ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের একটি নিয়োগ জটিলতায় হামলাটি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। শিক্ষককে মারধরের প্রতিবাদে শনিবার(৫ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছে। বিভিন্ন শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বিকেলে এক প্রতিবাদ সভা করে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন।
উপজেলার উচাখিলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ আবদুল হালিম। তিনি বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বেও রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ঈশ্বরগঞ্জ থেকে উচাখিলার যাওয়ার পথে ঈশ্বরগঞ্জ-উচাখিলা সড়কের ঘোষ বাড়ির সামনে যেতেই সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে কয়েক যুবক। মোটরসাইকেলটি থামাতেই অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল হালিমের ওপর আঘাত শুরু করে যুবক দলটি। পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় অধ্যক্ষকে। ওই সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসায় এবং পথচারীরা অধ্যক্ষকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, গত জুনে প্রতিষ্ঠানে একজন এমএলএসএস নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে নিয়োগ পেতে আবেদন করেছিলেন উচাখিলা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে আমান উল্লাহ। কিন্তু সে নিয়োগ পায়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে মামলাও করে। ওই মামলাটি চলমান রয়েছে। তিনি আরও জানান, তাকে রাস্তায় গতিরোধ করা আক্রমণকারীদের মধ্যে আমান উল্লাহকে চিনতে পেরেছেন। নিয়োগ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকেই তার ওপর হামলা করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে আমান উল্লাহ এলাকায় নেই।
অধ্যক্ষের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল উচাখিলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা পাঠদান বর্জন করে প্রতিষ্ঠান চত্বরে মানববন্ধন করেছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য পাঠদান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে শনিবার বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্বেশ্বরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা প্রতিবাদ সভা করেন। সভায় অধ্যক্ষ আবদুল হালিমের ওপর হামলার কঠোর বিচার দাবি করেন প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা। সেই সঙ্গে ঘটনাটি নিয়ে থানায় মামলা করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সোমবার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুলতান উদ্দিন বলেন, শিক্ষকের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনার তারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান। এই দাবিতে সোমবার মানববন্ধন কর্মসূচি দিয়েছেন। এ ঘটনার বিচার না হওয়ার পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।