সাবেক শিক্ষা সচিব, বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের কিউরেটর ও দৈনিক শিক্ষাডটকমের প্রধান উপদেষ্টা মো. নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ‘চাকরি’ ফোকাস করা হয়েছে। কিন্তু এ শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্য ১৮০ ডিগ্রি বদলে উদ্যোক্তা সৃষ্টি দিকে ঘোরাতে হবে। কারণ, সরকারি-বেসরকরি মিলিয়ে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের চাকরি দেয়ার সুযোগ নেই। সেখানে শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্যে বছরে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেন। সবাই যদি চাকরির পেছনে দৌড়ায় তাহলে দেশ ভয়াবহ সংকটে পড়বে। এজন্য আমাদের মধ্যে ‘চাকরি করবো না, চাকরি দিবো’ মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে। আজ শনিবার দুপুরে (১৮ জানুয়ারি) নতুন উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিতে গঠিত‘স্টার্ট আপ যশোর’ নামে একটি সংগঠনের পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রধান নেপথ্য কারিগর এন আই খান আরও বলেন, শুধু প্রযুক্তি জ্ঞান থাকলেই উদ্যোক্তা হওয়া যায় না। এরজন্যে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে যশোরের শেখ হাসিনা আইটি পার্ক স্থাপনের সময়ই ‘ইন্টারপ্রিনিউওর ইউনিভারসিটি’ প্রতিষ্ঠার জন্যে পার্কের সাথেই জায়গা অধিগ্রহণ করে রাখা আছে। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশে এই ধরণের কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এছাড়া ‘ডিজাইন ইউনিভারসিটি’ নামে আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা এখন খুবই দরকার।
শিক্ষা সংস্কারক হিসেবে সারাদেশে পরিচিত এন আই খান বলেন, ‘চাকরি করে বুঝতে পেরেছি, কোথায় কোথায় সমস্যা আছে; এজন্য এখন চাকরি না করে সবাইকে উদ্যোক্তা হতে বলছি। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্যে ইংরেজি ও তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) বিষয়ে জ্ঞান থাকতেই হবে-এমনটা ঠিক নয়। সুন্দর করে কথা বলতে পারলেই উদ্যোক্তা হওয়া যায়।
একটি আইডিয়া, একটি প্রতিষ্ঠান-এই শ্লোগানে ‘স্টার্ট আপ যশোর’ নামে তরুণ উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার জন্যে অলাভজক এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছে। সংগঠনের আনুষ্ঠানিক পরিচিতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসেন।
আলোচনা করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বাঁচতে শেখার নির্বাহী পরিচালক আঞ্জেলা গোমেজ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমানসহ অনেকে।
তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্যে ‘স্টার্ট আপ যশোর’ সংগঠনটি কি ধরণের সহায়তা দিবে সে বিষয়ে মূল ধারণা উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও মাইক্রোড্রিম আইটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহানূর মো. শরীফ। অনুষ্ঠানে আইটি পার্কের সফল তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন তাদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প শোনান। এ পর্বে বক্তব্য রাখেন কেনারহাটর নাহিদুল ইসলাম, মাই লাইট হোস্টের রকিবুর রহমান, হাসনাত ইন্টারন্যাশনালের এ এইচ এম আরিফুল হাসনাত, ভিক্স আইটির ভিক্টর সাহা ও সফট এক্সর মেহেদী হাসান। অনুষ্ঠানে নতুন উদ্যোক্তা, বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্বদ্যিালয়ের স্নাতক পর্যায়ের ৩৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।