শিক্ষিত বেকারদের ভবিষ্যৎ কী? - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষিত বেকারদের ভবিষ্যৎ কী?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কথায় আছে, সুন্দর ভবিষ্যৎ সবার জন্য অপেক্ষা করে। আর শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা সুন্দর ভবিষ্যৎ বলতে বুঝে থাকে একটি মানসম্মত চাকরি এবং একটি সুন্দর সংসারকে। আর এ দুটি একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু এদেশে চাকরি পাওয়ার পথ কণ্টকাকীর্ণ। কারণ চাকরি প্রাপ্তিতে বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি আবেদনেও রয়েছে বয়সের সীমাবদ্ধতা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের একটা বড় অংশ কয়েক বছর যাবৎ আন্দোলন করে যাচ্ছে। আন্দোলন করেই যদি তারা তাদের দাবিকৃত বয়সসীমা পার করে দেয় তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ কী?

সরকারের দায়িত্বশীলদের অনেকে বারবার বয়স বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেননি। তাছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতেহারে মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার বিচারে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি থাকলেও আজও বাড়েনি চাকরিতে প্রবেশের বয়স। তাহলে বেকারত্ব বাড়বে না কেন?

বেকাররা আজ এমন পর্যায়ে আছে যে তাদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে যায়, কেউ বিয়ে দিতে চায় না। হতাশায়, দুশ্চিন্তায় আইনবিরোধী নানা অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়ছে তারা, কেউ কেউ আত্মহত্যা করছে। অবৈধ পথে উন্নত দেশে পাড়ি দিতে গিয়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন বা অকালে প্রাণ দিয়েছেন, যা কারও অজানা নয়। এদেরকে নিয়ে কি ভাবার কেউ নেই?

এখানে উদ্যোক্তা হওয়াও এত সহজ নয়, কারণ এই পথ অনেক বন্ধুর। বাস্তব অভিজ্ঞতাহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ এই পথে একবার ব্যর্থ হলে কেউ টেনে তুলবে না। এবারের বাজেটে তরুণ বেকারদের সব ধরনের ব্যবসায় উদ্যোগ (স্টার্টআপ) সৃষ্টির জন্য যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তা বেকারদের সংখ্যানুপাতে কতটা পর্যাপ্ত তাও বিবেচ্য বিষয়।

এক জরিপে জানা যায়, প্রতি বছর নতুন ২২ লাখ কর্মক্ষম মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করে; কিন্তু কাজ পায় মাত্র ৭ লাখ। বাকি ১৫ লাখ থাকে বেকার, যাদের মধ্যে উচ্চশিক্ষিত অর্থাৎ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরাও রয়েছেন।

তাই প্রতি বছর এই নতুন ১৫ লাখ মানুষ বেকারের সংখ্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপে বেকারের যে সংখ্যা দেখানো হয় তার চেয়ে অনেক বেশি বেকার আছে দেশে। কারণ তারা বেকারত্বের যে সংজ্ঞা ব্যবহার করে, তা উন্নত বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য, এ অঞ্চলের জন্য নয়।

আমাদের শিক্ষা পদ্ধতি ও কাজের মধ্যে রয়েছে বিরাট ফারাক। গতানুগতিক শিক্ষা পদ্ধতিতে প্রযুক্তিগত জ্ঞান, কারিগরি দক্ষতা বা ভাষাগত যোগাযোগে পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়। কাজেই বড় কোম্পানিগুলো দেশের বাইরে থেকে দক্ষ ও উপযুক্ত জনশক্তি আমদানি করবেই। এ বিষয়ে সরকার অবহিত হলেও এ থেকে উত্তরণের কোনো পথ খুঁজছে বলে আমরা এখনও দেখিনি।

স্বীকার করছি, শিক্ষিত বেকারদের তুলনায় সরকারি চাকরির পদসংখ্যা অনেক কম। তবুও তাদের আবেদনের পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে আপত্তি কোথায়? কারণ বিষয়টা সম্পূর্ণ প্রতিযোগিতা ও মেধার।

আমাদের নীতিনির্ধারকদের ভ্রান্ত ধারণা থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসতে হবে। একটা দেশের মেরুদণ্ড হল শিক্ষা তথা শিক্ষিত জনশক্তি। এদের দমিয়ে রাখলে, কর্মহীন ও সুযোগবঞ্চিত রাখলে দেশের মেরুদণ্ড দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই সময়োপযোগী শিক্ষা পদ্ধতির প্রসার ঘটিয়ে বেকারত্ব কমাতে হবে, সব চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াতে হবে দ্রুত।

নাজমুল হোসেন : প্রকৌশলী ও প্রাবন্ধিক

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034091472625732