করোনায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে হোস্টেল ও মেস ছেড়ে বাড়ি যাওয়া শিক্ষার্থীদের সনদপত্র ও মালামাল ডাস্টবিনে ফেলে দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। শুক্রবার (৩ জুলাই) সংগঠনটির ঢাকা নগর শাখার সভাপতি রাফিকুজ্জামান ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক অরূপ দাস শ্যাম এক যুক্ত বিবৃতিতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য জানান।
নেতারা বিবৃতিতে বলেন, “সারা বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর যে প্রকোপ চলছে, বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। এ সংকটের ফলে গত ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শিক্ষার্থীরা হল এবং মেস ছেড়ে বাড়ি চলে যায়। আপনারা জানেন যে, সারাদেশে প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী আছেন যারা মেস, সাবলেট, হল ভাড়া করে থাকে। তার মধ্যে ৫-৭ লাখ শিক্ষার্থী ঢাকায় মেস-সাবলেট করে থাকে এবং তাদের জীবিকার প্রধান উৎস হলো টিউশন। কিন্তু বর্তমানের করোনা সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের টিউশন নেই। ফলে টিউশন না থাকায় ছাত্ররা ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। আবার হঠাৎ করে লকডাউন হওয়ায় অনেক ছাত্র বাড়ি যেতে পারেনি। ফলে তারা একবেলা খেয়ে-না খেয়ে, কখনো মাজারে খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। এই অবস্থায় বাসার মালিকেরা বাসাভাড়ার জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছে।”
নেতারা বলেন, “সর্বশেষ আমরা দেখলাম- গতকাল বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে এসেছে ৩৫ হাজার টাকার জন্য ৮ জন শিক্ষার্থীর সনদপত্র ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছেন ধানমন্ডি এলাকার এক মেস মালিক। এছাড়া পূর্ব রাজাবাজার এলাকার একটি মেসে প্রায় ১৩০ জন শিক্ষার্থীর মালামাল ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে মেসের কেয়ার টেকার। মেস মালিকরা কতটা অমানবিক হতে পারে! অথচ এই সময়ে সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।”
ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা বলেন, “রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল শিক্ষার্থীদের এ সংকটে পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু এ বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখিনি।”
বিবৃতিতে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের সংকট নিরসনে মেস ভাড়া মওকুফে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও সনদপত্রসহ মালামাল ঘটনায় জড়িত মেস মালিকদের আইনের আওতায় এনে সাজা দেয়ার দাবি জানান ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা।