শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকরাই মেধাস্বত্ব অধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারেন। বিজ্ঞানীদের-গবেষকদের উদ্ভাবন নিয়ে শিক্ষা সাংবাদিকরা বেশি বেশি সংবাদ প্রকাশ করলে বিজ্ঞানীরা উৎসাহ বোধ করবেন। এতে দেশ উপকৃত হবে। বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর পিআইবি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের জন্য মেধাস্বত্ত্ব অধিকার বিষয়ক কর্মশালায় উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়ন প্রকল্প (হেকেপ) পরিচালক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্ত এমন মন্তব্য করেন।
হেকেপ ও এডুকেশন রিপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউসিজি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপরেশন্স অফিসার ড. মো. মোখলেছুর রহমান, ইরাব সভাপতি ও দৈনিক শিক্ষার সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান এবং ইরাব সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি সাব্বির নেওয়াজ। সঞ্চালনা করেন হেকেপের মিডিয়া কনসালট্যান্ট মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
কর্মশালায় মেধাস্বত্ব অধিকার, আইন ও আবেদনসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস এন্ড ইনোভেশন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. অরবিন্দ চিনচুরে।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একজন অধ্যাপকই পেটেন্টের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে প্রতিবছর ৩০ বিলিয়ন ডলার আয় করে দিচ্ছে। বাংলাদেশে এখন তরুনদের সংখ্যা বেশি। ফলে তাদের সামনে বিপুল সম্ভাবনা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষনায় জোর দিতে হবে এবং মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষন করতে হবে। অরবিন্দ ইরাব সদস্যদের পুনের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানান।
হেকেপ পরিচালক গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্ত বলেন, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের-গবেষকদের মধ্যে মেধাস্বত্ব অধিকার ও আইন নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে শিক্ষা সাংবাদিকদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারেন। মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণ না করায় বাংলাদেশ প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা হারাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৪৭ বছরে দুই হাজার ৭২টি পেটেন্টের জন্য আবেদন করেছে, যার মধ্যে গৃহীত হয়েছে ৬৭৯টি। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ৭৯ হাজার ৬২৪টি এবং চীনের ৪৮ হাজার ৮৮২টি পেটেন্ট গৃহীত হয়েছে।
গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্ত বলেন, আমাদের প্রকল্প থেকে ইতিমধ্যে গবেষনার জন্য ৪০০ এর বেশি সাব প্রজেক্ট দিয়েছি। এজন্য ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৮০২ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১০টা সাব প্রজেক্টে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬৪ কোটি টাকা। এই প্রজেক্টের মাধ্যমেই আমাদের শিক্ষকরা রক্তের মাধ্যমে ক্যান্সার রোগ নির্ণয়, গবাদি পশুর খুরা রোগ নির্ণয়সহ যুগান্তকারি আবিষ্কার করেছেন।
সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর সারাবিশ্ব থেকে বাংলাদেশের গবেষকদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
কর্মশালায় বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের নিজামুল হক, সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ কালের কন্ঠের শরীফুল আলম সুমন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মানবকন্ঠের এম মামুন হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ও বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর এর শহীদুল ইসলাম খান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও মানবজমিনের নূর মোহাম্মদ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও জাগোনিউজের মুরাদ হোসাইন এবং নির্বাহী সদস্য ও নয়াদিগন্তের আমানুর রহমান অংশ নেন।
এছাড়া ইরাবের সদস্য এবং আমাদের সময়ের এইচ এম রবিন, ভোরেরডাকের এন আর সোহেল, বাংলানিউজের ইসমাইল হোসেন, ঢাকাটাইমসের মো: মহিউদ্দীন মাহী, নিউ নেশনের জসিম উদ্দীন, বাংলাট্রিবিউনের রশিদ আল রুহানী, বনিক বার্তার সাইফ সুজন, ডেইলি সানের সোলায়মান সালমান, আলোকিত বাংলাদেশের ইরফান এবং শফিকুল ইসলাম, মুরাদ মজুমদার, বোরহান হাসান, তানিয়া আক্তারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের ত্রিশজন শিক্ষা সাংবাদিক অংশ নেন।