শিক্ষক নিবন্ধনের উদ্ভট ফল, পরীক্ষার্থীদের ক্ষোভ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক নিবন্ধনের উদ্ভট ফল, পরীক্ষার্থীদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক |
চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে নানা রকম অসঙ্গতির অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা। পরীক্ষা না দিয়েও পাসের যেমন অভিযোগ আছে, বিপরীতে পুরুষ প্রার্থীর স্থলে নারী প্রার্থীর রোল এসেছে পাসের তালিকায়। এছাড়া অনেকে উত্তীর্ণ হওয়ার মতো পরীক্ষা দিলেও তারা কৃতকার্য হননি বলেও দৈনিকশিক্ষার কাছে অভিযোগ এসেছে। লুকোচুরির পর ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ।  পরীক্ষার ফলাফলে অসঙ্গতি নিয়ে ফল পুনর্প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।
 
প্রকাশিত ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগকারী সংস্থা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী। নতুন বিধান ও আইনী জটিলতার কারণে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া থেমে থাকার মধ্যে নতুন এই ফলের অসঙ্গতি নিয়ে সোচ্চার ‘বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধিত নিয়োগবঞ্চিত জাতীয় ঐক্য পরিষদ’। 
 
সোমবার (২৩ এপ্রিল) চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফলে স্কুল-২ পর্যায়ে ৬২৪ জন, স্কুল পর্যায়ে ১৫ হাজার ৩৬২ জন এবং কলেজ পর্যায়ে ৩ হাজার ৮৭৭ জনসহ মোট ১৯ হাজার ৮৬৩ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩১৮ জন। স্কুল পর্যায়-২ এ ২৩টি, স্কুল পর্যায়ে ২৩টি এবং কলেজ পর্যায়ে ৩৫টিসহ সর্বমোট ৮১টি বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।
 
এর আগে গত বছরের ২৫ আগস্ট প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় স্কুল পর্যায়ে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৩৮ জন এবং কলেজ পর্যায়ে তিন লাখ তিন হাজার ৬১২ জনসহ মোট আট লাখ ছয় হাজার ৬৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন।
 
দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ফল প্রকাশের পর অসঙ্গতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থীরা। দৈনিকশিক্ষার অফিসে  এসেছেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী। কেউ কেউ  ইমেইল করেছেন। তারা দাবী করেছেন ৮০/৮৫ পাওয়ার কথা থাকলেও তাদেরকে ফেল দেখানো হয়েছে। 
 
মোহাম্মদ তারেকুর রহমান (রোল নং-৩১১০৩৪১৯) রোল নম্বরে পরীক্ষা দিয়ে একই রোল নম্বরে পাসের ফল এসেছে একজন নারী প্রার্থীর। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘হোয়াট ইজ দি প্রোবলেম?’
 
জাহাঙ্গীর আলম নামে একজন লিখেছেন, ৩১১০৯৯৫৬ নম্বরে ফল এসেছে শামীমা ইয়াসমিনের নামের একজনের।
 
মো. শরীফ আহমেদ (রোল নং-৩১১১২৮৪৬) পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন জিসন বড়ুয়া নামের এক প্রার্থী। 
 
মো. আবু আলম নামে একজন পোস্ট দিয়েছেন, রোল নং আমার স্ত্রীর, পাস করেছেন।ইব্রাহিম। তার স্ত্রী ৩১১০০৩১১ রোল নিয়ে বিজনেস স্ট্যাডিজে পরীক্ষা দিলে একই রোলে ফল আসে ইব্রাহীম তালুকদার নামে এক প্রার্থীর।
 
ইসমাইল হোসেন জানিয়েছেন, সবাইকে লিখিত পরীক্ষার নম্বর জানালে বোঝা যাবে কে কত নম্বর পেয়েছেন। পোস্ট নাই বলে পাস করাবে না বলে জেনেছি দৈনিকশিক্ষার প্রতিবেদনে। অবশ্যই সার্টিফিকেট দিতে হবে, পাস করলে। কিসের ভিত্তিতে পাস করানো হয়েছে!! ভিত্তিহীন কোন নিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না। সম্মিলিত মেধাতালিকা গেল কই!! একজন নাগরিক হিসাবে তথ্য জানা ও প্রাপ্তির অধিকার আমাদের আছে। আন্দোলন ছাড়া উপায় নাই। নিয়ম নীতি ছাড়া এভাবে মজা করার অধিকার এনটিআরসি’র নাই।
 
 মো. আতাহারুল ইসলাম নামের একজন বলেন, স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পরীক্ষায়-ই ফেল করিনি। ১৪তম নিবন্ধনে স্কুল, কলেজ দুই পর্যায় ফেল দেখাচ্ছে। শুনলাম যাদের উপজেলায় পোস্ট ফাঁকা নেই তাদের পাস করায়নি। তা হলে আমার প্রশ্ন হলো আমার উপজেলায় যদি পোস্ট না থাকে তাহলে কেনো আমাকে পরীক্ষার জন্য ডাকা হলো এবং আমার মতো লাখ লাখ পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭৫০ টাকা+যাতায়াত খরচ আরো ১০০০ টাকা নেওয়া হলো। এর জবাব কি এই মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠান দিতে পারবে? জানি পারবেনা। তাই জবাব চাইও না। তবে আমি অবাক যেখানে স্কুল, কলেজ দুইটাতেই ৭০+ মার্কস থাকার কথা।
 
তবে আপেল মাহমুদ নামের একজন ফলাফলে অসঙ্গতির কারণ তুলে ধরে বলেছেন, ফলাফল প্রস্তুত ছিলো অনেক দিন আগে। ফলাফল যখন প্রস্তুত ছিলো তখন ১৬৬টি রিটের রায়ের কপি তাদের হাতে পৌঁছাইনি। সে জন্যই ১৩তমের মতো উপজেলায় শূন্য পদ অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হয়। এনটিআরসিএ'র চেয়ারম্যান অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার সঙ্গী হিসাবে স্থান পাননি অনেকে। তাই চেয়ারম্যানকে অপদস্থ/হেয় করতে ফলাফলে নানা ধরনের অসঙ্গতি। তাদের নিজেদের মধ্য রেষারেষির বলি হচ্ছেন সাধারণ নিবন্ধনধারীরা।
 
যোগাযোগ করা হলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান এ. এম. এম আজহার বলেন, এমন (অসঙ্গতি) কোন বিষয় আমার কাছে রিপোর্ট করেনি, আপনার কাছে রিপোর্ট করেছে। লাখ লাখ প্রার্থী একটা-দুইটা হতে পারে। তাদেরকে আমার কাছে আসতে বলেন, আমরা অ্যাড্রেস করবো। এর বেশি বিস্তারিত বলেননি চেয়ারম্যান।
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065507888793945