মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সাহেব আলী খান মহিলা মাদরাসার শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পান না। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। বর্তমানে কোনো পৃষ্ঠপোষক না থাকায় মাদরাসাটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এটি রক্ষায় সরকারিকরণের আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ঘিওরের কুস্তা গ্রামের লন্ডনপ্রবাসী প্রয়াত ডা. আব্দুর রহিম খান ২০০৪ সালে উপজেলা সদরে ১৩০ একর জমির ওপর এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষকদের বেতনসহ সব ধরনের আর্থিক সহযোগিতা তিনিই করতেন। প্রতিষ্ঠানে পাশের হার ছিল শতভাগ।
অল্প দিনেই এলাকায় এই মাদরাসার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ডা. আব্দুর রহিম খান মারা যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কোনো পৃষ্ঠপোষক এগিয়ে এলে প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। তা না হলে বন্ধ হয়ে যাবে এই প্রতিষ্ঠান। মাদ্রাসাটি জাতীয়করণ করা হলেও এটি রক্ষা পাবে, শিক্ষকেরা বেতন-ভাতাসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
বর্তমানে ঐ মাদরাসায় দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষকের সংখ্যা বর্তমানে ১৪ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আছেন দুজন। জানা যায়, চলতি বছরেও প্রতিষ্ঠানটি থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করে। মাদরাসাটিতে উপবৃত্তিরও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত বেঞ্চ, চেয়ার নেই। দরজা-জানালাগুলো ভাঙা অবস্থায় কোনোমতে টিকে আছে।
মাদরাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এ কে এম সারোয়ার কিরন খান জানালেন, মাদারাসর প্রতিষ্ঠাতা ডা. আব্দুর রহিম খান মারা যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে খুবই হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করার ব্যাপারে তিনি শিক্ষামন্ত্রীসহ প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ বি হান্নান জানান, সাহেব আলী খান মহিলা দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরই ভালো ফল করছে। প্রতিষ্ঠানটির পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা আছে এবং অন্যান্য অবকাঠামোও রয়েছে। সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সহযোগিতায় মাদরাসার জন্য একটি ভবনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাদরাসা জাতীয়করণ করে এই প্রতিষ্ঠান রক্ষা অর্থাৎ শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।