শিক্ষকদের দীর্ঘ ছুটি - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকদের দীর্ঘ ছুটি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষার জন্য দীর্ঘ ছুটি লইয়া থাকেন। নিয়মে আছে। এই নিয়মটির পিছনেও রহিয়াছে একটি মহত্ চিন্তা। শিক্ষকরা শিক্ষায় যত সমৃদ্ধ হইবেন, পাঠদানও হইবে তত সমৃদ্ধ। দ্বিতীয়ত, একজন শিক্ষক তাহার বিষয়সম্পর্কিত বিশেষ বিষয়ে অভিসন্দর্ভ করিলে তাহা নিঃসন্দেহে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণে সহায়তা করিয়া থাকে; কিন্তু বাস্তবে শিক্ষকদের ছুটির যে চিত্র আমরা দেখিয়া থাকি, তাহা এক নিদারুণ হতাশার কারণ হইয়া দাঁড়ায়। বহুকাল ধরিয়া আমরা দেখিতেছি, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষক এক, দুই অথবা তিন বৎসর ধরিয়া ছুটিতে রহিয়াছেন। সরকারের বেতন ও সুবিধাও ভোগ করিতেছেন; কিন্তু তাহাদের অনেকেই সত্যিকারের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যুক্ত নাই। আবার কেহ কেহ উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বের বড়ো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হইয়া, ডিগ্রি অর্জন করিয়া অতঃপর সেইখানেই থাকিয়া যাইতেছেন; কিন্তু মধ্যখানে যেই দুই বা তিন বৎসর তিনি ছুটি কাটাইয়াছেন, সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় হইতে তিনি বেতনভাতা গ্রহণ করিয়াছেন। ইহা ছাড়া আরো একটি বিষয় লক্ষ করা যায়, শিক্ষকরা সাত বৎসর পর্যন্ত ছুটি লইতে পারেন। এই নিয়মাধীন সুবিধা লইয়া কেহ কেহ অন্যত্র শিক্ষকতা অথবা পরামর্শক অথবা অন্য কোনো পেশায় নিয়োজিত থাকেন। রোববার (১২ ডিসেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, সমস্যার আরেকটি দিক হইল, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কতজন শিক্ষক একই সময়ে দীর্ঘ ছুটি কাটাইতে পারেন, তাহা লইয়া কোনো নীতিমালা নাই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথা উপাচার্যগণ শিক্ষকদের যথেচ্ছা ছুটির অনুমোদন দিয়া থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হিসাব অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ হাজার ৫৫৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ হাজার ১৪৪ জন রহিয়াছেন শিক্ষাছুটিতে। ইহা ছাড়াও বেশ কিছু শিক্ষক প্রেষণে এবং অননুমোদিত ছুটিতে রহিয়াছেন। এমনকি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩০ শিক্ষকের মধ্যে ৩৫ জন এবং অন্য আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০৪ শিক্ষকের মধ্যে ৭৫ জনই রহিয়াছেন এই দীর্ঘকালীন ছুটিতে। ইহা কি অস্বাভাবিক নহে? অভিযোগ রহিয়াছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো কোনো শিক্ষককে বিশেষ প্রভাবের কারণেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছুটি দিতে বাধ্য হন।

একজন শিক্ষক কেবল পুস্তক হইতেই শিক্ষা দেন না। তিনি একজন অনুকরণীয়, অনুসরণীয় মানুষ। তাহার নিকট মানুষ মানবিক, নৈতিক ও আদর্শিক শিক্ষাও লাভ করিয়া থাকে। স্বভাবতই আমরা শিক্ষকদের নিকট সর্বাধিক নৈতিকতা আশা করি। বিশেষ করিয়া কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে তো বটেই। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই চিত্র মোটেই ভালো খবর নহে। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বিষয়টি লইয়া একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ছুটি সংক্রান্ত সুস্পষ্ট একটি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন, যাহা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলি অনুসরণ করিবে। ইহার সহিত শিক্ষকদেরও নিজের সুবিধা ও অধিকারের পাশাপাশি শিক্ষাদানের একটি প্রবণতাও থাকিতে হইবে। কারণ, আমরা জানি শিক্ষাদান কেবল একটি পেশা নহে, ইহা মানুষের প্রতি, দেশের প্রতি একটি প্রতিশ্রুতিও।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059659481048584