শিক্ষক নিবন্ধনের মেধাতালিকায় জাল সনদধারী থাকার অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক নিবন্ধনের মেধাতালিকায় জাল সনদধারী থাকার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের মেধাতালিকায় জাল সনদধারী থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও প্রকাশিত ফলাফলে রোল নম্বর দিয়ে সার্চ করলে প্রার্থীর নাম আসছে না, কারও কারও সাবজেক্ট ভিন্ন দেখাচ্ছে, পুরুষের নামের স্থানে দেখাচ্ছে মেয়েদের নাম। ১০ জুলাই হাইকোর্টের নির্দেশে ১ম থেকে ১৩তম নিবন্ধনের ফলাফল প্রকাশ করে শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

 

অসংখ্য জাল সনদ বিতরণ, নিবন্ধন পরীক্ষা মাধ্যমে স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ দিয়ে ভুক্তভোগী চাকরি প্রার্থীরা হাইকোর্টে ১৬৬টি রিট করেন এনটিআরসিএ’র বিরুদ্ধে। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মেধাতালিকা প্রকাশের জন্য এনটিআরসিএ'কে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেন। ফল প্রকাশের পর মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে অসংখ্য জাল সনদধারী। এছাড়া অসংখ্য ভুল-ভ্রান্তি ধরা পড়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রার্থীরা।

নিবন্ধন পরীক্ষায় অসংখ্য জাল সনদ দেওয়ার অভিযোগের পর এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ সনদ যাচাই কার্যক্রম শুরু করে। যাচাই-বাছাই শেষে কয়েক হাজার জাল সনদের অস্তিত্ব পায় এনটিআরসিএ। সেই সনদের রোল নম্বর, নামসহ সব তথ্য জানিয়ে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এনটিআরসিএ’র প্রকাশ করা জাল সনদধারীদের নাম ও রোল নম্বরসহ সদস্য প্রকাশিত মেধাতালিকায় পাওয়া গেছে। 

আশরাফুল আলম, যার রোল নম্বর ৪০১২৬২৩১, তিনিও জাল সনদধারী বলে এনটিআরসিএ জানায়। অথচ তাকেও মেধাতালিকায় রাখা হয়েছে। এভাবে অসংখ্যা জাল সনদধারীকে এই মেধাতালিকায় রাখা হয়েছে। চাকরি প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, হাইকোর্টের নির্দেশে প্রকাশিত ফলাফলে জাল সনদধারীদেরকে স্থান দেওয়ার অর্থই হলো দুর্নীতি করে তাদেরকেও নিয়োগ দেওয়া হবে।

রুহুল আমিন নামে এক প্রার্থী; যার রোল নম্বর ৪০২১৬৭৮৪, তিনি কলেজ পর্যায়ের ইংরেজি বিষয়ের জাল সনদধারী। এনটিআরসিএ নিজেই গত ৩০ জানুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের ওয়েব সাইটে এই প্রার্থীকে জাল সনদধারী বলে উল্লেখ করে। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত মেধাতালিকাতেও তার স্থান হয়। একই রোল নম্বরধারী আনসারুল হক প্রকৃত সনদধারী।

বাংলাদেশ শিক্ষক নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত জাতীয় ঐক্য পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম  অভিযোগ করে বলেন, ‘ মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ নম্বর দেখা যাচ্ছে না যা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল। এছাড়া যারা জাল সনদ নিয়েছে তাদেরকেও মেধা তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে।’ এনটিআরসি’এ এক সময় ঘটা করে কিছু রোল নম্বর নামসহ প্রকাশ করে যারা জাল সনদ নিয়েছিল। সেই তাদেরই অনেককেই সদ্য প্রকাশিত মেধাতালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব? এনটিআরসিএ’র উদ্দেশ্য অসৎ। তারা এই জাল সনদধারীদের নিয়োগ দেবে বলেও মেধা তালিকায় রেখেছে। শুধু জাল সনদ নয়, এই মেধাতালিকায় অসংখ্যা ভুল তথ্য রয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে রোল নম্বর দিয়ে সার্চ করলে প্রার্থীর নাম আসছে না, কারও কারও সাবজেক্ট ভিন্ন দেখাচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা জেলার হাসিবুল ইসলাম ১ম নিবন্ধন পরীক্ষায় কলেজ পর্যায় থেকে বাংলা বিষয় পেয়েছিলেন। তার রোল নম্বর ৬৫১০১২৬। সদ্য প্রকাশিত মেধাতালিকার ফল দেখতে তিনি প্রবেশ করেন এনটিআরসিএ’র প্রকাশিত ফলাফলের ওয়েবসাইটে (http://ngi.teletalk.com.bd)। তার মেরিট পজিশন 15711 মেধা তালিকা দেখতে গিয়ে তিনি দেখেন তার নাম দেখাচ্ছে না। সেখানে লেখা আছে, ‘Exact Spelling is being collected’ ।

তিনি বলেন, ‘আমি আজ রাতেই ঢাকায় যাবো। এনটিআরসিএতে অভিযোগ দেবো। দেখি সমাধান হয় কি না। আমি তো ভাবতেই পারছি না এমনটি হবে। পরীক্ষা দিলাম, চাকরির জন্য এতদিন ধরে বসে আছি। নানারকম চড়াই-উৎরাই পার করে হাইকোর্টের মাধ্যমে একটি সুরাহার পথে যাচ্ছি অথচ মনে হচ্ছে আবারও হাইকোর্টে যেতে হবে। বহু চাকরি প্রার্থীর এমন ভুল তথ্য দেখাচ্ছে। সমাধান না হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারও আদালতে যাবো।’

মেধাতালিকায় ভুল-ভ্রান্তি ও জাল সনদধারী সব অভিযোগ অস্বীকার করে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান এ এমএম আজহার  বলেন, ‘ভুল হওয়ার কথা নয়, তবু যদি কারও চোখে ভুল ধরা পড়ে , তাহলে আমাদের তারা জানাবেন। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে এমন কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। যদি সত্যিই ভুল হয়ে থাকে তাহলে আমরা তা সংশোধন করে দেবো।’ কিন্তু জাল সনদধারীর স্থান হয়েছে মেধা তালিকায় এমন প্রশ্ন করলে তিনি অস্বীকার করে ফোন রেখে দেন।

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043900012969971