লালমনিরহাটে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় মাত্র ৮০ জন চিকিৎসকই ভরসা। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম (পিপিই) ও বিপদজনক পর্যায়ের রোগীর জন্য নেই আইসিইউ। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দুপুরে করোনা মোকাবেলায় লালমনিরহাটের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. নিমর্লেন্দু রায়।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় যুদ্ধ করছেন বিশ্বের চিকিৎসকরা। দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছেন সরকার। লালমনিরহাটে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ১৪৭ জনের মধ্যে ১৬ জন মেয়াদ শেষ করেছেন। তারা সবাই সুস্থ রয়েছেন। জেলার ৫টি উপজেলা ও দুইটি পৌরসভার মানুষদের করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ৭৪৫ জন কর্মী। যার মধ্যে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৮০ জন ও নার্স ১৬০ জন।
এছাড়াও তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার জন্য রয়েছেন ১৩৪ জন বিভিন্ন পদের স্টাফ, মাঠ পর্যয়ের স্বাস্থ্য সহকারী/পরিদর্শক ১৯৫ জন ও কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার ১৭৬ জন। এসব কর্মীকে কয়েকটি স্থরে বিভাজন করে টিমওয়ার্ক হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দহগ্রাম ১০ শয্যা হাসপাতাল ও লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জন্য।
হাসপাতালের আইসলোশন ওয়ার্ডের অতিরিক্ত রোগীর ভিড় সামলাতে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে অস্থায়ী করোনা ইউনিট প্রস্তুত করা হচ্ছে। লালমনিরহাট শহরের জন্য লালমনিরহাট রেলওয়ে হাসপাতালের ১৬টি বেড এবং সদর হাসপাতালের ৭টি এবং বাকী ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ৪/৫টি করে আইসলেশন বেড বর্তমানে প্রস্তুত রয়েছে।
করোনা আক্রান্ত রোগীর বিপদজনক পর্যায়ে গেলে তার সেবা প্রদান করতে আইসিইউ বেড প্রয়োজন হবে, যা এ জেলায় একটিও নেই। এমন পর্যায়ে গেলে সেই সকল রোগীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হবে বলে জানান সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, করোনা রোগীর সেবা দিতে চিকিৎসক টিমের নিরাপত্তায় প্রয়োজনী সরঞ্জমের যথেষ্ট সংকট রয়েছে। মজুদ থাকা এসব সরঞ্জম মাত্র দুইদিন ব্যবহার হলেই শেষ হবে। তৃতীয় দিনে সেবা পৌঁছনো সম্ভব হবে না এসব সরঞ্জামে। তাই চিকিৎসা সরঞ্জাম চেয়ে মন্ত্রণালয়ে জরুরি চাহিদা পাঠানো হচ্ছে।
এছাড়াও রোগী পরিবহনে হালকা চাপ সামলানোর মতো অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তবে চাপ বেড়ে গেলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স বা ব্যাক্তিগত গাড়ি রিকুইজেশন নেয়া হবে। সব তৈরি হলেও চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীদের নিরাপত্তার সরঞ্জাম না পেলে চিকিৎসা দেয়া অসম্ভব হবে। তাই দ্রুত চিকিৎসা সরঞ্জাম (পিপিই) প্রদানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
একই সাথে আতঙ্কিত না হয়ে, সচেতনতা বাড়িয়ে সাহস ও ধৈর্য নিয়ে চিকিৎসা বিভাগকে সহযোগিতা করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান সিভিল সার্জন।