শিক্ষকের চারিত্রিক ব্যাকরণ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকের চারিত্রিক ব্যাকরণ

মোস্তাফিজুর রহমান শামীম |

ইংরেজিতে কথা আছে- ‘When money is lost, nothing is lost. When health is lost, something is lost. When character is lost, everything is lost.’ এ কথা থেকে স্পষ্ট যে অর্থ সম্পদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো চরিত্র। যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠন করার কথা তাদের চরিত্রই এখন বিচিত্র। শিক্ষক নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষা দেন যে জীবন নিয়মের সুতায় বোনা।

কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু নামধারী লম্পট শিক্ষক আজ অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। এদের কারণে প্রকৃত শিক্ষকরা তাদের সামাজিক মর্যাদা হারাচ্ছেন। এসব শিক্ষকদের মনযোগ এখন আর শিক্ষাদানের দিকে নয়, কুরুচিপূর্ণ কার্যকলাপের দিকে। স্কুলশিক্ষক বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেও শিক্ষকতা পেশা বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষকের আদর্শ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। নীতি আর নৈতিকতার মুখোশে মুখ ঢেকে কিছু কু-শিক্ষকের কৃর্তিকলাপ যখন প্রতিদিনের খবরের পাতায় প্রকাশ পাচ্ছে তখন লজ্জায় নিজের মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে। মাদ্রাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যৌন হয়রানি আজ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। থেমে নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কুশিক্ষকেরাও। আর এসব  শিক্ষকরূপী পশুদের কুদৃষ্টির প্রভাব পড়ছে গোটা শিক্ষক সমাজের ওপর। সাম্প্রতিক আলোচিত নুসরাত খুনের ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার শিক্ষকতো সবাই কুশিক্ষক নন। অথচ ফল ভোগ করতে হচ্ছে মাদ্রাসার সব শিক্ষককে।

একটা সময় শিক্ষকতা সমাজের সর্বোপরি মর্যাদাপূর্ণ পেশা ছিল। যে মর্যাদায় এখন পচন ধরেছে। আমাদের সমাজে এখনও অনেক সৎ ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক আছেন। যারা প্রতিনিয়ত অপমান বোধ করছেন কু-শিক্ষকদের অনৈতিক কার্যকলাপে। এখনও সময় আছে পরিবর্তন করার। শিক্ষকতা পেশাকে কেউ যেন কলুষিত করতে না পারে সেদিকে সচেতন নাগরিকের দৃষ্টি দেয়া আবশ্যক। অভিভাবকদের অধিক সচেতন হওয়া উচিত। শিক্ষক শুধু মানুষ গড়ার কারিগরই নন, সমাজ গড়ারও কারিগর। এজন্যই এসব কুশিক্ষকের কুকৃর্তির ফলে গোটা সমাজের চেহারা বদলে যেতে বসেছে। কুশিক্ষকদের সমাজ থেকে বের করে দেওয়া এখন সময়ের দাবী। এই কুশিক্ষকের কুশিক্ষা গ্রহণ করে একজন ছেলে শিক্ষার্থীও লম্পট, ইভ-টিজাররূপে সমাজে নিজেকে উপস্থাপন করছে। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে।  

পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষার প্রসার বৃদ্ধি আজ অতিপ্রয়োজনীয়। কিন্তু শিক্ষকদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার ক্ষেত্রে কি করণীয় আছে?! বেশিরভাগ শিক্ষকের মধ্যেই শেখার চেয়ে শেখানোর প্রবণতা বেশি। শিক্ষকদের বিকৃত চরিত্রের পেছনে লোভ-লালসা একটি অন্যতম কারণ। এমন মানসিকতাই বিবেককে কলুষিত করে। শিক্ষক যদি তার মুল্যবোধ নিয়ে চলতে না পারে তবে এ দায় কার?  নৈতিক শিক্ষার প্রকৃত স্থান পরিবার। পরিবারের সবার দায়বদ্ধতা রয়েছে নৈতিক শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে।  আমাদের মনে রাখতে হবে আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের শিক্ষক। 

শিক্ষকতা একটি মহৎ পেশা। এ পেশাকে যারা কলুষিত করতে চাইছে তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে সমাজ থেকে বিতারিত করাই অন্যতম সমাধান হতে পারে। কঠিন আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। সম্ভব হবেনা শুধু কুশিক্ষকদের চরিত্রের পরিবর্তন ঘটানো। কারন এ ধরনের মানুষ নিজের স্বত্ত্বাকে পরিবর্তন করতে পারে না। যার চরিত্র নষ্ট তার তো জীবনই নষ্ট।   

লেখকঃ শিক্ষক ও কলামিস্ট

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036568641662598