রোগী সেজে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশ ছেড়েছেন সিকদারের দুই ছেলে - দৈনিকশিক্ষা

রোগী সেজে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশ ছেড়েছেন সিকদারের দুই ছেলে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি, সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই দিপু হক সিকদার রোগী সেজে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা ছেড়ে গেছেন। নিজেদের মালিকানাধীন আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশনের একটি উড়োজাহাজকে ‘রোগীবাহী’ হিসেবে দেখিয়ে ২৫ মে দুপুরে তাঁরা ব্যাংককের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অনুমোদন নিয়েই দেশ ছেড়েছেন হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি দুই ভাই। শনিবার (৩০ মে) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সুস্থ মানুষকে রোগী সাজিয়ে কী করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশ যাওয়ার অনুমোদন দেয়া হলো—প্রশ্ন করা হলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল-আহসান বলেন, যাঁরা গেছেন তাঁরা চিকিৎসাসংক্রান্ত কাগজপত্রের ভিত্তিতে অনুমোদন নিয়েই গেছেন।

সিকদার গ্রুপের মালিক জয়নুল হক সিকদারের ছেলে এবং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) সিরাজুল ইসলাম। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ঋণের জন্য বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য বেশি দেখাতে রাজি না হওয়ায় এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেন সিকদার গ্রুপের দুই পরিচালক। শুধু তাই নয়, তাঁরা দুই কর্মকর্তাকে বনানীর বাসায় জোর করে আটকে রেখে নির্যাতন এবং সাদা কাগজে সই নেন।

জানা গেছে, ২৫ মে দুই ভাই আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশনের একটি উড়োজাহাজকে তাঁরা ‘রোগীবাহী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন সিকদার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের দুটি উড়োজাহাজ ও সাতটি হেলিকপ্টার রয়েছে, যেগুলো ভাড়ায় চালানো হয়। উড়োজাহাজ দুটির একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান হকার বিচক্র্যাপ্টের তৈরি ‘হকার-৮০০’ মডেলের ও অন্যটি ইতালির তৈরি পিয়াজিও। ‘করপোরেট জেট’ হিসেবে পরিচিত এসব উড়োজাহাজে রোগী বহন করার সময় আসন খুলে রোগীর জন্য বিশেষভাবে নির্মিত বিছানা যুক্ত করা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে নিয়মিত উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় বিদেশ থেকে বাংলাদেশের লোকজনকে আনা আর বিদেশিদের বাংলাদেশের বাইরে পাঠানোর ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় অনুমতি দিচ্ছে। ওই অনুমতির আওতায় থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্য পরিবহনকারী উড়োজাহাজকে বাইরে রাখা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সময় বাঁচানোর স্বার্থে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়টি সিভিল এভিয়েশন বা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়ে দেয়। যদিও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ক্যানসার আক্রান্ত এক বাংলাদেশিকে দেশে আনা, তুরস্কের এক মুমূর্ষু রোগীকে ইস্তাম্বুল পাঠানো আর ব্যাংকক থেকে এক রোগীকে বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়টি দেখভাল করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র অবশ্য বলছে, সিকদার গ্রুপের দুই পরিচালক ব্যাংকক যাওয়ার সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোনো আবেদন জানাননি। তাঁরা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ব্যাংকক গেছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাঁদের দাবি, ওই দুই ব্যবসায়ী থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাড়ার প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করেছেন।

তবে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রের দাবি, আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন তাদের উড়োজাহাজকে অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে থাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছিল। ২৩ মে ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ-সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হলে তারা ব্যাংককে উড়োজাহাজ অবতরণের অনুমতি দেয়। সেই অনুমোদন দেখিয়ে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে যাত্রীদের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে আবেদন করে আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন। এরপর ঢাকায় সিভিল এভিয়েশনের অনুমোদনের পর ২৫ মে দুপুরে উড়োজাহাজটি ঢাকা ছাড়ে। ওই উড়োজাহাজে দুই পাইলট, এক প্রকৌশলী ও দুই ভাই ছিলেন। উড়োজাহাজটি তাঁদের ব্যাংককে নামিয়ে দিয়ে সে দিনে রাতেই ঢাকায় ফিরে আসে। যদিও এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানে না বলে জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশনের কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মীর শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁদের যাত্রা স্থগিত করার কোনো নির্দেশনা ছিল না।’

আর ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান ডিভিশনের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, মামলাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনগতভাবে যা যা করার দরকার, পুলিশ সবই করবে।

তবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশ ছাড়ার আগে পুলিশও দুই ভাইকে ধরার কোনো চেষ্টা করেনি। ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা না থাকায় পুলিশ প্রাথমিক কিছু তদন্ত পরিচালনা ছাড়া আর কিছু করেনি। সূত্র আরও জানায়, হত্যাচেষ্টার ঘটনা ৭ মে হলেও মামলা হয়েছে ১৯ মে। এ সময়ের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতাও মামলা না করা এবং মামলা হওয়ার পরও তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত না করতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে তদবির করেছেন।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045719146728516