পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ দীর্ঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক থাকলেও কোনো শিক্ষার্থী নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে ওই অভিযোগ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে চারজন শিক্ষক বসে গল্প করছেন। তবে শ্রেণিকক্ষগুলোতে কোনো শিক্ষার্থী নেই। তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাধুরী মণ্ডল দাবি করেন, কিছুক্ষণ আগে শিশু শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়া হয়েছে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
তবে সহকারী শিক্ষিকা বনানী হালদার বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশনা ছাড়া আমরা কোনো তথ্য দিতে বাধ্য নই।’
পরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সব শ্রেণির শিক্ষার্থী হাজিরা খাতা উপস্থাপন করেন। শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতায় দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণিতে চারজন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১২ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১৩ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১১ জন ও প্রথম শ্রেণিতে ১৪ জন। কাগজে-কলমে মোট ৫৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বিদ্যালয় টিকিয়ে রাখতে পাশের বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী এবং ভুয়া কিছু নাম দিয়ে হাজিরা খাতা তৈরি করা হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী থাকা তো দূরের কথা ওই চার শিক্ষকও নিয়মিত আসেন না। তাঁরা সপ্তাহে দুয়েক দিন আসেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিহার রঞ্জন মণ্ডল স্বীকার করেন যে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠার সময় বেশ কিছু শিক্ষার্থী নিয়মিত ছিল। পরে শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে না আসায় ধীরে ধীরে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শিকদার আতিকুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না থাকার বিষয়টি অবগত হয়ে আমি সেখানে কর্মরত চারজন শিক্ষককেই কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছি।’