মুলাদীতে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অজান্তে আলিম শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করেছে একটি মাদ্রাসা। উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের ইসলামাবাদ নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসা ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদনের এসএমএস করে দিয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করতে পারছে না বলে জানিয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের বিজ্ঞানে পড়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সাধারণ শাখায় আবেদন করে রাখায় কোনো প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছে অনেক শিক্ষার্থী।
একাদশ/সমমান শ্রেণীতে ভর্তিবিষয়ক ওয়েবসাইটে অনুমতি ব্যতিত অপরের আবেদন পূরণ দণ্ডনীয় অপরাধ বিষয়ে সতর্ক নোটিশ দেয়া থাকলেও তা উপেক্ষা করে ওই মাদ্রাসা তাদের সব শিক্ষার্থীদের আবেদন করে ফেলেছে। আবেদন সূত্র জানা গেছে, চলতি বছর একাদশ/সমমান শ্রেণীতে ভর্তির জন্য আন্তঃ শিক্ষাবোর্ড সংবলিত ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এসএমএস কিংবা ওয়েব সাইটে শিক্ষার্থীদের রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পাসের সাল ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে সর্বোচ্চ ১০টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা যাবে।
এক্ষেত্রে প্রথম আবেদনের ক্ষেত্রে যে মোবাইল নাম্বার ব্যবহৃত হবে সবক্ষেত্রে সেই নাম্বারই ব্যবহার করতে হবে। উপজেলা ইসলামাবাদ নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইয়াসিন মুনির সুকৌশলে ভর্তির আবেদনের শুরুর দিন অর্থাৎ ১৩ মে টেলিটকের মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠান থেকে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীর আবেদন করে ফেলে। একটি মোবাইল নাম্বারে একাধিক আবেদন গ্রহণ না করায় সুচতুর ইয়াসিন মুনির শিক্ষার্থীদের আবেদন করার জন্য ওই মাদ্রাসার বিভিন্ন শিক্ষকদের এবং তার আত্মীয়-স্বজনদের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে আবেদন করে রাখে।
ওই মাদ্রাসা থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থী রাবেয়া, রেহেনা, রবিউল, সজিব, শাহানাজ, নাইমা জানায় তারা দাখিল পাসের পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিভিন্ন শহরে পড়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু অধ্যক্ষ ইয়াসিন মুনির তাদের অজান্তে অন্যের মোবাইল নাম্বার দিয়ে আবেদন করে রাখায় তারা নতুন করে আবেদন করতে পারছে না।
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা মাদ্রাসায় যোগাযোগ করলে ইয়াসিন মুনির বিভিন্ন কৌশলে সময় ক্ষেপণ করে এবং ভর্তির আবেদন পরিবর্তনের জন্য তাদের কোনো প্রকার সহযোগিতা না করে উল্টো ওই মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীতে পড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইয়াসিন মুনির জানান, তিনি যা কিছু অনিয়ম করেছেন তা মাদ্রাসার স্বার্থে করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল জলিল জানান, ইসলামাবাদ নেছারিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইয়াসিন মুনির যা করেছেন তা মাদ্রাসার স্বার্থেই করেছেন।