শক্তি সম্ভাবনার পথ : প্লাস্টিক ও পলিথিনের পাইরোলাইসিস - দৈনিকশিক্ষা

শক্তি সম্ভাবনার পথ : প্লাস্টিক ও পলিথিনের পাইরোলাইসিস

হাফসানা আক্তার |

পাইরোলাইসিস হচ্ছে বিজ্ঞান সম্মত প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে প্লাস্টিক ও পলিথিন উত্তপ্ত করে ভারী তেল বা ক্রুড ওয়েল, হাইড্রোকার্বন ও অন্যান্য তেল পাওয়া যায়। প্লাস্টিক নামক বৈপ্লবিক এই পদার্থ আবিষ্কৃত হয় প্রথম দুইজন জৈব রসায়নবিদের হাত ধরে ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে। আর পলিথিনের জন্ম তখনি। যা পরবর্তী সময়ে এসেছিল কার্ল জিগলারের উচ্চঘনত্বের পলিথিন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে।

সমগ্র বিশ্বের গতিশীল উন্নয়ন বজায় রাখার জন্য শুধু উন্নত দেশ নয় উন্নয়নশীল দেশসহ স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত পণ্য এবং হালকা বহনকারী পলিথিনের ব্যবহার অভাবনীয়। প্যাকিজিং, আসবাবপত্র, ফার্নিচার, পণ্য, খাদ্য ও পানীয় পাত্রের জন্য প্লাস্টিক দ্রব্য ও পলিথিনের বাহকের তুলনা হয় না। কোথায় নেই এই প্লাস্টিক? খাদ্য দ্রব্যের মোড়ক থেকে শুরু করে আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য ব্রাশ, চিরুনি, প্রসাধনীসামগ্রীতেও থাকে প্লাস্টিক। গৃহস্থালির জিনিসপত্র ও পোশাকেও ব্যবহার করা হয় নায়লনের মতো প্লাস্টিক। বিংশ শতাব্দীর আবিষ্কার এই প্লাস্টিক জনপ্রিয়তা আর গ্রহণযোগ্যতা ছড়িয়েছে অনেক অনেক গুণ বেশি। সকল প্রকার পন্য বহনে ও আবরণেও ব্যবহৃত হচ্ছে এই পলিথিন। প্লাস্টিক করে দিয়েছে জীবনকে সহজ ও আরামদায়ক।

কত সুন্দর ছিল এই উন্নত, আরামপ্রিয় জীবনধারা। কিন্তু আজ প্লাস্টিক দূষণের দ্বারা সমুদ্র হারাচ্ছে তার নির্মলতা। সৈকত পরিদর্শনে যাওয়া মানুষ এখন সমুদ্রের নীলিমাতে বিমোহিত না হয়ে হকচকিত হচ্ছে প্লাস্টিকের বোতলের ঢেউ দেখে। সম্প্রতি এমনি দেখা গিয়েছে সিঙ্গাপুরের একটি সমুদ্র সৈকতে। পরিবেশ হারাচ্ছে তার সজীবতা আর নিশ্চয়তা। একাধারে মাটি, পানি ও বায়ুতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ফলে আজ আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে ওঠেছে বিশ্বকে উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া এই পলিথিন ও প্লাস্টিক।

মাটিতে প্লাস্টিক দ্রব্য ও পলিথিন থাকায় জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে ব্যাপক হারে। প্রতিনিয়ত নর্দমা, খাল, নদী-নালা, শহরের ড্রেনগুলো ভরপুর হচ্ছে এই পলিথিন ও প্লাস্টিক দ্রব্যে। এমনকি পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার অভাবে খোলা জায়গায় পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে পরিবেশে। সামুদ্রিক ধ্বংসাবশেষ বা মহাসাগরের লিটার বিশ্বব্যাপী বৃহৎ একটা সমস্যা। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৬০-৮০ শতাংশ মহাসাগর লিটার হচ্ছে এই প্লাস্টিকের (ডরিক ২০০২)। এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে করা হচ্ছে ইনসিনারেশন। যার ফলে প্রায়  ৮৫০ মিলিয়ন কার্বোন-ডাই-অক্সাইড মিশছে এটমোসফেয়ারে।

সমাধান কি?

মাথায় ব্যথা হয়েছে বলে মাথা কেটে ফেলে দেয়াই সমাধান নয়। আমরা ভুলে গেছি হয়তো, When The Biggest Problem, Then The Biggest Solution For Solving That Problem. সাময়িকভাবে ব্যর্থ চেষ্টা করলেও এই বৃহৎ পরিসরে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিনের হার কমানো যাবে না। তাই আমাদের খুঁজতে হবে বিকল্প ব্যবস্থাপনার। কারণ পণ্য এবং খাদ্যদ্রব্য প্যাকেজিংয়ের ব্যবহৃত পলিথিন ও প্লাস্টিক কখনোই শূন্যের কোটায় আনা সম্ভব না। এই প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত পণ্য ও পলিথিন পুনঃব্যবহার, পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করতে সবচেয়ে সুন্দর ব্যবস্থাপনা হতে পারে পাইরোলাইসিস প্রক্রিয়া। যার দ্বারা নিঃশেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে থাকা সম্ভাবনায় অনবায়নযোগ্য শক্তির স্থায়ী ও টেকসই যোগান দেয়া সম্ভব হবে। আমাদের দরকার শুধু দ্রুত উন্নত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন।

কি ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করি আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে?

সেটা হতে পারে থার্মোপ্লাস্টিক, যেখানে এই ধরনের প্লাস্টিক উত্তপ্ত করাতে প্লাস্টিকের রাসায়নিক গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে। তাই বারবার গলানো সম্ভব হয়। এমন প্লাস্টিকের উদাহরণ হতে পারে পলিইথিলিন, পলিপ্রোপিন, পলিস্টাইরিন ও পলিভিনাইল ক্লোরাইড। আরেক ধরনের  প্লাস্টিক হতে পারে এমোরফাস, নাহলে ক্রিস্টালাইন। যেমন থার্মোসেটস, পলিস্টাইরিন ও এর কোপলিমার। পলি মিথাইল মিথা ক্রাইলেট  হচ্ছে এমোরফাস আর আধা ক্রিস্টালাইন বা আধা স্ফটিক প্লাস্টিক পলিথিলিন, পলিপ্রপিন, পলি ভিনাইল ক্লোরাইড, পলিমাইড নাইলন, পলি গ্রিস্টার। আরেক ধরনের প্লাস্টিক দেখতে পাওয়া যায়। বায়োডিগ্রেডেবল বা বায়োপ্লাস্টিক। এ ধরনের প্লাস্টিকগুলো সূর্যের আলোতে, অতি বেগুনি রশ্মি, পানি, ব্যাকটেরিয়া অথবা এনজাইমের সহায়তায় ভেঙ্গে যায়। যেখানে সব প্লাস্টিক তৈরি হয় পেট্রোকেমিক্যাল থেকে, সেখানে বায়োপ্লাস্টিক তৈরি হয় টেকসহ নবায়নযোগ্য গাছের উপাদান যথা সেলুলোজ ও স্টার্চ থেকে।

এখন আসি বৈশ্বিক খাতে প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে। প্লাস্টিক বিভিন্ন খাতে ব্যবহৃত হয়ে বিতাড়িত করেছে কাঠ, ধাতু ও কাচের ব্যবহারের অত্যাধিকতা। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্লাস্টিকের বিশ্বব্যাপী উৎপাদন ছিল ৩৫৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন। যার মধ্যে শুধু ইউরোপেই ছিল ৬২ মিলিয়ন মেট্রিক টন। পরিসংখ্যানের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,  ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে প্লাস্টিক উৎপাদন সারা বিশ্বে ছিল মাত্র ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন, যা বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়ে আজ ৩৫৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন। চিন প্লাস্টিক উৎপাদন এর জন্য বৃহত্তম দেশগুলোর মধ্যে একটি। সম্পূর্ণ প্লাস্টিকের মধ্য থেকে ৪০ শতাংশ শুধু মাত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে প্যাকেজিংয়ের জন্য। বার্ষিকভাবে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করা হয় সারা বিশ্বে। এমনকি প্রতি ১ মিনিটে ১ মিলিয়ন ব্যাগ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গত শতাব্দীতে আমরা যে প্লাস্টিক তৈরি করেছি তার চেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়েছে গত দশ বছরে। এমনকি ২০৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে প্লাস্টিক উৎপাদন ২০ শতাংশ বেড়ে ওঠতে পারে।

২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ভার্জিন প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার প্রক্রিয়ার চালুর সম্ভাবনা চলছে। এমনকি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক ব্যবহার কমিয়ে পুনঃব্যবহার করার জন্য বিশ্বের বড় বড় ৪০০ কোম্পানি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। এইযে বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত প্লাস্টিকের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাপনা ব্যতীত কখনোই সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মেট্রিক টনেরও বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে। অথচ কিছু দেশ জোরালো প্রচেষ্টা চালাচ্ছে প্লাস্টিক পলিথিন নিষিদ্ধের ব্যাপারে। কিন্তু তাদের এই প্রচেষ্টা কতটুকু সফলতা লাভ করবে সেটাই এখন প্রশ্ন।

বাংলাদেশ শিল্পভিত্তিক প্লাস্টিকের প্রসার ঘটতে থাকে ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। কিন্তু ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে অন্যান্য জিনিসের চেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকে এই প্লাস্টিক তৈরির কারখানাগুলো। মূলত ইউরোপিয়ান দেশগুলো থেকেই এসেছে এই গতিশীল উন্নত ব্যবস্থা। আজকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমাদের দেশে প্রায় ৩০০০ হাজার ছোট, মাঝারি ও বড় পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাসহ প্রায় ১ মিলিয়ন লোকের কর্মক্ষেত্রের যোগান দিচ্ছে প্লাস্টিক কারখানাগুলো। বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে আছে ছাঁচ নির্মাণ, থার্মোসেটিং রুপান্তর, শপিং ব্যাগ, গার্মেন্টস ব্যাগ, বোতল, পিপি বোতল, স্তরিত প্যাকেজসহ আরও অনেক কিছু। আমাদের দেশ এখন বিদেশে রপ্তানি করছে প্লাস্টিকের পোশাক যেখানে নাইলন থাকে, সাথে গৃহস্থালীর জিনিস। তবে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন প্লাস্টিকের কাঁচামাল আমদানি করতে হচ্ছে এবং বেড়েই চলছে এই আমদানি হারের সীমা। পলি অলিফিন ইউনিট না থাকায় ১০০ শতাংশ পলিমারই আমদানি করতে হচ্ছে। বিদেশি এক্সপ্লোরেশন সংস্থার সহায়তায় পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস ফিল্ড ক্ষেত্র আবিষ্কার প্রক্রিয়া চলছে যাতে করে পেট্রোলিয়াম থেকে প্লাস্টিক তৈরি করা যায়।

বাংলাদেশে দৈনিক প্রায় ৩০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এছাড়াও ঢাকাতেই দৈনিক ব্যবহৃত হয় প্রায় ১৪ মিলিয়ন পিস পলিথিন ব্যাগ। এই ব্যাপকহারে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পদার্থের বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা হতে পারে আমাদের অনবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের নতুন দ্বার। কারণ একই সাথে ৩ হাজারেরও অধিক কারখানা ও এই লক্ষ-কোটি শ্রমিকের কর্মসংস্থান স্থগিত কি আদৌ সম্ভবপর? তবে আমাদের দরকার আধুনিক পরিকল্পনা ও সরকারের সার্বিক সহযোগিতা, যাতে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনায় পাইরোলাইসিস হয়ে ওঠে আমাদের দেশসহ সকল দেশে শক্তি উৎপাদনের নতুন দ্বার।

পাইরোলাইসিস কি আসোলে আর কীভাবে টেকসই পন্থা?

পাইরোলাইসিস প্রক্রিয়াটি যদিও পুরোনো, প্রায় ৫৫০০ বছর পূর্বে মধ্য প্রাচ্য ও দক্ষিণ ইউরোপে কাঠ, কয়লা প্রস্তুত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। পাইরোলাইসিস হচ্ছে তাপের সাহায্যে ভাঙ্গন বা পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া যেখানে স্বল্প অক্সিজেন উপস্থিত থাকে।

পাইরোলাইসিস বিভিন্ন প্রকার হতে পারে তার মধ্যে সরাসরি তাপীয় ভাঙ্গন যাকে ক্রেকিং ও বলা হয়। এখানে কম খরচে বর্জ্য থেকে তেল গ্যাস উৎপাদিত হয়, তবে অনুঘটক হিসেবে এলুমিনা, জিরকোনিয়া, জিয়োলাইট অথবা মৃত্তিকা ব্যবহৃত হয়। তবে অনুঘটকবিহীন পাইরোলাইসিস এ ৬০০-৬৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন। আর মাঝারি তাপের যেমন- ৩০০-৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পাইরোলাইসিস থেকে পেট্রোকেমিক্যাল তৈরি করা যায়। যাকে গেসোলিনে রুপান্তর করা যায়। গেসোলিন হচ্ছে এক ধরনের জ্বালানি। পাইরোলাইসিসভিত্তিক পুনরুদ্ধার চুল্লির মাধ্যমে তেল, ভারী জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব, যেখানে লম্বা শিকল বিশিষ্ট হাইড্রোকার্বন ও এরোম্যাটিকস যৌগ থাকে লম্বা পার্শ্ব শিকল বিশিষ্ট। তবে কম তাপমাত্রার পাইরোলাইসিসে অলিফিন, শাখাযুক্ত হাইড্রোকার্বন ও এরোম্যাট্রিক্স কম থাকে। এছাড়া হাইড্রোজিনেশন অন্য আরেকটি প্রক্রিয়া ত্রুটি, ইহা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় না। এক্ষেত্রে প্লাস্টিক বর্জ্যের সাথে কন্ডেন্সেবল উপাদানের সাথে মিশিয়ে পেট্রোকেমিক্যাল ও ফুয়েল তৈরি করা হয়। গ্যাসীকরণ অন্য আরেকটি প্রক্রিয়া যেখানে তাপমাত্রা থাকে ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে এবং নিয়ন্ত্রিত বায়ু, আবহাওয়ার CO,H2,CH4ও থাকে। প্লাজমা এ.আর.সি গ্যাসীকরণ প্রক্রিয়াটি সম্প্রতি উন্নত করা হয়েছে। যেখানে অক্সিজেন ডিফিসিয়েন্ট অর্থাৎ কম অক্সিজেন অবস্থায় তাপ দেয়া হয়। তাপমাত্রা থাকে  >৭০ হাজার ফারেনহাইটের মতো। এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে অতি উচ্চতাপের ফলে কোনো বিষাক্ত জৈব পদার্থ অবশিষ্ট থাকার সম্ভাবনা নেই। এভাবেই পাইরোলাইসিসের মাধ্যমে আমাদের জ্বালানি তেল, ভারী জ্বালানি তেল, পেট্রোলিয়াম, গেসোলিন ও অন্যান্য হাইড্রোকার্বন পাওয়া যায়।

ভূমি থেকে অনবায়নযোগ্য শক্তি উত্তোলন করা বিশ্বের মানুষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশসহ স্বল্পোন্নত দেশের জন্য। কিন্তু এত বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য আমরা বেছে নিয়েছি আমাদেরই বর্তমান সমস্যা সৃষ্টিকারী প্লাস্টিক ও পলিথিন দ্রব্যেকে। তাই পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যকে নিষিদ্ধ করা নয় বরং ব্যবহার করবো নতুন শক্তি তৈরির হাতিয়ার হিসেবে।

সামগ্রিকভাবে কিছু  দিক নির্দেশনা দরকার। যাতে পলিথিন আমাদের আতঙ্ক না হয়ে আমাদের জীবনের মান উন্নয়নের অন্যতম একটি উপায় হতে পারে। সমুদ্র সৈকতে ক্লিনিং আপ মিশন চালু করতে হবে। উন্নত দেশগুলোর সমুদ্রে প্লাস্টিক নিক্ষেপ বা নিষ্কাশনের ব্যাপারে কড়া আইন প্রনয়ণ করতে হবে। প্লাস্টিক পন্য উৎপাদনের সময় ওজন হ্রাসকারী রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার কম করতে হবে। যাতে দূষিত আবহাওয়া আমাদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শ্বাস-প্রশ্বাসের অন্তরায় না হয়। বর্জ্য উৎপাদনের জায়গায় আমাদের পৃথকীকরণের প্রক্রিয়াটা জোরদার করতে হবে। উন্নত ব্যবস্থাপনার প্লান্ট ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে। প্লাস্টিক বর্জ্যের থেকে অনবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের দ্রুত প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

সর্বোপরি জীবনের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকা এই প্লাস্টিক দ্রব্য ও পলিথিন বর্তমান বিশ্বের বড় সমস্যা ও জীবনের অন্তরায় না ভেবে আমাদের উন্নত ব্যবস্থাপনা, পুনঃব্যবহার, পুনঃপ্রক্রিয়াকরনসহ নতুন সম্ভাবনার দ্বার স্বরূপ পাইরলাইসিস প্রক্রিয়ার সমর্থন দিতে হবে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে অনবায়নযোগ্য শক্তির একটি টেকসই উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

লেখক : হাফসানা আক্তার, শিক্ষার্থী, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।]

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.016542911529541