শিওরক্যাশের বিরুদ্ধে সারাদেশে মোবাইলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনিয়ম তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে এবিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার (২২ জুন) এ সংক্রান্ত চিঠি রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছে।
অভিযোগের মধ্যে রয়েছে বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে কম দেওয়া। ৩০০ টাকার জায়গায় ১৫০ টাকা দেওয়া, মোবাইলে মেসেজ না যাওয়া, শিওরক্যাশের পর্যাপ্ত এজেন্টের অভাব, এজেন্ট কর্তৃক উপবৃত্তির অর্থ থেকে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত অবৈধভাবে কেটে নেওয়াসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া এসব সমস্যার সম্মুখীন হওয়া প্রধান শিক্ষকবৃন্দ সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, রুপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের লোকবল সংকট, যথাযথ তদারকির অভাব এবং পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার অভাবে মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতির সুফল প্রাপ্তি থেকে উপকারভোগীগণ বঞ্চিত হচ্ছেন।
এসব ছাড়াও রুপালী ব্যাংক কিংবা শিওরক্যাশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমসমূহে যথাযথ প্রচারের অভাব এবং সীমাবদ্ধতার কারণেও এসব সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মোবাইলে উপবৃত্তি প্রদানে সমস্যা দ্রুত সমাধান এবং অভিভাবকদের দুর্ভোগ নিরসন করা না হলে চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করে হুঁশিয়ারি দিয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে করণীয় জানাতে বলেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাসিক উপবৃত্তির অর্থ প্রদানে গত বছরের ২৪ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টেলিটক এবং রূপালী ব্যাংকের মধ্যে চুক্তি সই হয়।
টেলিটকের ‘মায়ের হাসি’ নামে সিম দিয়ে শিওরক্যাশ উপবৃত্তির অর্থ প্রদানের কথা বলা হয় চুক্তিতে। কিন্তু শুরুতেই অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখা যায়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের চিঠিতে বলা হয়েছে, রূপালী ব্যাংক শিওরক্যাশের মাধ্যমে সারা দেশে মোবাইলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসার সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানে অনিয়ম ও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন এবং সৃষ্ট সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শিওরক্যাশ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি। সে অনুসারে কিছু কিছু সমস্যার আমরা প্রতিকার করেছি এবং অন্যান্যগুলোর বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত যাচাই বাছাই করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে। এ সময় তিনি আরও বলেন ইতিমধ্যে প্রমানাদিসহ আমরা মন্ত্রণালয়েও আমাদের যুক্তি তুলে ধরেছি।