উলিপুরে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। টানা কয়েক দিন তিস্তার ভাঙনে বসতবাড়িসহ কয়েক শ একর আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা এবং ফসলি জমি।
স্থানীয় লোকজন বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। এদিকে ভাঙনকবলিত পরিবারগুলো ভিটেমাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার গ্রামে দেখা গেছে, প্রতি মুহূর্তেই ভেঙে যাচ্ছে রোপা আমনের খেতসহ ঘরবাড়ি। ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে পার্শ্ববর্তী উঁচু স্থানে। ঐ গ্রামের নুরুল হক কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘হাল গিরস্ত সইগ আছিল বাহে, আইজক্যা মুই নিঃস্ব হয়া গেনু। এহন হামাক বাঁন্ধের আস্তাত যায়া থাকা নাগবে।’ একই কথা বলেন ঐ গ্রামের আজিজার রহমান, আবুল মালেক, জয়নাল আলী, মোস্তাক মিয়াসহ অনেকে।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তার ভাঙনে এ গ্রামের মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে গোড়াইপিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিয়ারী দাখিল মাদ্রাসা, গোড়াইপিয়ার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ঝাঁকুয়াপাড়া, মণ্ডলপাড়া, কুমারপাড়া, মুলাধোয়ারপাড় গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও সহস্রাধিক একর ফসলি জমি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু, তিস্তা নদী রক্ষা জেলা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সরদার, থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আহসান হাবীব রানা ভাঙনকবলিত গোড়াইপিয়ার এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন রোধ ও সহায় সম্বলহীন পরিবারগুলোকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
কুড়িগাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে।