শিক্ষার মান চাইলে শিক্ষকের মর্যাদা দাও - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার মান চাইলে শিক্ষকের মর্যাদা দাও

মোস্তফা জামাল উদ্দীন |

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহোদয় দায়িত্ব পাওয়ার পর বলেছিলেন তিনি প্রাথমিক শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদার দাবি প্রতিষ্ঠিত করবেন। মন্ত্রী মহোদয় নির্দিষ্ট করে বলেছিলেন প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড ১০ম ও ১১তম দেয়া হবে এবং তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া চেয়ে বলেন আপনাদের সব দাবি পর্যায়ক্রমে পূরণ করা হবে। সচিব মহোদয় গত রমযান মাসে নেতাদের সাথে বসে বলেছিলেন আপনারা ১১তম চান কেন, আরও বেশি চান। আপনারা শিক্ষক, এত কম আপনাদের বেতন হতে পারে না। রোযা মুখে তিনি স্পষ্ট ওয়াদা করেছিলেন মুজিব বর্ষের পূর্বেই আমাদেরকে সম্মানজনক গ্রেড দিবেন। তাছাড়া নির্বাচন পূর্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভয়েসকল এবং নির্বাচনী ইশতেহার সব জায়গায়তেই তো প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসন তথা মর্যাদা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। এমনকি ডিসেম্বর ২০১৭ তে পবিত্র শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে পুরো ডিপার্টমেন্টের কর্তা-ব্যক্তিরা সচিব এবং ডিজির উপস্থিতিতে তদানীন্তন মন্ত্রী মহোদয় বলেছিলেন, আপনাদের দাবির যৌক্তিকতা পূরণ করতে পারলে আমরা দেবো এবং ১৩তম গ্রেড নিলে এখনি দেবেন। আমরা সেদিন কেউ ১৩তম গ্রেড মানি নাই। অথচ আজ এত কিছুর পরেও ১১ ও ১৩তম গ্রেড কেনো? এটা দিয়ে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নাই বলে আমি মনে করি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৭৭৩ খ্রিষ্টাব্দে একই গ্রেডে শিক্ষকদের বেতন ভাতা দিতেন, তিনি তখন এই গ্রেডে বেতন দিয়ে কি তাহলে ভুল করে গিয়েছিলেন? আজ তারই সুযোগ্য কন্যা শিক্ষাবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে কেন ১৩তম গ্রেডের ঘোষণা করে শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হলো?  আমরা ১৩তম গ্রেড কিছুতেই মানি না, মানব না। আপনারা পুনর্বিবেচনা করুন দয়া করে। 

আর নিম্ন ধাপে বেতন নির্ধারণের নিয়মটা পাল্টান, এতে রাষ্ট্রের কোষাগারের কিছুই হবে না। বরং এই নিয়মের কারণে চাকরিজীবীদের অর্জিত ইনক্রিমেন্ট থেকে বেতন কাটা যায়। যা তার মাসিক বেতন ও পেনশন পর্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এটা আমাদের জন্য চরম ক্ষতিকর ও অপ্রত্যাশিত।

আমরা প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর একবার এই কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ, ২০০৬ ও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে আরও দুইবার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এই কালো আইনের কারণে। আমরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে চাই না। 

আমরা পুরো প্রাথমিক শিক্ষক আজ হতাশ। হতাশা নিয়ে কখনও ভালো কিছু করা যায় না। বর্তমান উর্ধ্বগতির বাজারে ১০ম ও ১১তম গ্রেড কি খুব বেশি? ১৬ হাজার আর সাড়ে ১২ হাজার আহা মরি এমন কোনো বড় বেতন না। অন্তত সময়োপযোগী নয়। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে গাদাখানিক ক্লাস নেয়ার পর আর কিছু করার সুযোগ আমাদের থাকে না। এই কয়টা সামান্য টাকা দিয়ে কোনো রকম বাজারের সস্তা খাবার খেয়ে আমাদের চলতে হয়। এতে আমাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ হয় না। আর খবর নিয়ে দেখেন প্রায় সব প্রাথমিক শিক্ষক চড়া সুদের ঋণে জর্জরিত।
 
আমাদের চাহিদার যৌক্তিকতা আমরা বার বার প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে অদ্যাবধি কম সময় না। এত দীর্ঘ সময়ে আপনারা এটার সমাধান করতে পারলেন না? এটা কার ব্যর্থতা বলব বলেন? একটা নিয়োগ বিধি সংশোধন করতে কতদিন লাগে? যার দোহাই দিয়ে শিক্ষকদের বঞ্চনার মুখে ঠেলে দেবেন! 

প্রাথমিক শিক্ষকরা সমস্ত সাধ আহ্লাদ জলাঞ্জলি দিয়ে নিরলসভাবে জাতির শিক্ষার ভিত গড়ার মহান দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তারা আর কত দিন সৈয়দ মজতুবা আলীর পাদটীকার লাট সাহেবের তিন পা ওয়ালা কুকুরের এক পায়ের সমান থাকবেন?  

লেখক : মোস্তফা জামাল উদ্দীন, সহকারী শিক্ষক।

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.012009143829346