শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) সিংহভাগ গাড়িই নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গত রোববার প্রকাশিত সংবাদ-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে- ইইডির গাড়ি আছে ৩৮টি। এর মধ্যে ২৮টিই শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যবহার করছেন। এমনকি অবসরে যাওয়া কর্মকর্তারাও এসব গাড়ি ব্যবহার করছেন বলে গুরুতর অভিযোগ মিলেছে। এক সংস্থা থেকে অন্য সংস্থায় বদলি হয়েছেন এমন কর্মকর্তাও সঙ্গে করে ইইউডির গাড়িটি নিয়ে গেছেন। এর ফলে ইইডির প্রাধিকারযুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গাড়ির অভাবে ঠিকমতো প্রকল্প পরিদর্শন করতে পারছেন না। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, গাড়ি কেনার জন্য আমলাদের সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা দিয়েছে সরকার। সেই সুবিধা অনেকেই গ্রহণ করেছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা দপ্তরেও কমবেশি গাড়ি থাকার কথা। তারপরও এক সংস্থার গাড়ি আরেক সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা ব্যবহার করেন কেন- সেটা একটা প্রশ্ন। অবসরে যাওয়া ব্যক্তি কী করে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন সেটা আমরা জানতে চাই। এক শ্রেণীর আমলা ভুলে যান যে এসব গাড়ি জনগণের সম্পদ। জনগণের করের টাকায় গাড়ির তেল কেনা হয়, রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। সরকারি গাড়ি-বাড়িকে এই শ্রেণীর আমলা বাপ-দাদার সম্পদ মনে করেন। চাকরিকালীন সময়ে সরকারি গাড়িবাড়িকে তারা জনসেবার পরিবর্তে স্বজনসেবায় নিয়োজিত করেন। চাকরির আয়ু ফুরালেও সেই চর্চা অব্যাহত রাখেন বা সরকারি সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখার নানা ফন্দি আঁটেন।
বহু বছর ধরেই সরকারি গাড়ি অপব্যবহার করা হচ্ছে। কোনভাবেই এই অপসংস্কৃতি বন্ধ করা যাচ্ছে না। সরকারি গাড়ি অপব্যবহার বন্ধে ন্যূনতম ব্যবস্থাও নেয়া হয় না। এর পরিবর্তে গাড়ি কিনতে আমলাদের সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। চতুর আমলারা এখন গাছেরটাও খাচ্ছেন, তলারটাও কুড়াচ্ছেন। সরকার তাদের সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছে না। আমরা মনে করি, আমলাদের কাজে ন্যূনতম স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতাও যদি থাকত তবে উক্ত পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না। আমরা বলতে চাই, আমলাদের গাড়িবিলাসের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ইইডির গাড়িগুলো প্রাধিকারযুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। কেবল ইইডি নয় সরকারের কোন সংস্থার গাড়ির যেন অপব্যবহার না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। যারা অন্যায়ভাবে গাড়ি ব্যবহার করেছেন এবং জনগণের করের টাকায় এর জ্বালানি খরচ বা রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নির্বাহ করছেন তাদের কাছ থেকে সেই অর্থ কড়ায়গণ্ডায় আদায় করতে হবে।