করোনায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে হোস্টেল ও মেস ছেড়ে বাড়ি যাওয়া শিক্ষার্থীদের সনদপত্র ও মালপত্র ডাস্টবিনে ফেলে দেয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৪ জুলাই) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘মেস ভাড়া মওকুফ আন্দোলন’র ব্যানারে ৩ দফা দাবিতে এ বিক্ষোভ করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবিগুলো হলো- সার্টিফিকেট ও মালপত্র ফেলে দেয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, মেস মালিক দ্বারা ছাত্রদের হয়রানি বন্ধ করা ও মেস ভাড়া মওকুফে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আফরোজ, শাহিনুর সুমি, জয়মা মুনমুন, তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী হাসিব মামুন প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৮ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে সারাদেশের প্রায় ৫০ লাখ মেসে থাকা শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ৫-৭ লাখ শিক্ষার্থী ঢাকায় মেস করে, সাবলেটে ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকে। এরা সবাই সরকারি কলেজ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত সিট না থাকার কারণে মেস করে, সাবলেটে ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতে হয়। যার খরচ ছাত্রর টিউশন করে পার্ট-টাইম জব করে বহন করে। করোনাকালে টিউশন বা জব না থাকায় শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হয়েছে।
বক্তারা বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা দাবি করেছিলাম, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া নিয়ে হয়রানি বন্ধ ও মেস ভাড়া মওকুফে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হোক। কিন্তু দেখলাম, সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ তো নেয়াই হলো না বরং শিক্ষার্থীদের বিনা নোটিশে বাসা থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে, মামলা করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। তাদের জিনিসপত্র, সার্টিফিকেট ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হচ্ছে। এমন অমানবিক আচরণে শিকার হচ্ছে ভবিষ্যতের কর্ণধাররা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা একটা হিসাব করে দেখিয়েছিলাম ঢাকায় একজন ছাত্রের মেসে থাকতে যদি ৭০০০ টাকা খরচ হয় তাহলে ৫০ লাখ শিক্ষার্থীর ৬ মাসে খরচ হবে ২১ হাজার কোটি টাকা। সরকার চাইলেই এই টাকা বরাদ্দ করে শিক্ষার্থীদের এ সংকট থেকে মুক্ত করা সম্ভব।
সমাবেশে বক্তারা সরকারের প্রতি এ বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নির্ভিঘ্নে চালিয়ে নেয়ার দাবি জানান এবং মেস ভাড়া মওকুফে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।