লাইফ স্কুলের অধ্যক্ষসহ তিনজনকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

লাইফ স্কুলের অধ্যক্ষসহ তিনজনকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর উত্তরার ধর্মভিত্তিক ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লাইফ স্কুলের অধ্যক্ষসহ তিনজনকে সোমবার (৯ জানুয়ারি) ভোরে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তাদের তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছে পরিবার।

এই তিনজন হলেন লাইফ স্কুলের বর্তমান অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম ও তাঁর ভাগনে জিয়াউর রহমান। জিয়াউর এই স্কুলের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষকও। গত বছরের জুলাইয়ে শরিফুল, জিয়াউরসহ চারজন লাইফ স্কুল ছেড়ে চলে যান। তাঁরা উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরে নলেজ হোম নামে একই ধরনের নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

শরিফুল ইসলামের স্ত্রী সোনিয়া ইসলাম বলেন, তাদের বাসা উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর রোডের সাত নম্বর ভবনে। আজ ভোর পাঁচটা থেকে সোয়া পাঁচটার দিকে ছয় থেকে সাতজন ব্যক্তি তাদের বাসায় আসেন। তাঁরা তাঁর স্বামী শরিফুলকে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি তাদের কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চান। তাঁরা কোথা থেকে এসেছেন, কেন এসেছেন এবং তাঁর স্বামীকে কোথায় নিয়ে যাবেন, সেসব জানতে চান। কিন্তু ওই ব্যক্তিরা তাঁকে কোনো কথার জবাব দেননি বা পরিচয়পত্র দেখাননি। তাঁরা তাঁর স্বামীকে নিয়ে চলে যান।

সোনিয়া ইসলামের ভাষ্য, তিনি বারান্দা থেকে দেখতে পেয়েছেন যে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে তাঁর স্বামী শরিফুল ইসলামকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য পরিবারের সদস্যদের বলেছেন, ‘আগে খোঁজ নিন, কারা তাঁকে (শরিফুল) তুলে নিয়ে গেছেন। র‍্যাবের কাছে যান, ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) কাছে যান।’ যারা তাঁর বাসায় এসেছিলেন তাদের পরনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাক ছিল না বলে তিনি দাবি করেন।

শরিফুলের স্ত্রী আরও বলেন, শরিফুলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ৪৯ নম্বর বাসা থেকে ভাগনে জিয়াউরকে একইভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্কুলটির বর্তমান অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর রোডে অবস্থিত লাইফ স্কুলের কাছেই থাকতেন মিজানুর। তাঁকে আজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।’

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন বলেন, ‘আমি ডিএমপি কমিশনারের মিটিংয়ে আছি।’

কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গির যাতায়াতকে কেন্দ্র করে লাইফ স্কুল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিশুদের এই স্কুলের সাবেক দুজন শিক্ষক ফয়সাল হক ও মাঈনুল ইসলামকে পুলিশ খুঁজছে। মাঈনুল ওরফে মূসা এখন নব্য জেএমবির হাল ধরেছেন বলে মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। এ ছাড়া পুলিশের অভিযানে নিহত নব্য জেএমবির দুজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ও তানভীর কাদেরীরও এই স্কুলে যাতায়াত ছিল। তাঁদের বাসাও ছিল ওই স্কুলের কাছাকাছি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর সড়কে ভাড়াবাড়িতে লাইফ স্কুলটি চালু হয় ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের জুলাইয়ে। এর উদ্যোক্তা আটজন। তাঁদের মধ্যে চারজন হলেন একটি বেসরকারি মুঠোফোন কোম্পানির মধ্যম সারির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। অন্যদের মধ্যে একজন বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক, একজন কানাডা থেকে এমবিএ পাস করা এবং দুজন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করা। লাইফ স্কুলের প্রধান উপদেষ্টা করা হয় ঢাকার নাজিরাবাজার মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে। স্কুলটির এখন শিক্ষার্থীসংখ্যা ১১০। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ মোট শিক্ষক ২৩ জন। এ বছর অষ্টম শ্রেণি চালু করা হয়েছে। কেমব্রিজ ও ইসলামিক পাঠ্যক্রম সংমিশ্রণে স্কুলে পাঠদান করা হয়।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, মালয়েশিয়ায় পড়াশোনা করা ফয়সাল হক লাইফ স্কুলে যোগ দেন ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের শুরুর দিকে। আর ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে যোগ দেন মাঈনুল ইসলাম। ফয়সাল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে আর মাঈনুল ইংরেজি পড়াতেন।

সূত্র: প্রথম আলো

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070478916168213