বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সাক্ষরতা প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় ১৮ হাজার নিরক্ষর মানুষের শিক্ষাদানে নিয়োজিত ৬০০ শিক্ষক সম্মানির পাওনা টাকার জন্য ঘুরছেন মাসের পর মাস। কাজ পরিবীক্ষণেও রয়েছে দুর্বলতা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নিরক্ষরদের মৌলিক সাক্ষরতা ও জীবন দক্ষতা দেয়ার জন্য নিজস্ব অর্থায়নে ২৫০টি উপজেলায় এই প্রকল্প গ্রহণ করে।
চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্ণি গ্রামের সুলতান শেখের স্ত্রী আছিয়া বেগম উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্র থেকে বাংলা ও অঙ্ক শিখেছেন। তিনি বলেন, ‘আগে নাম সই কত্তি পাত্তাম না। ছয় মাস ক্লাস হইছে। এহন নাম সই কত্তি পারি। বই একা একা পড়তি পারি।’ তিনি বই পড়ে শোনান। এরপর বলেন, কাজটি আরও কিছুদিন চললে ভালো হতো। তাঁর মতো একই মত জানিয়েছেন অন্যান্য কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা।
আড়ুয়াবর্ণি গ্রামের ২০১ নম্বর শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ছয় মাস মেয়াদি পাঠদান গত ৩০ জুন শেষ হয়েছে। কিন্তু ৬০০ শিক্ষক ও ১৫ জন সুপারভাইজার তিন মাসের সম্মানির টাকা এখনো পাননি। টাকা দেয়ার কথা বলে রেভিনিউ স্ট্যাম্প লাগানো কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। কর্মজীবী বয়স্কদের নিয়ে সন্ধ্যার পর পাঠদান করতে হয়। কিন্তু এ জন্য কোনো বিদ্যুৎ বিল নেই। তা ছাড়া শিক্ষা কেন্দ্রের জন্য ঘর ভাড়া না থাকায় গাছতলায় বসে পাঠদান করতে হয়েছে।’
এ সম্পর্কে উপজেলা কার্যক্রম কর্মকর্তা মেহেদী হামজা বলেন, শাপলা ফুল এনজিও চিতলমারী উপজেলায় ১৯ হাজার ৯৮২ জন নিরক্ষর মানুষ চিহ্নিত করে। এ উপজেলায় আরো ৬০-৭০ হাজার নিরক্ষর মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার মানুষকে মৌলিক সাক্ষরতা দিতে গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ক্লাস চলে। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বেড়েছে। ৩০০ কেন্দ্রের ৬০০ শিক্ষকের প্রথম তিন মাসের সম্মাসি দেয়া হয়েছে। বাকি তিন মাসের টাকা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে।