প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে উন্নয়নের বর্তমান ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার স্বার্থে আগামী নির্বাচনে জয়লাভের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই, যাতে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চলমান গতি বজায় থাকে এবং আমাদের শুরু করা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো শেষ করা যায়। কারণ, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না পারার কারণে আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল।’
আমরা শিক্ষানীতি তৈরি করি। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থা করেছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। এজন্য শিক্ষকদের নজর দিতে হবে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। শনিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার শিক্ষার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষকদের সকল দাবি দাওয়া মেনে নিয়েছি। শিক্ষককরা কিভাবে ভালো থাকবেন তাদের সে সুযোগ সুবিধা করে দিয়েছি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রমে আরো গুরুত্ব দেয়ার জন্য আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা মানুষের মধ্যে শিক্ষার আগ্রহ বাড়াতে কাজ করেছি। দেশের প্রতিটি অর্জনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রয়েছে। জাতির পিতা শিক্ষাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি শিক্ষার মাধ্যমে জাতিকে উন্নত করতে চেয়েছিলেন। তিনিই শিক্ষাকে অবৈতনিক ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি বলেন, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরির যে যুগোপোযোগী সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি এই একটি সিদ্ধান্ত সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূতির্কে উজ্জ্বল করেছে। অবশ্য পদ্মাসেতুর কারণে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে অনেক অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তবুও মাথা নত করিনি। কারণ বাবার কাছে শিখেছি অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করতে।বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছি। ২১০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ডেল্টা প্লান করে দিয়েছি। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এ দেশ এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা গবেষণায় গুরুত্ব দিয়েছি বলেই ধান উৎপাদন, শাকসবজি উৎপাদন, মাছ উৎপাদন, ফলমূল উৎপাদনে উন্নত বিশ্বের কাতারে রয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যাতে ঠেকে না থাকে সে কারণে প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষায়ও আমরা বৃত্তির ব্যবস্থা করেছি। সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছি। ১ কোটি ৪০ লাখ শিশুকে প্রাথমিকে বৃত্তি দিচ্ছি। শিক্ষাবৃত্তির টাকা যাতে বেহাত না হতে পারে সে জন্য শিক্ষার্থীর মায়েদের মোবাইল নম্বরে টাকা পাঠানো হয়। পাহাড়ি ও হাওড় অঞ্চলের শিশুদের জন্য টিফিনের ব্যবস্থাও আমরা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরাই প্রথম বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা শুরু করি। আমরা এর সুফলও দ্রুত পেয়েছি। লবণাক্ত, জলমগ্ন, খরা সহ্য করতে পারে এমন ধান আবিষ্কার করার ফলেই আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আরো বেশি করে গবেষণার তাগিদ দেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবায়েতুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।