শিক্ষকরা যখন পরাজিত হন - Dainikshiksha

যুক্ত বিবৃতিশিক্ষকরা যখন পরাজিত হন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে পর্যবেক্ষণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষকের শাস্তি দাবির বিষয়ে প্রভোস্ট কমিটির প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শিক্ষক। যুক্ত বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রভোস্ট কমিটির যেসব শিক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আট শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন, তাদের হলে নির্বাচনের অনিয়ম বন্ধে তারাই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের বক্তব্যেই ডাকসু নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের বিষয়টি জনপরিসরে আরও স্পষ্ট হয়েছে। ক্ষমতার দম্ভ থেকে এহেন আচরণ ক্ষমতাসীন শিক্ষকদের কেবল পরাজিতই করে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ওই শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।

'শিক্ষকরা যখন পরাজিত হন' শিরোনামের বিবৃতিতে ৫০ জন শিক্ষক বলেন, ১৯৭৩-এর আদেশের বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষকের প্রক্টোরিয়াল ক্ষমতা আছে এবং তা তিনি প্রয়োগ করার অধিকার রাখেন। কাজেই আট শিক্ষকের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অধিকার আছে এবং জনগণকে তা জানানোর অধিকারও আছে। এ ছাড়া চিফ রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে তারা পর্যবেক্ষণের মৌখিক অনুমতিও পেয়েছিলেন। এক্ষেত্রে তারা অননুমোদিত কোনো কাজ করেননি। যারা ভোট চুরি করলেন এবং চুরি করতে সাহায্য করলেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ও শিক্ষকদের ভাবমূর্তির যে ক্ষতি করলেন, তা পঞ্চাশ বছর পরও জাতি মনে রাখবে। কাজেই আট শিক্ষক পর্যবেক্ষণ করে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেননি, ভাবমূর্তি আগেই ক্ষুণ্ণ হয়েছিল। অনিয়মের কথা গণমাধ্যমে জানিয়ে তারা বরং প্রশাসনের পক্ষেই কাজ করেছিলেন। তাদের পর্যবেক্ষণ আমলে নিলে পরবর্তী সময়ে প্রশাসনেরই লাভ হতো, সম্মান কিছুটা ফিরত।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনিয়ম যারা করলেন ও প্রশ্রয় দিলেন সেসব শিক্ষকের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে যারা তা প্রত্যক্ষ করেছেন, সত্যানুসন্ধান শেষে সেই সত্যকে মানুষের কাছে নিয়ে এসেছেন, তাদের শাস্তির দাবি করল প্রভোস্ট কমিটি। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য এই আট শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ রকম দাবি তোলার মধ্য দিয়ে প্রভোস্ট কমিটি তাদের ব্যক্তিস্বার্থ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকেন্দ্রিক দলীয় আনুগত্যকে আরও নগ্নভাবে প্রকাশ করল। এ প্রভোস্টদেরই অনেকে নির্বাচনের দিন তাদের হলে অনিয়ম বন্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা মনে করি, এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও এর বিরুদ্ধে নিন্দা জানাই। ক্ষমতার দম্ভ থেকে করা এহেন আচরণ ক্ষমতাসীন শিক্ষকদের কেবল পরাজিতই করে।

স্বতঃপ্রণোদিত স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষকদের শাস্তি দাবি করে এই প্রভোস্টরা নিজেদের নৈতিক দেউলিয়াপনা ও ভিন্নমতের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন। তাদের মানতে হবে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্নমত সব সময়ই ছিল ও থাকবে এবং এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য। ভিন্নমতের সহকর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে হুমকি দিয়েছেন, তার জন্য তাদের ধিক্কার জানাই। অবিলম্বে প্রশাসন এ আট শিক্ষকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করবে, সেই দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নৈতিক পরাজয়ের জের বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও বহু বছর টানতে হবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী ৫০ শিক্ষকের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নেহাল করিম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক আলী রিয়াজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আকমল হোসেন, অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক তৈয়েবুর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াকিলুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ। আরও রয়েছেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আর রাজী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মামুন হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামিনা লুৎফা, মুনাসির কামাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণা মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রায়হান রাইন, সুমন সাজ্জাদ, হিমেল বরকত, স্বাধীন সেন, খন্দকার হালিমা আক্তার রিবন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুল আরেফিন প্রমুখ। 

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069119930267334