শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট অফিসার জামালুল মাওলার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের কাছে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদপুরের দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গত মে মাসে অডিট করতে গিয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তিন লাখ টাকা করে  ঘুষ দাবি করেন বলে অভিযোগে বলা হয়। জামালুলের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন শিক্ষক  ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থারও দাবি জানিয়েছেন তারা।

উল্রেখ্য, মন্ত্রণালয়ের এই অধিদপ্তরকে মন্ত্রণালয়ের ‘দুর্মুজ’ আ্যাখ্যা দেন সাবেক একজন শিক্ষাসচিব। দুর্নীতির দূর্গ হিসেবে সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছে পরিচিত এই অধিদপ্তর। এখানে প্রেষণে কর্মরত অধিকাংশ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাই পরিদর্শন/অডিটে গিয়ে নিজেদের মন্ত্রণালয়ের অডিটর পরিচয় দেন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিলে ঘুষের পরিমান বেশি হয় বলে জানা যায়। এই অধিদপ্তরের প্রধান অধ্যাপক আহাম্মেদ সাজ্জাদ রশীদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন বিতর্কিত অতিরিক্ত সচিবের ‘কাছের মানুষ’ বলে শিক্ষা ক্যাডারে বলাবলি হয়। শিক্ষা ক্যাডারের কোন কর্মকর্তা এই অধিদপ্তরে কতবছর থাকবেন তা নির্ধারণ করেন কলেজ শাখার একজন অতিরিক্ত সচিব। 

জানা যায়, ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ তদন্তপূর্বক জামালুলের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। গত ৩১ মে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে নির্দেশের কপি পৌঁছেছে। এ খবর পেয়ে অভিযোগ দায়েরকারী শিক্ষকদের সঙ্গে আপোস-মীমাংসার নানা চেষ্টা করছে বলে দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মমরুদ কান্দি সংগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, “ঘুষের অভিযোগ দায়ের করার পর আমাদের ওপর নানাভাবে চাপ আসছে। জামালুল জানিয়েছেন তার ঘুষের টাকা দরকার নেই। শুধু অভিযোগ থেকে রেহাই চান। শিক্ষক-কর্মচারিদের পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। এর বিনিময়ে তদন্ত কমিটির কাছে বলতে হবে “জামালুলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”

পাততানি উচ্চবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, জামালুল আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে ধরে আমাদের সঙ্গে আপোস মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছেন। তদন্ত কমিটির কাছে বলা হবে “জামালুল খারাপ লোক নন, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে জামালুল মাওলার বিরুদ্ধে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ১০টি প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করা হলেও কোনো তদন্তই হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বরাবরের মতোই জামালুল মাওলা বলেন, ‘অভিযোগ সমূহ সত্য নয়”।

অধিদপ্তরের পরিচালক আহাম্মদ সাজ্জাদ রশীদ বলেন, শুনানী শেষ হয়েছে, শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। 

এর আগে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা টুটুল কুমার নাগ, এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম,  শ্যামা প্রসাদ সাহা, ছালেহ উদ্দিন সেখ,  মাহমুদুল হক, আশরাফুল ইসলাম, আবদুস সালাম, সালাম আজাদ, শেখ বদরুল আলম ও জহুরুল আলমসহ অনেকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার লিখিত অভিযোগ জমা দেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা। স্থানীয় এমপিরাও বিভিন্ন সময়ে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কোনও শাস্তি হয়নি। সব তদন্তই করা হয় নিজেদের লোকদের দিয়ে। ফলাফল শূন্য থাকে

জানা যায়, ছালেহ উদ্দিন সেখ যশোরের মনিরামপুরের একটি স্কুলের একজন শিক্ষকের জাল সনদের বিষয়ে দুই বছরের ব্যবধানে দুই রকম প্রতিবেদন দিয়েছেন। ঘুরেফিরে ৯ বছরের বেশি সময় ডিআইএতে চাকরি করছেন ছালেহ। যদিও ছালেহ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

শ্যামা প্রসাদ সাহার বিরুদ্ধে বরিশাল শহর, পিরোজপুর ও পটুয়াখালীর কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকরা ঘুষের অভিযোগ দিলেও অভিযোগের কপিই গায়েব হয়ে গেছে। সালাম আজাদ ও শ্যামার পদোন্নতি হলেও তাদেরকে নতুন কোথাও পদায়ন্ দেয়না মন্ত্রণালয়। এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে বিশ্বজিৎ নামের একজন বদলি ও ঠিকাদারদের দালাল। বিশ্বজিৎকে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন উপ-পরিচালক ও একজন সহকারি পরিচালকের কক্ষে দেখা যায়। 

নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058279037475586