শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম একাডেমিক সভায় অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি, ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক সুদিপ্ত দে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
পরে ক্যাম্পাসে তারা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, শনিবার অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক সভা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। তাদের সে ঘোষণা উপেক্ষা করে গতকাল একাডেমিক সভায় অংশ নিতে পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনে যান উপাচার্য।
এ সময় উপাচার্যপন্থি শিক্ষক ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে জোর করে উপাচার্য একাডেমিক সভায় প্রবেশ করেন।
ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন,‘ উপাচার্যসহ উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা আমাদের পদদলিত করে একাডেমিক সভায় অংশগ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া এক শিক্ষক আমাদের একজনকে গলা চেপে ধরেন। গত ৫ নভেম্বর একই কায়দায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে’।
ঘটনার পর বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মিখা পিরেগু বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী তারা সিনেট হলের সামনে অবস্থান নেন। কিন্তু সেখানে ভিসিপন্থি শিক্ষকরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আক্রান্ত করে সন্ত্রাসী কায়দায় ভিসিকে সিনেট হলে প্রবেশ করার। বিশ্ববিদ্যালয় কখনও গায়ের জোরে চলবে না, চলবে নৈতিকতার জোরে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের দাঁতভাঙা জবাব দেবে। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ জাবি শাখার সভাপতি আরমানুল ইসলাম খান বলেন, উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা ন্যক্কারজনকভাবে শিক্ষার্থীদের পায়ে মাড়িয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে প্রবেশ করেন। তারা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, একাডেমিক সভায় অধ্যাপকরা প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। তারা বলছিল শিক্ষকরা প্রবেশ করতে পারবেন, তবে উপাচার্য পারবেন না। তখন শিক্ষকরা উপাচার্যকে নিয়েই প্রবেশ করেন। একসঙ্গে ৭০-৮০ শিক্ষক ঢুকতে গেলে রাকিবুল রনি পড়ে যায়। তবে কোনো ধরনের ধাক্কাধাক্কি সেখানে হয়নি।