শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা কতটা যৌক্তিক? - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা কতটা যৌক্তিক?

সায়র আলমগীর আহমেদ |

সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাখাতের বহুল আলোচিত বিষয় উপজেলা পর্যায়ে একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণ। স্বাধীনতার পর মাধ্যমিক ও তদূর্ধ্ব শিক্ষা ব্যবস্থায় এত বৃহৎ পরিসরের সিদ্ধান্ত দ্বিতীয়টি নেই। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি সচেতন মহলের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে এবং বলা যায় ‘টক অব দি এডুকেশন সেক্টর’ বা নিউজ হয়ে উঠেছে। শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। এসব বিতর্ক জাতীয় গণমাধ্যমে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ ও প্রচারিতও হচ্ছে।
সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগকে কিভাবে বিতর্কিত করে তোলা যায় তার একটি নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে একটি রাজনৈতিক দল দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জনগণের কল্যাণে কিভাবে কখন কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা সেই রাজনৈতিক দলের দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। তারা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে, প্রতিশ্রুতি দেয় এবং ক্ষমতায় আসলে সেসব ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ণের চেষ্টা করে। তারই অংশ হিসেবে বর্তমান সরকার এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ তাঁদের দায়বদ্ধতা আছে দেশের কাছে, জনগণের কাছে। কিন্তু সরকারের এই উদ্যোগকে একটি মহল বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। প্রশাসনিক ও মাঠ পর্যায়ে দুভাবেই সরকারের ইমেজ নষ্টের পাঁয়তারা চলছে। প্রতাজন্ত্রের কর্মচারি হয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরে বসে সরকারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তারা। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার এখতিয়ার কোনও কর্মচারী নেই তা সবার জানা। কেন তারা সরকারের ইমেজ নষ্ট করার জন্য পাঁয়তারা করছে সেটা ভেবে দেখা জরুরী। প্রথম শ্রেণির ক্যাডার হয়ে কিভাবে সংবাদ সম্মেলন শেষে ঘুষ দেয়া হয় তা খতিয়ে দেখা জরুরী।
গত ক’দিন কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে কিছু টক-শো দেখার সুযোগ হয়েছে। এখানে ভিন্ন ভিন্নভাবে বিজ্ঞজনদের মতামত শুনেছি। এসব অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন সাবেক সচিব, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এমন কি বিসিএস শিক্ষা সমিতির শীর্ষ দুই নেতাও। কিন্তু যাদেরকে আত্তীকরণের জন্য এত বাদ-প্রতিবাদ সেই আত্তীকৃত হতে যাওয়া কোনও শিক্ষক বা তাদের সংগঠনের কোন প্রতিনিধিকে কোন আলোচনায় দেখা যায়নি। একে তো তাঁদের বিরোধীতা করা হচ্ছে তার ওপর তাদের কথা বলায়ও সুযোগ নেই। বিষয়টা কোন পর্যায়ের যুক্তিতে পড়ে বুঝতে পারলাম না।
ক’দিনের আলোচনায় এমন ব্যক্তিও এসে কথা বলেছেন যারা বেসরকারি শিক্ষকদের অনেক সমস্যা সম্পর্কে বা তাদের অবস্থান বা বক্তব্য সম্পর্কে ভালো জানেনও না। অথচ তারা বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। যাইহোক কাকে দিয়ে আলোচনা হবে সেটা চ্যালেনগুলোর নিজস্ব এখতিয়ার। তবে আলোচনাগুলো থেকে কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে এবং কিছু কথা লেখার ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখতে পারছি না।
চ্যানেলভিত্তিক আলোচনায় একটা কথা বার বার সারাংশ হয়ে এসেছে বেসরকারি কলেজ থেকে আত্তীকৃত হতে যাওয়া শিক্ষকরা ক্যাডারে আত্তীকরণের অযোগ্য- যদি তাই হয় তাহলে কি ধরে নিতে হবে দেশের সাতানব্বই ভাগ শিক্ষক অযোগ্য! (কারণ তারা সবাইতো বেসরকারি)। একটা কথা মনে রাখতে হবে দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা নেয়- সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কতজনকে অযোগ্য বলা হচ্ছে ভেবেছেন!
যদি প্রশ্ন করা হয় সরকারি কলেজের শিক্ষকরা কতগুলো শিক্ষার্থীকে পাঠদান করেন? তাদের প্রতিষ্ঠানের ফলাফল কী? তারা তো খুব যোগ্য ও মেধাবী বলে দাবী করেন! অথচ সরকারি কলেজে পাশের হার শূন্য, এমন রেকর্ড কি দেশে নাই? বেসরকারি শিক্ষক, যাদের হাতে দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থী শিক্ষা নিচ্ছে তাদেরকে আমরা অযোগ্য বলে অসম্মান করছি! কোন যুক্তিতে? আমরা আর কতো দীনতার পরিচয় দেবো!
আলোচনায় আরেকটি বিষয় বারবার বলা হয়েছে আত্তীকৃত শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে যুক্ত করলে শিক্ষায় বিপর্যয় নেমে আসবে। কারণ দেখিয়েছেন এসব শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া ঠিক নয়, তারা অযোগ্য। কেন অযোগ্য তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা তারা দিতে পারেননি। ভাঙা ভাঙা বা বিক্ষিপ্ত কিছু অভিযোগ তুলেছেন। বিষয়টা একটু ব্যাখ্যার দাবি রাখে-
আত্তীকৃত হতে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত উপজেলা পর্যায়ের সেরা প্রতিষ্ঠান (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া) এবং এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোতে এখন অনার্স এবং মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদান করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে যে শিক্ষক ইন্টারমিডিয়েট, স্নাতক (পাস), অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদান করতে পারছে, যার হাত ধরে একজন শিক্ষার্থী অনার্স-মাস্টার্স পাস করছে সে শিক্ষক কি সত্যি সত্যি অযোগ্য? তাঁদের ক্যাডারে আত্তীকৃত করলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার কোন পর্যায়ে বিপর্যয় নেমে আসবে? আর ক্যাডারের বাইরে রাখলে শিক্ষা ব্যবস্থার কী উন্নতি হবে? এ বিচার বা সিদ্ধান্তের মাপকাঠি কোন পদ্ধতিতে বের করা হল?
এবার শিক্ষকদের নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি পেছন ফিরে দেখি। উপজেলা বা অন্য কোন পর্যায়ে একজন শিক্ষক নিয়োগে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে তাঁকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন (এনটিআরসিএ) দিতে হয়। সেখানে প্রথমে এমসিকিউ (১০০ মার্কস) পরীক্ষায় পাস করতে হয় তারপর লিখিত পরীক্ষায় (১০০ মার্কস) উত্তীর্ণ হতে হয়। সর্বশেষ সংশোধিত বিধান অনুযায়ী এরপর ভাইভা অতিক্রম করতে হয়। এ পরীক্ষায় পাসের হার শতকরা পনের থেকে ত্রিশ ভাগ, যা বিসিএস-এর চেয়ে কম। তাহলে তারা অযোগ্য কিভাবে হল! এনটিআরসিএ’র সব বড় পদে প্রশাসন ও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারাই রয়েছেন। তারাই পরীক্ষা নেন। কিছুদিন আগেও এনটিআরসিএ পাস করার পরও ফের প্রতিষ্ঠানের নেয়া একটি নিয়োগ পরীক্ষায় উ্ত্তীর্ণ হওয়ার বিধান ছিলো। সেখানে নিয়োগ বোর্ডে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারাই থাকতেন। এখনও অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপারসহ প্রশাসনিক পদে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা হয় এবং ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষা ক্যাডা কর্মকর্তারাই থাকেন।

পক্ষান্তরে বিসিএস বিশেষ শিক্ষা ক্যাডারে একশ মার্কসের পরীক্ষা দিয়েও ক্যাডার হয়েছেন, ১০ শতাংশ কোটায় কোনো পরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি বি সি এস ক্যাডার হচ্ছেন, প্রদর্শক থেকে পদোন্নতি পেয়ে দশ শতাংশ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত হচ্ছেন। এছাড়াও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্যরা কীভাবে তালিকা করে চাকরি দিয়েছেন তার ইতিহাস তো গণমাধ্যমে এসেছে বারবার।
আরেকটু পেছন ফিরে দেখি এনটিআরসিএ’র পদ্ধতির আগের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি কেমন ছিল, সেখানে কিভাবে নিয়োগ হতো। সাধারণত একটি কলেজে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে কলেজে একটি লিখিত পরীক্ষা দিতে হতো তারপর একটি ভাইভা অতিক্রম করতে হতো। আর এসব প্রক্রিয়া অতিক্রম করতে একজন প্রার্থীকে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হতো। যেমন ডিগ্রি পর্যায়ের একটি কলেজের সভাপতি ছিলেন জেলা প্রশাসক তার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনী বোর্ডে থাকতেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। থাকতেন মহাপরিচালক মহোদয়ের একজন প্রতিনিধি, থাকতেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অথবা সরকারি (বিসিএস করা) কলেজের বিষয় ভিত্তিক একজন দক্ষ শিক্ষক তারপর কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়। এতজন বিশেষজ্ঞের নেয়া পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে একটি প্রার্থী নিয়োগ পেয়েছেন। সে কি করে অযোগ্য হয়? নির্বাচনী পদ্ধতিটির সম্পূর্ণ দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ প্যানেলের। তাঁরা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করেন। এতজন প-িত ব্যক্তি কি তাহলে অযোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করেছিলেন। সমালোচকরা কি তাহলে পরোক্ষভাবে বিশেষজ্ঞদের মেধা, সততার ঘাটতিকেই ইঙ্গিত করছেন না?
এমন নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ করে নির্বাচিত হয়ে দীর্ঘদিন চাকরি করার পর আজ যদি একজন শিক্ষককে শুনতে হয় সে অযোগ্য, কটুক্তি এ দুঃখ শিক্ষকটি কোথায় রাখবেন? আর যদি ধরে নিই সে অযোগ্যই, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে তাকে নিয়োগে সবচেয়ে বড় সম্মতিটি কে দিয়েছিলেন কিংবা শিক্ষকটির মেধা বা জ্ঞানের বিচার কে করেছিলেন? নিয়ো বোর্ডে থেকে সম্মানী কে নিয়েছিলেন? উত্তর কী হবে? নিশ্চয় ঐ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক যিনি সরকারি কলেজ বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিজি কর্তৃক মনোনীত ছিলেন তাহলে যদি অযোগ্য কেউ নিয়োগ পেয়ে থাকে সে দায় কি সেই প্রার্থীর ? না যারা নির্বাচন করেছিলেন তাঁদের, কারণ তাঁর বা তাঁদের স্বাক্ষর বা সম্মতিতেই তো নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। চাকরির এতদিন পর এ দায় শিক্ষক কেন বহন করবেন? অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগের জন্য দায় তো সরকারি কলেজের সেই বিষয় বিশেষজ্ঞের। যিনি আজ তারই হাতে নির্বাচিতকে অযোগ্য বলছেন, কটুক্তি করছেন, ঢালাও মন্তব্য করছেন।বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঢালাও মন্তব্য ও কটুক্তি করে চলছেন শিক্ষা ক্যাডারের কতিপয় কর্মকর্তা। ইতিমধ্যে কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষক সংগঠন বিৃবতি দিয়ে এসব কটুক্তির প্রতিবাদ করছেন। জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারভুক্তির বিরোধীতায় করা আন্দোলন কর্মসূচি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট। সারাদেশে দাবী উঠেছে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শুধু প্রশাসন ক্যাডার ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের রাখার।
আসলে কেউ অযোগ্য নয় অযোগ্য আমাদেও কলোনীযুগের মানসিকতা।
সবচেয়ে বড় কথা ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স শ্রেণিতে কোন্ যোগ্যতার শিক্ষক পাঠদান করবেন সেটা নির্বাচনের দায়িত্ব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তাঁরা যেটুকুকে যোগ্যতা মনে করেন সেটাই মূল কথা তাই দেশের বৃহত্তর স¦ার্থে ছাত্রদের কল্যাণে যে যেভাবে যে অবস্থায় নিয়োগ পেয়েছেন তাকে সে অবস্থায়ই আত্তীকরণ এবং ক্যাডারভুক্ত করা নৈতিকতা। এবং পূর্বে এভাবেই আত্তীকরণ এবং ক্যাডারভুক্ত হয়েছে।
তবে হ্যাঁ বিসিএস শিক্ষকরা নিজেদের অধিক পরিশ্রমের বিষয়টি দাবি করে তারা আত্তীকৃতদের চেয়ে বেশি প্রোটেকশন চাইতে পারেন, কিন্তু নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে অন্যের পথে নিশ্চয়ই কাঁটা বিছাতে পারেন না, কটুক্তি করতে পারেন না। অন্যের পথ রুদ্ধ করা এক ধরণের অন্যায়।
একটি প্রাসঙ্গিক গল্প দিয়ে শেষ করি- সাগর (ছদ্মনাম) ও পাভেল (ছদ্মনাম) দুই বন্ধু। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে পড়াশুনা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাগর বিষয়ভিত্তিক পড়াশুনা, জ্ঞান ও বিবেচনায় পাভেলের চেয়ে অনেক ভালো ছিল, রেজাল্ট বিবেচনায়ও সাগরের স্থান প্রথম সারিতে। মাস্টার্স শেষ করার পর দু’জনই বিসিএস পরীক্ষা দিল কিন্তু দুর্ভাগ্য শাওন তার বিষয়ে পাভেলের চেয়ে অনেক মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও বিসিএস পরীক্ষায় নির্বাচিত হল না। অপরদিকে নিজের মাদার সাবজেক্টে অপেক্ষাকৃত সাধারণ মানের হওয়ার পরও পাভেল বিসিএসে গড়পড়তায় কোয়ালিফাই করে ফেলে এবং কোটায় সরকারি কলেজের শিক্ষক হয়। দুর্ভাগ্যের শিকার সাগর একটি বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করে। এখানে সে তার মাদার সাবজেক্টে পড়ায় এবং ভালো শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। এখন পাঠক এবং সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের কাছে আমার প্রশ্ন শাওন কি বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক বিবেচনায় অযোগ্য? যদি না হয়, তাহলে সে কেন শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভূক্ত হতে পারবে না? অনেক মেধাবী ছাত্র নানা কারণে বিসিএস দিতে পারে না বা কোন অনাকাক্সিক্ষত কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী হয়তো বিসিএস পরীক্ষায় দুর্ভাগ্যের শিকার হয় তার মানে এই নয় যে সে অযোগ্য! যা কতিপয় যোগ্য দাবিদাররা বলছেন। একজন শিক্ষকের তো বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানে দক্ষতা থাকলেই হয়।
আসলে কোন শিক্ষকই অযোগ্য, অদক্ষ নয়। একটা অজুহাতের দোহাই দিয়ে একটি বিষয়কে বিতর্কিত করে তোলা সৌজন্যতায় পড়ে না। সরকারি হতে যাওয়া উপজেলা পর্যায়ের কোন প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষকই সরকারি শিক্ষকের চেয়ে বিষয় ভিত্তিক জ্ঞানে, দক্ষতায় খুব একটা পিছিয়ে নেই (কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে- এবং এটা সব স্থান বা প্রতিষ্ঠানেই আছে, শিক্ষা ক্যাডারেও আছে) এই বিশ্বাসটা ধারণ করতে অসুবিধা কোথায়?
বিষয়টাকে সবাই সম্মানের সাথে বিবেচনায় নিবেন আশা করি। বিষয়টা নিয়ে অহেতুক বিতর্কের শেষ হওয়া দরকার। কেউ ছোট নয়, মানুষ যেমন সবাই সমান, শিক্ষকরাও সবাই সমান কারণ তারা সবাই শিক্ষার্থীদেরই তৈরি করেন তাই সবাই ক্যাডার হবেন।

সায়র আলমগীর আহমেদ: সহকারি অধ্যাপক, মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074059963226318