শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে শিক্ষকদের ‘না’, অনশন চলবে - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে শিক্ষকদের ‘না’, অনশন চলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এমপিওভুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে ঘোষণা শুনতে চান অনশনরত শিক্ষকেরা। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কথায় আশ্বাসে তাদের বিশ্বাস নেই। ২০১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে নীতিমালার কথা শুনে আসছেন। মন্ত্রীর বিভ্রান্তকর তথ্যে ও আশ্বাসে আর বিশ্বাস করেন না মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকেরা। তাই তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। মঙ্গলবার বেলা এগারোটা বিশ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনরত শিক্ষকদের মাঝে উপস্থিত হয়ে নীতিমালার ভিত্তিতে এমপিওভুক্তির আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। অর্থমন্ত্রীর বরাত দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,  ‘আজ বিদেশ যাওয়ার আগে অর্থমন্ত্রী তাকে (শিক্ষামন্ত্রীকে) বলে গেছেন নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে, শেষ হলেই এমপিওভুক্তির উদোগ নেয়া হবে। এটা আমাদের বিজয়’।’  এসময় শিক্ষকেরা না না বলে মন্ত্রীর আশ্বাস নাকচ করে দেন। অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

হট্টগোলের এক পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নীতিমালা করে এমপিওভুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য সময় লাগবে। কিন্তু সম্মতি পাওয়া গেছে এটাই একটি বড় অর্জন।’ এগারোটা ৩৮ মিনিটে মন্ত্রী বক্তব্য শেষ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের দুইজন সচিব। সাবেক শিক্ষক নেতা কাজী ফারুকের বিরুদ্ধে দালাল দালাল বলে স্লোগান দেন।

মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর অনশরত শিক্ষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয় ভূষন বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম। মন্ত্রী আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি।শিক্ষামন্ত্রীর টালবাহানায় আমরা বিশ্বাস করি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব। চলতি বাজেটেই এমপিওভুক্ত করতে হবে। জানুয়ারি মাসের বেতনেই আমাদের এমপিও করার দাবি জানান এ শিক্ষক নেতা।

অনশনরত একজন শিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ প্রবীন শিক্ষক নেতা কাজী ফারুক  মন্ত্রীর পক্ষে কাজ করছেন। শিক্ষকদের পক্ষে না।

তিনি বলেন, এর আগেও আমরা অনশনে বসেছিলাম কিন্তু মন্ত্রীর মিথ্যা আশ্বাসে অনশন ভেঙ্গে ভুল করেছিলাম। এবার আমরা  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ থেকে ঘোষণা না শুনে অনশন ভাঙ্গবো না।’ কাজী ফারুক বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষানীতি কমিটিতে থাকা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদ বাগানোসহ নানা সুবিধা নিয়েছেন। অবসর ও কল্যাণ বোর্ডে থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়েছেন কাজী ফারুক।

এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকদের অনশনের তৃতীয় দিন ( আজ মঙ্গলবার) চলছে।

বেলা ১২টার সময় অনশনরত সংগঠনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ৭০২নং ওয়ার্ডের ৫০নং বেডে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন।

আমরণ অনশনের ৩য় দিনে ৩৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০২নং ওয়ার্ডের ৫১নং বেডে খুলনার সুপার বাহরুল ইসলাম, ৪০নং বেডে নওগাঁর চকরঘুনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের মোঃ বাবুল হোসেন মন্ডল, বগুড়ার ধুপকাঠীর শিক্ষক সেকেন্দার আলী, মাগুরা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ইকরামুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার সিরাজউদ্দৌলা কলেজের আশরাফুল আলম লাভলু প্রমুখ।

টানা অবস্থান কর্মসূচির পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) তৃতীয় দিনের মতো অনশন পালন করছেন শিক্ষকরা। পহেলা জানুয়ারি সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই উৎসব পালন করা হলেও শিক্ষকদের থাকতে হলো ঢাকার রাজপথে।

আমরণ অনশনের দ্বিতীয় দিনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। গতকাল সোমবার ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের চিলখালা মডেল কলেজের মো. ফরহাদ, কুষ্টিয়ার খোকসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আব্দুর রাজ্জাক, বরিশালের আল ইখওয়াসা দাখিল মাদরাসার ফজলুর রহমানের অবস্থা গুরুতর।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভূষণ রায় বলেন, ‘গত শনিবারের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো ফলের কৃতিত্বের দাবিদার হলেও আমরা আনন্দের অংশীদার হতে পারিনি। বই উৎসবেও অংশগ্রহণ করতে পারিনি। ’

গতকাল সোমবার বামপন্থী কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শিক্ষকদের অনশনে সংহতি প্রকাশ করেছে। এছাড়া বিরোধী দলের নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ বিবৃতি দিয়ে এমপিওভুক্তির দাবী জানিয়েছেন।

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.011713981628418