গত বছর শতাভাগ শিক্ষার্থী পাস করলেও চলতি বছর শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করায় অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা, প্রতাপপুর দাখিল মাদ্রাসা, ইমাননগর এমবিজি দাখিল মাদরাসা। গতবার শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ না হলেও পাসের হার ছিল সন্তোষজনক। মাদ্রাসা তিনটিতে ৫৪ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। সরকার শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এই খবর শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে মাদরাসা তিনটিকে শোকজও করেছে শিক্ষাবোর্ড ও শিক্ষা কর্মকর্তা। এদিকে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে মরিয়া মাদরাসা তিনটির শিক্ষকরা। তাই রোজার ছুটিতেও চলছে বাড়তি পাঠদান। তবে এবারের ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে অভিভাবকরা দায়ী করছেন পাঠদান না করিয়ে, শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যকে।
জানা যায়, চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় ইমাননগর এমবিজি দাখিল মাদরাসা থেকে ১০ জন অংশ নিয়ে সবাই ফেল করে। যদিও ২০১৭ সালে শতভাগ শিক্ষার্থী পাসের কৃতিত্ব রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। কিন্তু একবছর পরেই ফল পুরো উল্টো হয়েছে। বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে ২শ’ ৭০ শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে ১৭। শিক্ষক-কর্মচরারী নিয়মিত বেতন-ভাতাও পাচ্ছেন।প্রতাপপুর দাখিল মাদরাসা থেকে ১২ জন অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেছে। ২০১৭ সালে মাদরাসা থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। এবার শতভাগ ফেল করায় হতাশ সবাই। এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ২শ’৭৫ শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে ১৯ জন রয়েছে। অপরদিকে সাতবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার ১১ ছাত্রছাত্রী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সকলেই ফেল করে। তবে এই প্রতিষ্ঠানটি গত বছর শতভাগ পাস না করলেও ফল ছিল সন্তোষজনক। এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ২শ’ ৮১ শিক্ষার্থী ও ১৯ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। এ বছর ফল বিপর্যয় হওয়া মাদরাসা তিনটি অনুমোদন বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। এমন সিদ্ধান্তের খবরে আতঙ্কে শিক্ষক-কর্মচারীরা। মাদরাসা তিনটি বন্ধ হয়ে গেলে বিপাকে পড়বে ৫৪ শিক্ষক কর্মচারী। জানতে চাইলে ইমাননগর এমবিজি দাখিল মাদরাসা সুপার আতিয়ার রহমান বলেন, ফলে আমরা আশাহত। ২৩ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম সকল শিক্ষার্থী ফেল করেছে। ২০১৭ সালে পিএসসি, জিএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় শতভাগ পাস করেছিল। বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি।
এজন্য ছুটির দিনেও ৯টা হতে ১টা পর্যন্ত মাদরাসার ক্লাস চলছে। তিনি বলেন, বোর্ডের কারণ দর্শানোর চিঠি পেয়েছি। উত্তর দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সাতবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখানে ভাল ছাত্র কম ভর্তি হয়, এছাড়া সৃজনশীল পদ্ধতির কারণে কিছুটা সমস্যা হয়। তারপরও ২০১৭ সালে শতভাগ পাস করেছে প্রতিষ্ঠান থেকে। কিন্তু এবার কি হলো সেটা ভাবার বিষয়। কেশবপুর শিক্ষা অফিস থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস পেয়েছি এবং জবাব দিয়েছি। আমরা আশাবাদী আগামীতে ভালো ফলাফল করব। প্রতাপপুর দাখিল মাদরাসা সুপার মুজিবর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষার্থী গণিতে ফেল করেছে।