শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দুদক কর্মকর্তার ঘুষ দাবির কথোপকথন - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দুদক কর্মকর্তার ঘুষ দাবির কথোপকথন

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শিক্ষা কর্মকর্তা : আপনি বলছেন আমার সঙ্গে আলোচনা করবেন।

দুদক কর্মকর্তা : না না, আমি বলেছি, আপনারা গিয়ে আলোচনা করে আমাদের জানান। ওই দিন স্যারের সামনেই তো বলল, এরা এক এক করে দিবে। আমি বললাম, এগুলো দিয়ে সম্ভব হবে না। এরপর আপনার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা কী হয়েছে, আমি তো জানি না। মঙ্গলবার (১১ জুন) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

শিক্ষা কর্মকর্তা : আমি কর্মকর্তাদের বলেছিলাম, এর মধ্যে সহকারী প্রগ্রামার জিয়াউর রহমান এক টাকাও দিবে না। আমার যা হওয়ার হবে। আমার এত টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য নাই। আমি বলেছি, কষ্ট করে হলেও সাত্তার সাহেবকে এক (এক লাখ) করে দিতে পারব আর এনামুল সাহেবকে না হয় কিছু খুশি করে দিব।

দুদক কর্মকর্তা : এইসব বললে তো হবে না, কাজটা তো একার নয়, অনেক কিছুই দেখতে হবে। দুইটা মামলার আলাদা পার্ট। দুই মামলার রিপোর্ট দিতে হলে এসব দিয়ে হবে না।

শিক্ষা কর্মকর্তা : দেখুন, মাঝখানে সাত্তার সাহেবের বাসায় আমি গিয়েছিলাম। সেদিন তো সাত্তার সাহেব এক কোটি ২৫ লাখ দাবি করেছিল। পারহেড ২৫ লাখ টাকা করে দাবির কথা শুনে আমি আর কিছুই বলতে পারি নাই। আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি বিক্রি করলেও সেই টাকা সাত্তার সাহেবকে দিতে পারব না।

দুদক কর্মকর্তা : এখন যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিন।

শিক্ষা কর্মকর্তা : এখন আপনি তো সাত্তার সাহেবের পক্ষে এসেছেন, উনার কনসার্ন নিয়েই এসেছেন।

দুদক কর্মকর্তা : হ্যাঁ, অবশ্যই। আর আপনাদের যেদিন ডাকলাম, তার আগের দিন আমি বললাম এক কোটির কথা। সেদিন আপনার কিছু কমাইয়া-টমাইয়া কিছু বলতে পারতেন। সে (আব্দুস সাত্তার) যতটুকু নামছে, তার থেকেও কিছু বাদটাত দিয়া কমাইয়া। যা-ই হোক, ফিফটির নিচে তো কমানো যাইবো না।

শিক্ষা কর্মকর্তা : আর একটা জিনিস, অব দ্য রেকর্ড জানতে চাই, আপনারা নাকি ড. সাধন কুমার বিশ্বাস বাবুর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নিয়েছেন। তাহলে আমাদের কাছে এত চাচ্ছেন কেন? কসম খেয়ে বলছি, আমাদের পাঁচজনের একজনও পাঁচ পয়সার লাভবান হয়নি। বিশ্বাস করলে করতে পারেন, না করলেও করতে পারেন।

দুদক কর্মকর্তা : দেখুন, দুর্নীতির সব কিছুই আপনাদের লোকদের কাছ থেকেই জানি আমরা। দেখুন, এই যে আপনাদের ইএমআইএস সেলের জামিলুর রহমান সাহেব গাড়ি কিনছেন।

শিক্ষা কর্মকর্তা : একজন সরকারি অফিসার ১০ বছর চাকরি করলে পুরনো গাড়ি কেনা বিষয় না।

দুদক কর্মকর্তা : যা-ই হোক, স্যার যতটুকু কমাইছে তার চেয়ে নাইমা আরো কমাইয়া গেলাম, যা বলার আপনি আলোচনা করে বলে দেন। সময় খুবই কম।

শিক্ষা কর্মকর্তা : আপনি আমাকে একটা আইডিয়া দিয়ে যান। কতটুকুর মধ্যে সম্ভব। এটা ধরেই তাদের সঙ্গে কথা বলব।

দুদক কর্মকর্তা : আমি লাস্ট ধরে দিলাম ৫০ (লাখ)।

শিক্ষা কর্মকর্তা : সেদিনই তো আপনি এটা বলেছিলেন।

দুদক কর্মকর্তা : আমি সেদিন বলেছিলাম ফিফটির নিচে হবে না। তবে স্যারের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কিছু হবে না। এখনো স্যার ফিফটিতে রাজি না। তার পরও স্যারকে বলেছি, ফিফটির মতো হইলে তারা আগাইবো। এমন একটা আভাস পাইছি। স্যারকে বলছিলাম, আমার কথায় তারা আভাস পাইছে। আর এখন যদি করেন এটা ইমিডিয়েট করতে হইবো। দেরি করা যাবে না।

শিক্ষা কর্মকর্তা : এটা যে করা সম্ভব নয়। আমাদের এক (লাখ) করে ম্যানেজ করতেই সাত দিন করে সময় দিতে হবে।

দুদক কর্মকর্তা : হিসাবে মিললে সময় তো কিছু এদিক-সেদিক হতেই পারে। ১০ করে দিলেই তো ৫০ লাখ হয়ে যায়।

শিক্ষা কর্মকর্তা : ১০ করে আমাদের কারো পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়। এর চেয়ে জেল খাটা অনেক ভালো, চার্জশিট দিয়ে দেন, জেলে যাই। জেলটেল খেটে আসি।

দুদক কর্মকর্তা : জেল যে হবে, এটার কোনো গ্যারান্টি আছে?

শিক্ষা কর্মকর্তা : আমাদের তো একটা লিমিট আছে, সেটা তো বলেছি। আমরা নিজেদের মধ্যে অনেক আলোচনা করেছি। আপনি যে বলেছেন, এটা সম্ভব নয়।

দুদক কর্মকর্তা : এটা কি আপনাদের চূড়ান্ত কথা? তাহলে এর ওপরে আপনাদের সম্ভব নয়, এটাই তো বলে দিব, নাকি? স্যারকে বলি, এটা তাঁদের চূড়ান্ত কথা, এর ওপরে তারা দিবে না।

শিক্ষা কর্মকর্তা : আরো একটি কথা বলে রাখি, এর মধ্যে রফিক নামের কর্মকর্তা, তিনি টাকা দিবেন না, দোনোমনো করছেন। ওঁর দায়ভার আমাদের ঘারে দিবেন না।

দুদক কর্মকর্তা : ঠিক আছে, .... দিয়ে তদবির করলে কি কাজ হবে? যাকে দিয়েই তদবির করুক না কেন। যা-ই হোক, বিষয়টি স্যারের সঙ্গে আলোচনা করেই জানিয়ে দিব আপনাকে। 

শিক্ষা কর্মকর্তা : আপনি আমাদের ওপর একটু সদয় হোন। আমি ব্যক্তিজীবনে খুবই কম মিথ্যা বলি।

দুদক কর্মকর্তা : ঠিক আছে, আমি স্যারকে বিষয়টি জানাব।

শিক্ষা কর্মকর্তা : আপনি যেটা দাবি করেছেন সেটা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036470890045166