অবশেষে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগের ফল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়। সাত বছর ধরে ঝুলে ছিলো এই পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ।
জানা গেছে, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে এক হাজার ৯৬৫ জন কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয় একই বছরেই। কিন্তু পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠে, প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অধিদপ্তরের একটি সিন্ডিকেট এই টাকা সংগ্রহ করে। অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাকেও দায়ী করা হয়। কিন্তু এসব অভিযোগ উপেক্ষা করে অধিদপ্তর। নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু অভিযোগ আমলে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়।
পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর এই নিয়োগ নিয়ে একাধিক চিঠি চালাচালি করে। তখন নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এভাবে চার বছর পার হয়ে যায়। এরপর ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে নতুন করে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই পরীক্ষার মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের ফল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু দেড় বছর পার হলেও চতুর্থ শ্রেণির ৯৮৭ জন কর্মচারী নিয়োগের ফল দিতে পারেনি শিক্ষা বিভাগ। জানা যায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা ৯৮৭ পদ বাদেই গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২২০১ পদ ফাঁকা রয়েছে। পদ শূন্য থাকায় স্কুল ও কলেজে দাপ্তরিক ভোগান্তি হচ্ছে।
অধিদপ্তর জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেন। সেখানে বলা হয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে নো ওয়ার্ক নো পে’র ভিত্তিতে স্কুল-কলেজে কর্মরত কর্মচারীদের ৪৮টি রিট মামলা বিচারাধীন আছে। যাতে রিট পিটিশনার ২২০২ জন। একটি মামলার রায়ে সুপ্রীম কোর্ট উভয়পক্ষকে আপীল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বহাল রাখার আদেশ প্রদান করেছিল। আমাদের পক্ষ থেকে দ্রুত মামলার শুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে অনুরোধ করা হয়েছিল। এই ৯৮৭টি পদ ছাড়াও বর্তমানে আরও ২২০১টি পদ শূন্য আছে।
এই চিঠির প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১৮ মার্চ আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। সেখানে বলা আছে, রিট পিটিশনারদের সংখ্যা যেহেতু ২২০২ জন। আর যেহেতু ৯৮৭টি পদ বাদেও ২২০১টি পদ শূন্য রয়েছে। তাই ৯৮৭ পদে নিয়োগ প্রদানসহ অন্য পদেও নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করা যাবে কিনা সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল।