আগামী ১৭মার্চ অনুষ্ঠিত হবে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সেদিনই জাতীয় শিশু দিবস। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু দিবসের অনুষ্ঠান সকাল ১১টার মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বুধবার (৪ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উপ-কমিটির সভা শেষে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী ১৭ মার্চ বিকেলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। তাই সেদিন বেলা ১১টার মধ্যে ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশু দিবসের অনুষ্ঠান শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যা বাস্তাবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নাশকতার কোনো আশঙ্কা নেই। এখন পর্যন্ত কোনো শঙ্কা পাইনি। গোয়েন্দা সংস্থাও এমন কিছু জানায়নি।’
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে বাড়তি ব্যয় না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
এ সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান হবে পুরনো বিমানবন্দরের প্যারেড স্কয়ারে। অনুষ্ঠান ঘিরে যাতে কেউ নাশকতা করতে না পারে সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি থাকবে আমাদের। স্যোশাল মিডিয়ার গুজবকারীদের দিকেও নজর রাখা হবে। এমন কিছু পেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ৩টা ১৫ মিনিটের মধ্যে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানস্থলের সব গেট বন্ধ হয়ে যাবে।’
মন্ত্রী জানান, মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিটি স্তরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, দেশি-বিদেশি অতিথি, কূটনৈতিকদের আসনগ্রহণের অবস্থান থেকে শুরু করে সব জায়গায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসঙ্গে দেশের ভিআইপিদের জন্যও সে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস, মেডিক্যাল টিম সব সময় প্রস্তুত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যত সদস্য প্রয়োজন তাই আমরা রাখব। ১০ হাজার লাগলে তাই থাকবে, বেশি লাগলে বেশি থাকবে। মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে।’
করোনা ভাইরাসের কারণে কোনো ধরনের রেস্ট্রিকশন আছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোনো রেস্ট্রিকশন কিংবা নিষেধাজ্ঞা জারি করিনি। আমন্ত্রিতরা সবাই আসবেন বলে আশা করছি’।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর বিক্ষোভ প্রতিবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেটাই আমাদের বক্তব্য। নতুন করে আমাদের কিছু বলার নেই। কোন ব্যক্তি কী বলল বা কী করল সেটি দেখার বিষয় না।’
তিনি বলেন, ‘ভারত মুক্তিযুদ্ধে যে সাপোর্ট আমাদের দিয়েছে, সেটি সবসময় স্মরণ করি। আমরা মনে করি, তিনি আসবেন। আমরা চলব আমাদের মতো করে। আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশ।’
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছেন, বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকসহ যারা আসবেন তাদের বিষয়ে কাজ চলছে। কিছু দিনের মধ্যে চূড়ান্তভাবে কারা আসছে জানাতে পারব।’
বিএনপিকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না জানতে চাইলে নাসের চৌধুরী বলেন, ‘এটি একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাসী সবাই এতে অংশ নেবেন বলে আশা করছি।’