শিক্ষাঙ্গনেও খেলার সুযোগ নেই শিক্ষার্থীদের! - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষাঙ্গনেও খেলার সুযোগ নেই শিক্ষার্থীদের!

রাজশাহী প্রতিনিধি |

রাজশাহীকে রেশম ও আমের শহর ছাড়াও শিক্ষা মহানগরীও বলা হয়। তবে আশা ভঙ্গের কথা হচ্ছে ‘শিক্ষা মহানগরী’ হলেও অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই খেলার মাঠ নেই। একই অবস্থা কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতেও। আর খেলার জন্য উম্মুক্ত মাঠ না থাকায় খেলাধুলা চর্চার সুযোগ পাচ্ছে না শিশুরা। ফলে শুরু থেকেই দুর্বলভাবে বেড়ে ওঠা এই শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের অধীন ৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৫০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে কোনো খেলার মাঠ নেই।

মহানগরীর রেলস্টেশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গৌরহাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাদিরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মাঠ তো দূরে থাক স্কুলগুলোই যেন পাখির খাঁচা। সেখানকার ক্লাসরুমে অনেকটাই বন্দি হয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হয় শিশুদের।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিভাগের অনেক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সব দখল হয়ে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠেই গড়ে উঠেছে বিদ্যালয়ের স্থাপনা। যেটুকু রয়েছে, তাতে খেলাধুলার কোনো পরিবেশ নেই।

সূত্র মতে, রাজশাহী জেলায় ছয়টি, নওগাঁয় ৬০টি, নাটোরে ৩৫টি, বগুড়ায় ২৪টি, সিরাজগঞ্জে একটি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে মহানগরীর গৌরহাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে গড়ে উঠেছে স্টিল ওয়ার্কশপ। সারাক্ষণ উচ্চ শব্দে কাজ চলে সেখানে। রেলস্টেশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় সারাক্ষণ বাস দাঁড়িয়ে থাকে। চলমান বাস-ট্রাকের উচ্চ শব্দে লেখাপড়ায় মন বসাতে পারে না স্কুলের কোমলমতি শিশুরা। 

এছাড়া মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী পৌর এলাকার মাসকাটাদিঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বসানো হয়েছে সবজির হাট। শুক্রবার ও সোমবার নিয়ম করে স্কুল মাঠে হাট বসে। স্কুল চলাকালীন হাট বসায় বিঘ্নিত হয় শিক্ষার পরিবেশ।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, গ্রাম পর্যায়ের প্রতিটি বিদ্যালয়েই খেলার মাঠ রয়েছে। তবে নানান কারণে মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোতে খেলার মাঠ নেই। এর কারণ হচ্ছে গ্রামের প্রতিটি স্কুল ৩৩ শতাংশ জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত।

আর মহানগরীর স্কুলগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ৬ শতাংশ জমির ওপর। ফলে মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোতে খেলার মাঠ অবহেলিত থেকে গেছে। জেলা পর্যায়ের শহর এলাকাগুলোতেও একই অবস্থা। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল হয়ে গেছে। তবে নতুন করে ভবন নির্মাণ হলে বহুতল ভবনের নিচতলায় শিশুদের জন্য খেলার জায়গা রাখার বিষয়টি ভাবনায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

এছাড়া বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা বার্ষিক ক্রীড়াসহ বছরে দু’টি খেলা তাদের জন্য আয়োজন করা হচ্ছিলও বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে সংস্কৃতিকর্মী আফজাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের জন্য খেলার মাঠ থাকবে না, এ কথা ভাবাই যায় না। আমাদের শৈশবের স্মৃতিতে এখনও গেঁথে আছে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। অথচ আমাদের শিশুদের তা বোঝানোই যায় না। কারণ তারা খেলার মাঠই পায়নি৷ পড়ালেখা শেষে সারাক্ষণ স্মার্টফোন নিয়েই ডুবে থাকে।

অথচ শিশুদের মূল বিকাশই হয় খেলাধুলার মাধ্যমে। পড়ালেখার বাইরে মাঠে শিশুরা দৌড়াবে, খেলবে। তবেই না শিশুরা ভালো থাকবে। আনন্দে থাকবে। আর আনন্দের মাধ্যমে শেখাটাই প্রকৃত শেখা। এজন্য বিষয়টি বল নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এই সংস্কৃতিকর্মী।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান বলেন, শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা অপরিহার্য। খেলাধুলা না করলে শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। সে এক সময় ঘরের ভেতর বন্দি থেকে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে। খেলাধুলা না করায় অনেক সময় তারা সামাজিকতাও হারিয়ে ফেলে। জড়িয়ে পড়ে অপরাধ কর্মকাণ্ডে। খেলাধুলা না করায় তারা এখন সারাক্ষণ ডুবে থাকে কম্পিউটার, ট্যাব, মোবাইল আর ল্যাপটবের মধ্যে। এতে ঘরে ঘরে শিশুরা জটিল সমস্যায় ভুগছে।

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045490264892578