শিক্ষার্থীদের দেয়া বেতনে চলছেন চার নারী শিক্ষক! - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার্থীদের দেয়া বেতনে চলছেন চার নারী শিক্ষক!

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে কুমিল্লা কারা প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ের মাঠ নিচু। সামান্য বৃষ্টিতে শ্রেণিকক্ষেও পানি জমে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এখানে নেই শৌচাগার। কারাগারের নিজস্ব জমির ওপর সরকারি অর্থায়নে প্রায় ২৯ বছর আগে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হলেও শিক্ষকরা সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিদ্যালয়ের সাত জন শিক্ষকের মধ্যে চার জন নারী শিক্ষকের বেতন হয় ছাত্রছাত্রীদের থেকে পাওয়া মাসিক বেতন থেকে। 

কারা কর্তৃপক্ষ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে বিদ্যালয়টির সমস্যাগুলো সমাধানসহ এটি সরকারি করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকার লোকজন।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে ‘কারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের’ স্থাপন। ছবি সংগৃহীত

জানা যায়, কারা কর্মকর্তা-কর্মচারী, কারারক্ষী, কারাগার কর্মী এবং আশপাশের এলাকার মানুষের সন্তানদের লেখাপড়া করানোর উদ্দেশে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ নগরীর ছোটরা এলাকায় কারাগারের পাশে ১৯৯১ সালে ‘কারা প্রাথমিক বিদ্যালয়’ স্থাপন করে। 

কারা কর্তৃপক্ষ পরিচালিত এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে কেজি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন কেজি থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ৪০ টাকা এবং ৪র্থ থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৫০ টাকা করে জনপ্রতি নেয়া হয়।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে তাদের ভোগান্তি বাড়ে। সামান্য বৃষ্টিতে বিদ্যালয় মাঠ পানিতে থই থই করে। কখনো কখনো ক্লাসরুমেও পানি ঢুকে পড়ে। পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়। জানা যায়, এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে সাত জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। এদের মধ্যে তিন জন পুরুষ এবং চার জন নারী। পুরুষ শিক্ষক তিন জনই কারা বিভাগের কর্মচারী। এদের দুই জন সহকারী কারারক্ষী ও একজন কারারক্ষী।  

তারা কারা কর্তৃপক্ষ থেকে বেতন পেলেও নারী শিক্ষকেরা আছেন বিপাকে। তারা কারা কর্তৃপক্ষের কর্মচারী না হওয়ায় বছরের পর বছর নামমাত্র বেতনে শিক্ষকতা করছেন। ভবিষ্যতে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হলে বেতন-ভাতা বাড়বে বলে তাদের আশা। 

বিদ্যালয়ের শিক্ষক নূর জাহান সাথী বলেন, ‘কত টাকা পাই তা বলব না, তবে গত ছয় বছর ধরে সামান্য বেতনে শিক্ষকতা করছি। বিদ্যালয়টি সরকারি হলে অন্য সব সরকারি বিদ্যালয়ের মতো আমাদের বেতন-ভাতা বাড়বে এবং তা নিয়মিত হবে—এমন আশায় আছি। এখন এ বিদ্যালয়ের আয়ের উত্স ছাত্রছাত্রীদের থেকে নেওয়া বেতন’।

বেশ কয়েক জন অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়টি সরকারিকরণসহ মাঠ ভরাট ও আধুনিকায়নের দাবি জানিয়েছেন। কুমিল্লা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহানারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, এ বিদ্যালয়ে কারাগারের তিন জন কর্মচারী এবং বাইরের চার জনসহ সাত জন শিক্ষক আছেন। কারাগারের কর্মচারীরা (শিক্ষক) কারাগার থেকে বেতন পেলেও বাইরের শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের থেকে পাওয়া বেতন দিয়েই চলছেন। 

কারাগারের কর্মচারীদের নিকট থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে বাইরের শিক্ষকদেরকে বেতনের সঙ্গে দেওয়া হয়। শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রয়েছে। বিদ্যালয়ের সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, কারাগারটি অনেক পুরাতন। তাই পুরো কারাগারটি সহসা রিমডেলিং করা হবে এবং এ প্রকল্পে বিদ্যালয়টিরও আধুনিকায়ন করা হতে পারে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0075430870056152