শিক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদান - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদান

মো. সিদ্দিকুর রহমান |

বাঙালি জাতিকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার মাধ্যমে সবকিছু উজাড় করে দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ দেশের মানুষের সাথে ছিল তাঁর অবিনশ্বর আত্মার বন্ধন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পরও এই বন্ধন ছিন্ন হয়নি। ‘সোনার বাংলা’গড়তে তিনি যে সুদূরপ্রসারী কর্মযজ্ঞের সূচনা করেছিলেন এর মাধ্যমে বাঙালির হৃদয়পটে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন এই মহান নেতা।

এদেশের সংগ্রামী ইতিহাস, স্বাধীনতা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সবকিছুর সাথে মিশে ছিল তাঁর নেতৃত্ব। বঙ্গবন্ধু মানে বাংলার বন্ধু। তাঁর ভালেবাসার ভাণ্ডার ছিল অফুরন্ত। শ্রেণি, পেশা নির্বিশেষে সকলের ধারণা ছিল বঙ্গবন্ধু একমাত্র তাদের ভালোবাসার ধন। প্রকৃতি, মাটি, মানুষ কেউই তাঁর অন্তর ভরা ভালোবাসা থেকে দূরে ছিল না। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে তিনি অস্বচ্ছল কৃষকের খাজনা মওকুফ করেন। শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষার্থে বড় বড় কলকারখানা জাতীয়করণ করেন। এতো দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ, ভালোবাসা স্বাধীন দেশে আজও কোন নেতার মাঝে দৃশ্যমান হয়নি।

মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে তিনি বহুবার জেল খেটে সংগ্রামী ঝাণ্ডা সমুন্নত রেখে আমাদের জন্য দিয়ে গেছেন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির পিতা ও বঙ্গবন্ধু হিসেবে আজও তিনি আছেন সমাদৃত। বেঁচে থাকলে হয়তো তিনি বিশ্বের সকল অন্যায়, অত্যাচার ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে নেতৃত্ব দিতেন। জাতিসংঘ তাঁকে বিশ্বের বন্ধু হিসেবে খেতাব দিয়ে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষার অধিকার আদায়ে মাত্র ১৮ বছর বয়সে প্রথম কারাবরণ করেছিলেন। এ থেকে অনুমিত হয় যে, বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা তাঁর অন্যতম রাজনৈতিক দর্শনের ভিত্তিভূমি। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ৮টি শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদন পেশ করেন। সবগুলো কমিশন ছিল এদেশের মানুষের মৌলচেতনা, সমাজ-সংস্কৃতি ও কৃষ্টিবিরোধী। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাচনী বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাখাতে বিনিয়োগকে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ বলে অভিহিত করেন। সে আলোকে ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে একটি সুদূরপ্রসারী শিক্ষার লক্ষ্য নিয়ে তিনি কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন জাতিকে উপহার দিয়েছেন। পাশাপাশি ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে আইয়ুব খান প্রণীত অধ্যাদেশ বাতিল করে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চশিক্ষা প্রসারে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন পেশা ও বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্ত্বশাসন প্রদান করেছিলেন।  

১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম জাতীয় সাহিত্য সম্মেলনে বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, জনগণই সব সাহিত্য ও শিল্পের উৎস। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনদিন মহৎ সাহিত্য বা উন্নত শিল্পকর্ম হতে পারে না। তিনি শিল্পী সাহিত্যিকদের খুবই সম্মান ও  শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম জাতীয় সাহিত্য সম্মেলনে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে প্রধান অতিথির পদ অলঙ্কৃত করার আমন্ত্রণ জানানো হলে, তিনি তাঁর পরিবর্তে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ও পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। ঐ সময়ে তিনি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে আসেন। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে নিখিল বঙ্গ ছাত্রলীগের ফরিদপুর জেলা শাখার সম্মেলনে তিনি অতিথি হিসেবে কাজী নজরুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির ও অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খাঁ-কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। পাকিস্তানের কারাগার থেকে স্বদেশের মাটিতে পা রেখে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি তিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাতে রবীন্দ্রনাথের কবিতা উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছিলেন সাত কোটি বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে। 

বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে রাজপথের লড়াকু সৈনিক হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন। কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় অনশনসহ ২১ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচির দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনা অনুসারীদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিয়ে মাতৃভাষার প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও দরদ প্রকাশ করেছিলেন। মাতৃভাষায় ভাষণের মাধ্যমে তিনি বিশ্ববাসীকে ইঙ্গিত করেছেন যে, এ ভাষাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার মাঝে রয়েছে বাঙালির রক্ত। তিনি শুধু জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু ও বিশ্ববন্ধু নন তিনি বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রতিষ্ঠারও রূপকার। এই মহান নেতা সেদিন জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেয়ার মাঝেই বীজ বুনে দিয়েছিলেন ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি। এ পাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা পেয়েছে পরিপূর্ণ মর্যাদা। 

শিক্ষকদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালবাসার একটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করছি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান নোয়াখালী জেলায় এক জনসভায় গিয়েছিলেন। সেখানে সার্কিট হাউজে অবস্থানরত অবস্থায় একজন বৃদ্ধ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষক পরিচয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার অনুমতি চায়। বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর কানে পৌঁছামাত্র বঙ্গবন্ধু শিক্ষককে তাঁর কাছে নিয়ে আসেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে রাতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। শিক্ষকের সেবায় বাদশাহ আলমগীরের চেয়েও বিরাট উদারতার পরিচয় দেন তিনি। 

স্বাধীনতার পূর্বে প্রাথমিক শিক্ষকেরা স্বল্প বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিলেন। গভর্ণর মোনায়েম খাঁর আমলে প্রাথমিক শিক্ষকেরা বঙ্গভবন ঘেরাও করে বেতন স্কেল প্রাপ্ত হয়। স্বাধীনতার পর জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ছিল ১২০ টাকা, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ছিল ২ টাকা, প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ছিল ১৩০ টাকা, ইনক্রিমেন্ট ৩ টাকা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি মুক্তিযুদ্ধ সমর্থন করেছিল। সকল পেশাজীবীদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকেরা সর্বাধিকসংখ্যক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

পাকিস্তান আমলে প্রাথমিক শিক্ষকেরা তাদের স্বল্প বেতন জেলা বোর্ড হতে পেতেন। এই বেতন পোস্ট অফিসের পিওনের মাধ্যমে হাটবারে ভেঙে ভেঙে দেয়া হতো। কী দুর্বিষহ ছিল প্রাথমিক শিক্ষকদের সে সময়ের জীবন ! যে হাটবারে পোষ্ট অফিসের পিওন টাকা দিত না, সে সময় প্রাথমিক শিক্ষকদের পরিবারে নেমে আসতো ঘোর অমানিশা। সে অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষকদের পরণে ছিল লুঙ্গি, পাঞ্জাবি।

বেশিরভাগ প্রাথমিক শিক্ষক জুতা ছাড়া খালি পায়ে স্কুলে যেত। সে করুণ দৃশ্য আজও মনের মাঝে উঁকি দেয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এলেন। চারদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে নিঃশেষ করেছিল। অবকাঠামোগত সমস্যা, রাস্তাঘাট, গাড়ি, খাদ্য, পোশাক, ঔষধপত্রের অবস্থা ছিল নাজুক। চারদিকে শুধু সীমাহীন অভাব। শুধু নেই আর নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক ছিল শূন্য। অভাবের তাড়নায় সবাই ছিল দিশেহারা। বঙ্গবন্ধু খাদ্যদ্রব্য, ন্যায্যমূল্যের দোকান ও রেশন শপের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেছিলেন। এত অভাবের মাঝেও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা ভাবলেন, বাংলাদেশকে কীভাবে সোনার বাংলা হিসেবে রূপান্তরিত করা যায়। জাতির এই স্বপ্ন পূরণে তিনি মনে প্রাণে স্থির করলেন, তৃণমূলের মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষের কথা।

তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করতে না পারলে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ লাভ করবে না। অভাব ও ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে যেখানে কান্নার অশ্রু ঝরছে। ঠিক সেসময় এই মহামানবের বিশাল হৃদয়ের পরিচয় প্রকাশ পায়। বাংলার মানুষের জন্য ভালোবাসায় সিক্ত ছিল তাঁর হৃদয়। তাই তো চরম অভাবের কথা তুচ্ছ মনে করে, তিনি আগামী দিনের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে গরিব, মেহনতি, কৃষক ও শ্রমিকের সন্তানদের প্রাথমিক শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করেন। এজন্য ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে বলেছেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’। ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাতীয়করণ এদেশের মানুষের জন্য মুক্তির বারতা নিয়ে আসে। তখন প্রশিক্ষণবিহীন প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১৪৫ টাকার স্কেল, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা পেত ২২০ টাকা। প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব ভাতা ছিল ১০ টাকা। 

সে সময় ঢাকাসহ বিভিন্ন পৌরসভার শিক্ষকেরা এর বিরোধীতা করলেও বঙ্গবন্ধু বৈষম্যহীন প্রাথমিক শিক্ষা গড়ে তোলার জন্য ছিলেন অনঢ়। তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষকদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সমান ১৪৫ টাকা বেতন স্কেল সম্পর্কে আলাপ করতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ বলেছেন, একসময় প্রাথমিক শিক্ষকেরা প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ও বেতন পাবে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ড বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। বিএনপি সরকার সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে বেসরকারি করে।
 
প্রাথমিক শিক্ষকেরা ৩ মাস ১০ দিন ঐক্যবদ্ধ ধর্মঘট ও ঐতিহাসিক মহাবিক্ষোভ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অটুট রাখে। আজ অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলতে হয় বিএনপি আমলে জন্ম ও প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণে বিরোধীতাকারী ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের আন্দোলনের বিএনপি সরকারের দালাল আজ সরকারি ছত্রছায়ায় প্রাথমিক শিক্ষকদের বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলনের বিরুদ্ধে কাজ করছে। দালালদের রক্তে স্বীয় স্বার্থ ছাড়া অন্য কোন ভাবনা  থাকে না। দালালরা সবসময় দালাল। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করে এদেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের ঋণে আবদ্ধ করেছেন। অথচ স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরেও প্রাথমিকের কোন সংগঠন বঙ্গবন্ধুর সমাধি জিয়ারত করে নাই। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণের পর সারাদেশ থেকে সহস্রাধিক প্রাথমিক শিক্ষক নেতৃবৃন্দ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধি জিয়ারত করেছি। 
আজকে অনেক বিপথগামী প্রাথমিক শিক্ষক নেতৃবৃন্দকে শিক্ষকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অহরহ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আসা-যাওয়া করতে দেখা যায়। জানিনা, হয়তো তারা অতীতের ভুল বুঝতে পারছেন। নতুবা একে পুঁজি করে স্বীয় স্বার্থ সিদ্ধি করছেন। বঙ্গবন্ধু বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষকদের বৈষম্যের বিরুদ্ধবাদী দালালরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে যেমন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ এত দ্রুত অর্জিত হতো না। তেমনি প্রাথমিক শিক্ষাও জাতীয়করণ হতো না। বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই। তাঁর আদর্শের যথাযথ বাস্তবায়ন ও রূহের মাগফেরাত কামনা করা ছাড়া আমাদের আর করার কিছুই নেই। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য আন্দোলনে হাজতবাসের সুযোগ পাওয়ায় আমি গর্বিত।

প্রাথমিক শিক্ষার বৈষম্য বা মান উন্নয়নে নিরব থাকা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী। বঙ্গবন্ধু সকলের বন্ধু হলেও সকলের আগে প্রাথমিক শিক্ষকদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের সুফল  হিসেবেআজ বাঙালি জাতিসহ সব শিক্ষক উপকৃত হতেন। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশাল অর্জনে শিক্ষাবান্ধব সরকার হিসেবে সারাবিশ্বে সমাদৃত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা। প্রাথমিক শিক্ষার সকল বৈষম্য দূর করতে কাজ করে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ। এ পরিষদ গবেষণার পাশাপাশি বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলায় বিশ্বসী। তাই মুজিববর্ষে শিক্ষকদের প্রতি অগাধ ভালোবাসার জন্য বঙ্গবন্ধু ‘শিক্ষক বন্ধু’ হিসেবে সম্মানিত করছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের প্রাথমিক শিক্ষায় সকল বৈষম্য দূর করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই।

শিক্ষকবন্ধু বঙ্গবন্ধু জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। মুজিববর্ষে ঢাকায় জাতীয়ভাবে ‘বঙ্গবন্ধুর কাছে প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের ঋণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা করার পরিবর্তে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে করার জন্য শিক্ষক সমাজের প্রতি আহ্বান জানাই। বঙ্গবন্ধুর এ ঋণ শিক্ষক সমাজের পরিশোধ করার একমাত্র পথ তাঁর আদর্শের বাস্তবায়ন। বঙ্গবন্ধু শিক্ষক বন্ধু হিসেবে সকল শিক্ষকের মাঝে জাগ্রত থাকুক।

মো. সিদ্দিকুর রহমান : সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ; সম্পাদকীয় উপদেষ্টা, দৈনিক শিক্ষাডটকম।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049290657043457