এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে মারুফ মল্লিক এবং আরিয়ান হসেন শ্রাবণ জামিনে রয়েছেন। আর বাকি আসামিরা কারাগারে রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য দেবেন নিহত রিফাতের দুই চাচাসহ এ মামলার তিনজন সাক্ষী। একই দিন বিকেলে বরগুনা শিশু আদালতে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন নিহত রিফাতের মা ডেইজি বেগম এবং চাচাতো বোন নুসরাত জাহান অনন্যা।