শত শত রোহিঙ্গা শিশু পরিচয় লুকিয়ে স্কুলে যাচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

শত শত রোহিঙ্গা শিশু পরিচয় লুকিয়ে স্কুলে যাচ্ছে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শত শত রোহিঙ্গা শিশু নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে অধ্যয়ন করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিচয় লুকিয়ে এবং কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে রোহিঙ্গা শিশুরা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন ফারুক তাহের। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয় নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে বাংলাদেশের ঠিকানা ব্যবহার করে ভর্তি হওয়ায় এসব ‘দলিল’ পরবর্তীতে তাদের বাংলাদেশি নাগরিক হতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, কোনো অবস্থাতেই রোহিঙ্গা শিশুরা স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকতে পারবে না।

এর প্রমাণ পাওয়া গেলে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। প্রশাসন ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং, পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী, থাইংখালী এলাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং টেকনাফের লেদা ও মুছনী ক্যাম্পের আশপাশের সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মুষ্টিমেয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রোহিঙ্গা শিশুরা অধ্যয়ন করে যাচ্ছে।

 এদের মধ্যে রয়েছে কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের শামসু মাঝির ছেলে মো. আনাছ, একই ক্যাম্পের আলী হোসেনের ছেলে আজিজুল হক, কুতুপালং আনরেজিস্টার্ড ক্যাম্পের মো. আজিজের ছেলে রবি আলম ও কেফায়াত উল্লাহ। তারা যথাক্রমে অষ্টম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। তারা সবাই কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।

এ নিয়ে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বলেন, তথ্য গোপন করে রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েরা আমার বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করছে তা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও যদি থাকে তাহলে তাদেরও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উখিয়ার স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হলে রহিমা আকতার ওরফে রাহী খুশি নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীকে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি থেকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একইভাবে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত আরও কয়েকশ রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীর ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উখিয়ার আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, রোহিঙ্গারা এমনিতে উখিয়া-টেকনাফের সার্বিক পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে বিনা বাধায় স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ভর্তি হয়ে পড়ালেখা চালিয়ে গেলে তা ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এ মুহূর্তে উখিয়াসহ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

উখিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রায়হানুল ইসলাম মিয়া জানান, রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে এর আগেও একাধিকবার নোটিস দিয়ে উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে, যাতে কোনো রোহিঙ্গা ছেলেমেয়ে বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে না পারে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার জন্য ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অনেক স্কুল ও মাদরাসা রয়েছে। সেখানে পড়ালেখা করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এরপরও যদি ক্যাম্পের বাইরে এসে কেউ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, যারা তাদের সহযোগিতা করেছে তাও খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ রয়েছে, স্কুলের কড়াকড়ি এড়াতে অর্থের বিনিময়ে এবং মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে অনেক রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজে ভর্তি হচ্ছে। কক্সবাজার ছাড়া চট্টগ্রামের অনেক স্কুল-কলেজে রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েরা পড়ছে। তারা সবাই নিজের নাম-পরিচয় লুকিয়ে এসব স্কুল-কলেজে ভর্তি হয়েছে। অনেকে টাকার বিনিময়ে নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে জমা দিয়েছে।

সেভ দি চিলড্রেনের শিক্ষা খাতের কর্মকর্তা মোর্তুজা আহমেদ বলছেন, প্রচলিত ব্যবস্থায় ক্যাম্পের বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানে রোহিঙ্গাদের পড়াশোনা করার নিয়ম নেই। কিন্তু যে পঞ্চম বা অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করেছে, এরপর সে কী করবে? এটা নিয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি, যাতে তাদের শিক্ষার সুযোগ আরও বিস্তৃত হয়।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068550109863281