শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা প্রসঙ্গে - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা প্রসঙ্গে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ব্রিটিশ ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করতে গিয়ে ১৯০৬ সালে রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘শিক্ষা-সংস্কার’ প্রবন্ধে তলস্তয়ের (১৮২৮-১৯১০) একটি দীর্ঘ উক্তি ইংরেজিতে উদ্ধৃত করেছিলেন। হয়তো স্বদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি যা বলতে চেয়েছিলেন, তলস্তয়ের উক্তি উদ্ধৃত করে তা বলা তাঁর পক্ষে সুবিধাজনক ছিল। তলস্তয় উক্তিটি করেছিলেন তাঁর সমকালীন জার-শাসিত রাশিয়া সম্পর্কে। কোনো উপলক্ষে ওই উক্তির বাংলা রূপান্তর আমি করেছিলাম এভাবে :

যে অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা চলছি তাতে মনে হয়, ঠিক কাজটি নীরবে ধৈর্যের সঙ্গে করে যাওয়াই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কর্তব্য। আমরা যা করতে চাই, তাতে সরকারের অনুমোদন চাওয়ার কোনো দরকার নেই। কেবল সরকারের অনুমোদন পরিহার করাই যথেষ্ট নয়, আমাদের কাজ করতে হবে সরকারের সাহায্য-সহায়তা পরিহার করে। জনসাধারণের অজ্ঞতাই সরকারের শক্তির ভিত্তি। সরকার এটা জানে এবং এ জন্য সরকার সব সময়ই প্রকৃত জ্ঞান বিস্তারের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখে। এ সত্য এখন আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। সরকার কাজ করে চলছে জনসাধারণকে অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত রাখার জন্য। এ অবস্থায় দেশে জ্ঞান বিস্তারের যে ভান সরকার করে চলছে, কোনোক্রমেই তাকে চলতে দেওয়া যায় না। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, একাডেমি নানা ধরনের কমিটি ও কংগ্রেসের ছদ্মাবরণে সরকার জনসাধারণকে অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখার কাজই করছে। ভালো তখনই ভালো যখন তা প্রকৃতপক্ষেই ভালো এবং জ্ঞানও তখনই জ্ঞান যখন তা প্রকৃতপক্ষেই জ্ঞান। ডেলিনানোফ কিংবা ডুরোমোডোর নির্দেশ অনুযায়ী যা করা হয়, জনগণের জন্য তা কল্যাণকর নয় এবং দেশের শিক্ষার জন্যও তা সহায়ক নয়। যখন দেখি অনুপ্রাণিত নিষ্কাম ব্যক্তিদের প্রয়াস ব্যর্থ হয় যায়, তখন গভীর দুঃখ অনুভব করি। বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করি যে মহত্প্রাণ জ্ঞানী লোকরা সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শক্তি ক্ষয় করেন; কিন্তু সংগ্রামে তাঁদের প্রয়াস শেষ পর্যন্ত সরকার যা করতে চায় তারই অনুকূলে যায়। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, রবীন্দ্রনাথ কোন অবস্থায় ‘শিক্ষা-সংস্কার’ প্রবন্ধটি লিখেছিলেন এবং কেন তলস্তয়ের এই উক্তি উদ্ধৃত করেছিলেন সে সম্পর্কে কিছুই আমার জানা নেই। তবে বুঝতে পারি, রবীন্দ্রনাথের মনে ক্ষোভ ছিল। ভারতে সেটা ছিল বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনের কাল। আর জার-শাসিত রাশিয়ার অবক্ষয়ক্লিষ্ট রাষ্ট্রব্যবস্থায় তলস্তয় সরকারের প্রতি সম্পূর্ণরূপে আস্থা হারিয়েছিলেন। আমার মনে তলস্তয়ের উক্তিটি দাগ কাটে। তলস্তয়ের এই উক্তি থেকে ডেলিনানোফ ও ডোরোমোডোর নাম মুছে দিয়ে তাতে বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রীর ও সচিবের নাম বসালে ওই কথাগুলোকে সম্পূর্ণ বাংলাদেশেরই অবস্থার বর্ণনা বলে মনে হবে।

১৯৭২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকের অবস্থা বিচার করতে গেলে দেখা যায়, ক্রমাগত পাঠ্যপুস্তক খারাপ থেকে আরো খারাপ হয়ে চলছে। আমি পাঠ্যপুস্তকের মর্মগত দিকের কথা বলছি। বলছি পাঠ্য বিষয় ও পাঠক্রমের কথা। সে দিকটা দুঃখজনক।

পরীক্ষা পদ্ধতিকে ক্রমে অত্যন্ত খারাপ করে ফেলা হয়েছে। নানা ভাগে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থাকে। জাতি গঠন ও রাষ্ট্র গঠনের জন্য এই শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ প্রতিকূল। ছাপা, কাগজ, বাঁধাই ইত্যাদি দিক দিয়ে পাঠ্যপুস্তককে কিছুটা উন্নত করা হয়েছে।

মনে হয়, দেশের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা এমনিতেই খারাপ হচ্ছে না, কোনো ‘পাপচক্র’ সুপরিকল্পিতভাবে দুরভিসন্ধি করে এই শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষানীতির ভেতরে কাজ করে চলেছে। এরই মধ্যে সরকারের উত্থান-পতন ঘটেছে, নতুন নতুন শিক্ষা কমিশন বসেছে, নানা কমিটি কাজ করেছে, এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করেছে। কিছু কিছু পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত গাইড বুকের বোঝা ক্রমাগত বড় হয়েছে। বইগুলো বীভৎস চেহারা নিয়েছে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাবলিক পরীক্ষা প্রবর্তন করা হয়েছে। সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতির নামে অত্যন্ত ক্ষতিকর পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। কোচিং সেন্টার ও গাইড বুকের ব্যবসায় স্বর্ণযুগ দেখা দিয়েছে। মূলধারার শিক্ষাকে বিভ্রান্ত করে ইংলিশ ভার্সন চালু করা হয়েছে। বাংলাবিরোধী মনোভাব ক্রমেই বাড়ছে। জাতি ও রাষ্ট্র গঠনের কোনো চিন্তা শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরে নেই। শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান নিম্নগামিতার কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।

গভীরভাবে বিচার করলে দেখা যায়, কোনো জাতির প্রাণশক্তির অবস্থান তার শিক্ষাব্যবস্থায়, আর শিক্ষাব্যবস্থার প্রাণশক্তি থাকে তার পাঠ্যপুস্তকে, পাঠ্য বিষয়ে, পাঠক্রমে। আর উচ্চশিক্ষার ভিত্তি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার পাঠ্য বিষয়ও আমাদের রাষ্ট্র, জাতি ও জনজীবনের স্বাভাবিক বিকাশের পরিপন্থী। পরিকল্পিতভাবে আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক খারাপ করে দিয়ে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে নষ্ট করে রাখা হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিতে রাজার একটি উক্তি, ‘যে যত জানে, সে তত কম মানে’। কাজেই রাজা চিন্তাভাবনা করে শিক্ষার সুযোগ সীমাবদ্ধ রাখেন। তলস্তয়ের উক্তিতেও শিক্ষা নিয়ে শাসকদের এই মনোভাবের কথাই আছে।

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার রূপ ও প্রকৃতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা ইত্যাদিকে সুষ্ঠু ধারায় চালিয়ে নেওয়ার মতো লোক এই শিক্ষাব্যবস্থার ভেতর থেকে তৈরি হবে না। শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষানীতি উন্নত করা না হলে অবস্থা ক্রমেই আরো খারাপ হতে থাকবে।

রোমাঁ রোলাঁর কাছে ম্যাক্সিম গোর্কির ১৯১৬ সালে লেখা একটি চিঠির কথা মনে পড়ছে। বাংলাদেশে আজ গতানুগতির বাইরে চিন্তা ও কাজের ভিন্ন ধারা সৃষ্টি করা দরকার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯১৬ সালের শুরুতে পেট্রোগ্রাড থেকে রোমাঁ রোলাঁর কাছে গোর্কি লিখেছিলেন :

ম্যাক্সিম গোর্কির এই পত্র কি বাংলাদেশে কোনো লেখকের, কোনো শিক্ষকের, কোনো শিক্ষা কর্মকর্তার মনে কোনো নবচেতনা জাগাতে পারে না?

শ্রদ্ধাভাজন কমরেড রোমাঁ রোঁলা, শিশুদের জন্য বিথোভেনের জীবনী লিখতে আমি আপনাকে আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমি এইচ জি ওয়েলসকে এডিশনের এবং ফ্রিড জফকে কলম্বাসের জীবনী লিখতে আহ্বান জানিয়ে চিঠি লিখছি। আমি নিজে লিখব গরিবাল্ডির আর ইহুদি কবি বাইয়ালিক লিখবেন মুসার জীবনী। এমনিভাবে আরো লেখা হবে।

আমি চাইছি একালের শ্রেষ্ঠ লেখকদের অংশগ্রহণের দ্বারা মানবজাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জীবনকথা অবলম্বন করে শিশুদের জন্য একটি গ্রন্থমালা প্রকাশ করতে। এই সবগুলো গ্রন্থই আমি প্রকাশ করব।

আমি নিঃসংশয়চিত্তে অনুভব করি যে জাঁ খ্রিস্তফ ও বিথোভেন গ্রন্থের যিনি লেখক, মহান মানবতাবাদী বলে যাঁর পরিচিতি, মহৎ ও উন্নত সামাজিক চিন্তার গুরুত্ব যিনি এত চমৎকারভাবে উপলব্ধি করেন, সেই আপনি আমার এই প্রয়াসে আপনার অমূল্য সহায়তা দান করতে অস্বীকৃতি জানাবেন না। বলা বাহুল্য, আমার প্রয়াসকে আমি মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি।

আপনি সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে উপলব্ধি করবেন যে আজকের দিন শিশুদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া আমাদের যতটা কর্তব্য, ততটা আর কারো প্রতিই নয়।

আমরা বয়স্করা অল্প সময়ের মধ্যেই এই পৃথিবী ছেড়ে যাব, আমাদের সন্তান-সন্ততিদের জন্য থাকবে এক দুঃখজনক ঐতিহ্য। আমরা তাদের অধিকারী করে যাব অত্যন্ত করুণ জীবনের। এই ভয়াবহ যুদ্ধ আমাদের নৈতিক পতনের এবং সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের অকাট্য প্রমাণ। এই সময়ে মাসুম শিশুদের আমরা স্মরণ করিয়ে দিই যে মানুষ সব সময় এত দুর্বল ছিল না, এত অপরাধী ছিল না, যেমন আজ আমরা আছি। আসুন, আমরা তাদের স্মরণ করিয়ে দিই যে বড় মাপের মানুষ—মহত্প্রাণ মানুষ—পৃথিবীর প্রতিটি জাতির মধ্যেই ছিলেন এবং আছেন। এই সময়ে যখন বর্বরতা ব্যাপকভাবে চালানো হচ্ছে, তখনই এটা করতে হবে। প্রিয় রোমাঁ রোলাঁ, আকুল চিত্তে আমি আপনাকে অনুরোধ করছি বিথোভেনের জীবনী লিখতে। কারণ আমি সন্দেহাতীতভাবে জানি, আপনার চেয়ে ভালো করে আর কেউ তা লিখতে পারবেন না।

আর একটা অনুরোধ। অনুগ্রহপূর্বক আমাকে জানাবেন, ফরাসি দেশের কোন লেখককে আমি অনুরোধ করতে পারি শিশুদের জন্য জোয়ান অব মার্কের ইতিহাস লিখতে। বলে দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করি যে সেই ব্যক্তিকে প্রতিভাবান হতে হবে এবং তাঁর ক্যাথলিক হলে চলবে না। আশা করি আমাকে ভুল বুঝবেন না।

বন্ধু আমার, যুদ্ধ চলাকালে প্রকাশিত আপনার সব লেখা আমি পড়েছি। আপনার কাছে আমি নিবেদন করতে চাই যে এই লেখাগুলো আমার অন্তরে আপনার প্রতি প্রগাঢ় সম্মানবোধ ও গভীর ভালোবাসা জাগিয়েছে। আপনি সেই স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তির একজন, যুদ্ধের উন্মাদনা যাঁদের চেতনাকে বিধ্বস্ত করতে পারেনি এবং এটা খুবই আনন্দের ব্যাপার যে আপনার অন্তরে মানবজাতির মহত্তম মূল্যবোধ ও নীতিসমূহ রক্ষা পেয়েছে।

আশা করি, যত শিগগির সম্ভব আমার চিঠির উত্তর দেবেন এবং আপনার মতামত ও বইয়ের আকার সম্পর্কে জানাবেন।

প্রিয় বন্ধু, দূরদেশ থেকে আমাকে আপনার সঙ্গে করমর্দনের সুযোগ দিন এবং পুনরায় আমার নিঃসংশয় শ্রদ্ধা ও আন্তরিক প্রশংসা গ্রহণ করুন।

আপনার কর্ম দীর্ঘস্থায়ী ও ফলপ্রসূ হোক—এই কামনা করি।

আপনাদেরই

ম্যাক্সিম গোর্কি

আবুল কাসেম ফজলুল হক : প্রগতিশীল চিন্তাবিদ।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055451393127441