তার কোনো সন্তানই স্কুল-কলেজে পড়ে না। অভিভাবক ফোরামের ব্যানারের প্রতারণা, শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত থাকার দায়ে ‘অভিভাবক ফোরামের নিবন্ধন বাতিল করেছে সরকার। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর কর্তৃক অভিভাবক ফোরামের নিবন্ধন বাতিল ও কার্যক্রমের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার বাতিলের যাবতীয় কাগজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা অধিদপ্তর ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে জমা দিয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ এবং মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষরা।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, সেই নিষিদ্ধ ঘোষিত অভিভাবক ফোরাম ফেসবুক ও ইমেইলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠায়। এই ফোরামের কথিত সভাপতির বিরুদ্ধে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনাকে কটূক্তি, হিজাব ও বোরখা নিয়ে সাম্প্রদায়িক ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার দায়ে চারটি মামলা চলমান। নিষিদ্ধ অভিভাবক ফোরাম ও কয়েকজন নামধারী সাংবাদিক টিউশন ফি নিয়ে উসকানিমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেই চলছে।
শিক্ষকদের মতে, করোনায় টিউশন ফি আদায় গড়ে ৭০ শতাংশ কমে গেছে। সামর্থ্য আছে এমন অভিভাবকরাও ফি পরিশোধ করছেন না। এ কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা অনিয়মিত হয়ে গেছে। এ অবস্থায় নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে পারছে না অনেক প্রতিষ্ঠান।
আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বলেন, ‘শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও অন্যান্য অভিযোগে অভিভাবক ফোরামের নিবন্ধন বাতিল করেছে সরকার । তবুও অভিভাবক ফোরামের টাউট নেতারা বিবৃতি দিয়ে চলছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেছেন, একজন ড্রাইভার দাবি করছেন তিনি ভিকারুননিসার অভিভাবকদের নিবন্ধিত সংগঠনের সভাপতি। প্রায় ২৬ হাজার অভিভাবকের মধ্যে শিক্ষিত ও মার্জিত কেউ ছিলেন না যিনি সভাপতি হতে পারতেন। এই নিবন্ধন কিভাবে পেল তা খতিয়ে দেখার আ্হ্বান জানান সাংবাদিকদের।
আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, আমাদের স্কুলেরই একজন শিক্ষক বাদী হয়ে গতবছর ডিজিটাল নিরপত্তা আইনে মামলা করেছে অভিভাক ফোরামের দুলুর বিরুদ্ধে। দুলুকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। কিন্তু অনেক পত্রিকাই দুলুর গ্রেফতারের খবর প্রকাশ করেনি। কিন্তু নিষিদ্ধ ফোরামের বিবৃতি প্রকাশ করে। সেসব বিবৃতি শুধুই শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিষোদগার সূচক।
মতিঝিল মডেলের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, কোচিং সেন্টার ও টিউশনি করা শিক্ষকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নিতো অভিভাবক ফোরামের নেতারা। কেউ টাকা কম দিলেই তার নাম বিবৃতির মধ্যে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর হুমকি দেয়া হতো।
একটি কোচিং সেন্টারের মালিক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, যিনি অভিভাবক ফোরামের সভাপতি দাবি করেন আর কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় কথা বলেন তার দু্ই সন্তানকেই আমাদের কোচিং সেন্টারে ফাও পড়াতে হয়েছে। অথচ তিনিই আবার আমাদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন। আদালতে রিট করেন। ফাও পড়ানোর তথ্য সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করায় টেলিফোনে হুমকিও দিয়েছে নিষিদ্ধ অভিভাবক ফোরামের দুলু।