শিক্ষাসফর ছাত্রজীবনের অন্যতম একটা অধ্যায়। বই পড়ে যে সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা যায় না, শিক্ষাসফরের সঙ্গে বাস্তব জ্ঞানের সংমিশ্রণে সেইসব বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়। শিক্ষাসফর একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনকে আনন্দময় ও পরিপূর্ণ করে তোলে।
অথচ অনেক স্কুলে নানান অজুহাতে শিক্ষাসফর করা হয় না। আবার যেসব স্কুলে শিক্ষাসফর করা হয়, তার বেশিরভাগগুলোতেই রূপ নেয় বনভোজনে। এতে সফরের আসল উদ্দেশ্য থেকেই বঞ্চিত হয় শিক্ষার্থীরা। গ্রামের স্কুলগুলোর ক্ষেত্রে এটা সবচেয়ে বেশি হয়।
গ্রামের ছেলেমেয়েরা জন্ম থেকেই খেলতে খেলতে পরিচিত হয় গাছপালা, ফুল-ফল, পাখি আর চারদিকের প্রকৃতির সঙ্গে। অথচ সেই সব ছাত্রছাত্রীকেই বার বার একই স্থানে প্রকৃতির মাঝে কোনো বন বা পাহাড়ে শিক্ষাসফরের নামে বনভোজনে নেওয়া হয়।
প্রকৃতিতে বড় হওয়া সে সব শিক্ষার্থী প্রকৃতি দেখে তেমনটা আনন্দ পায় না আবার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বিজ্ঞানের তথ্যগুলো জানা থেকে বঞ্চিত থাকে। ইতিহাস সমপর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জনের জন্য, আধুনিক জীবন সমপর্কে জানার জন্য, উচ্চশিক্ষা সমপর্কে উত্সাহিত হওয়ার জন্য ঐতিহাসিক স্থান গুলোতে শিক্ষাসফর করার কোনো বিকল্প নেই।
এক্ষেত্রে আহসান মঞ্জিল, সোনারগাঁ, মহাস্থানগড়, বলধা গার্ডেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, ভাসানী নভোথিয়েটার, বোটানিক্যাল গার্ডেন, জাতীয় জাদুঘর, জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিমান জাদুঘর হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষনীয় ও দর্শনীয় জায়গা।
ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে বইমেলাও হতে পারে গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম শিক্ষণীয় জায়গা। এজন্য বারবার একই স্থানে পিকনিক করে শিক্ষা সফরের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের অনাগ্রহী করে তোলার চাইতে ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দিকে শিক্ষা সফরে নিয়ে যাওয়া দরকার।
মধুপুর, টাঙ্গাইল